শোটাইম মিউজিকের আলমগীর খান আলম ভাই। নিঃসন্দেহে আপনি এই শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব । ঢালিউড বলিউড রেড কার্পেটে ফ্যাশন শো সহ নাচে গানে এই শহরকে আপনি মাতিয়ে রাখেন। নায়ক নায়িকা মডেল শিল্পীদের নিয়ে গোটা পঞ্চাশেক অনুষ্ঠান তো এই শহরে আপনি একাই করেন । মাশাআল্লাহ আপনাকে ব্যাকআপ দেবার লোকেরও অভাব নেই।
নিউইয়র্কে সারা বছরই, বলা যায় প্রতি সপ্তাহে কিছু না কিছু অনুষ্ঠান আপনার প্রোডাকশনে করে যাচ্ছেন। চারিদিকে শুনি শুধুই আলমের অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের মান বিবেচনা না করে এভাবে এই শহরকে মাতিয়ে রাখার জন্য অবশ্যই আপনাদের প্রশংসা করি।
বিশিষ্টজনদের ছবি দিয়ে ব্যানার বানিয়ে চালিয়ে দিচ্ছেন অনুষ্ঠানের নানান আয়োজন। পোষ্টারের ছবি থেকে কারা সেখানে আসলেন, কি আসলেন না- তার ধার ধারছেন না । বেশি বেশি অনুষ্ঠান করলে যা হয় আর কি ! এত ধার ধরার কি আছে !
ভাবছেন, পোস্টারে ছবি থাকলেই হবে। এই শহরের মানুষ আসবেই ।
যেমনটা আমি গেছিলাম।শুধু নিজে গিয়েছি তা নয়, আরো গোটা দশেক বন্ধুদের সঙ্গে নিয়েছি। গেছেন আমাদের সতীর্থ লোকজন বেশ দল বেঁধে। জোত্যি দা ও পুরবী দি সহ আরো অনেকেই সেদিন অনুপস্থিত থাকবেন, জেনেও আমি গিয়েছি। কেন জানেন? একমাত্র হুমায়ূন স্যারের সম্মানে।
কোথায় হুমায়ূন সাহিত্যের আলোচনা ? কিছু হলো না ।গোটা তিনেক ভালো গানের শিল্পী ছাড়া বাকিটা কবিতা পাঠের আসর। হায়রে কবিতা ! শুনতে শুনতে মাঝে মাঝে বিরক্ত লাগে।
আপনি শিল্পী নায়িকা মডেলের নিয়ে নাচের গানের হৈ হুল্লোড় করেন। আমাদের কোন আপত্তি নেই। হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্য নিয়ে, সম্মেলনের নামে প্রস্তুতিবিহীন,মানহীন,গোঁজামিল মার্কা আধাবেলার এমন অনুষ্ঠান করে উনাকে ছোট করবেন না প্লিজ।
বিনয়ের সাথে অনুরোধ, হুমায়ূন আহমেদকে মিডিয়া হাউজের প্রোডাক্ট বানাবেন না । এই দেশে বড় হওয়া আমার সন্তানেরা নজরুল রবীন্দ্রনাথের পর সাহিত্যিক হিসেবে হুমায়ূন আহমেদকে জানে । তিনি সহজ সরল বাংলায় গল্প নাটক সিনেমা তৈরি করে এই প্রজন্মের বাচ্চাদের কাছেও পৌঁছে গিয়েছেন।এর আগেও উনাকে নিয়ে আরে তিনটি আয়োজন হয়েছে। সেখানে নিউইয়র্ক শুধু নয়, এর আশপাশের অঙ্গরাজ্য থেকেও মানুষ এসেছে ।আমি দেখেছি।
হুমায়ুনকে নিয়ে কোন পুস্তক বিক্রেতা একদিকে টানবেন,আরেক দিকে নানা বেনিফিসিয়ারিরা টানবেন, – তা দেখছি লোকটা মারা যাওয়ার দিন থেকেই।
এ টানাটানিতেও একটা মান রাখেন, না হলেও রোদ ঝলমলে নিউইয়র্কের কথা লিখে যে মানুষটি মারা গেলেন,তাঁকে অসম্মান করা হয়।দায়টা যে আমাদের উপরও পড়ে!
হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের গুরুজনদের প্রতি সবিনয়ে বলছি ,যেমন তেমন করে দায়সারাভাবে কিছু করতে যাবেন কেন? এরপর থেকে দিন তারিখ বার সময় স্থান কাল পাত্র বিবেচনায় নিয়ে হুমায়ুন আহমেদের সাহিত্যের সম্মেলনের আয়োজন করুন।
শুনেন, আরও একটা কথা চুপিসারে বলে রাখি। নিউইয়র্কে প্রথম আলোর অফিসে বৃহস্পতির আড্ডায় এর চেয়ে অনেক বেশী মানুষের সমাগম হয় !
তাই আবারো অনুরোধ করছি, সামনের দিনে হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে এমন ঠাট্টা মশকরা টাইপের কোন কিছু না করলেই ভালো হয় !