মোহাম্মদ আবদুল্লাহ চুয়াডাঙ্গা হতে
খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড. খঃ মহিদ উদ্দিন (বিপিএম-বার) বাংলাদেশ পুলিশ, খুলনা চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নবগঠিত সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল উদ্বোধন করেন ।
সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল উদ্বোধনকালেরেঞ্জ ডিআইজি মহোদয় বলেন, ইন্টারনেটের মাধ্যমে হয়রানি ক্রমেই বাড়ছে। তুলনামূলক নারীরা সাইবার ক্রাইমের শিকার বেশি হচ্ছে। ব্যক্তিপর্যায় থেকে শুরু করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান। কেউ সাইবার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার না জানা, আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব এবং এই আইন সম্পর্কে না জানার কারণে এ ধরনের অপরাধে ভুক্তভোগির সংখ্যা বাড়ছে।
‘সাইবার অপরাধ’ বলতে ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে অপরাধ করা হয়, তাকেই বোঝানো হয়। তথ্য চুরি, তথ্য বিকৃতি, প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইল, অর্থ চুরি ইত্যাদি তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে করা হলে সেগুলোকে সাধারণ ভাষায় সাইবার অপরাধ বলা হয়। সাইবার অপরাধ মূলত কম্পিউটারে ব্যবহৃত কর্মকাণ্ড, যার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী অপরাধ পরিচালিত করে থাকে অপরাধিরা। দেশে যে ধরনের সাইবার অপরাধ ঘটছে, তার মধ্যে রয়েছে- ই-মেইলে হুমকি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওয়েবসাইট হ্যাক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান-ব্যক্তির ওয়েবসাইট হ্যাক বা তথ্যচুরি, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুমকি দেয়া, নাজেহাল করা ও অপপ্রচার ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। প্রচলিত সাইবার অপরাধের মধ্যে আছে ফ্রড কিংবা প্রতারণা, ক্রেডিট কার্ডের নাম্বার চুরি, ব্ল্যাকমেইল ,পর্নোগ্রাফি, হয়রানি, অনলাইনের মাধ্যমে মাদক পাচার/ব্যবসায় প্রভৃতি। আবার জাল সার্টিফিকেট তৈরি, জাল টাকা বা জাল পাসপোর্ট, বিভিন্ন প্রকার দলিল-দস্তাবেজ কম্পিউটারের মাধ্যমে তৈরির ঘটনা অহরহ উদ্ঘাটিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ২০০৬ সালে তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ আইন তৈরি হয় এবং পরে এ আইন সংশোধন করা হয় । এ আইনের ৫৭ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছে করে ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পড়লে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ হতে পারে বা যার মাধ্যমে মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানি দেয়া হয়, তাহলে তার এই কাজ অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। কোনো ব্যক্তি এ ধরনের অপরাধ করলে তিনি অনাধিক ১০ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন এবং অনাধিক এককোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
চুয়াডাঙ্গায় সাইবার ক্রাইম সেল উদ্বোধনের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা জেলার লোক সাইবার আক্রমনের শিকার হলে কাঙ্খিত সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ জাহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার, চুয়াডাঙ্গা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব কনক কুমার দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জনাব আনিসুজ্জামান, সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জনাব মোঃ মুন্না বিশ্বাস সহ চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।