জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান সুসম্পর্ককে আরও উচ্চতায় উন্নীত করার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি ইয়োশিমাসার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন ড. মোমেন। এ সময় তিনি এ আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বৈঠকের শুরুতে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের মৃত্যুতে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালন ও জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাব গ্রহণের জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি ঢাকায় জাপানের দূতাবাসে গিয়ে শোক বই স্বাক্ষর করার জন্য ও রাষ্ট্রীয় অন্তেষ্টিক্রিয়ায় যোগদানের জন্যে মোমেনকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।
বৈঠকে দুদেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশের অন্যতম বন্ধু জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর আকস্মিক মৃত্যুতে বাংলাদেশ অত্যন্ত মর্মাহত বলে ড. মোমেন উল্লেখ করেন।
ড.মোমেন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের কঠোর অবস্থানের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, শিনজো আবে দীর্ঘ সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং তাঁর সময়ে দুদেশের সম্পর্ক ‘সমন্বিত অংশিদারিত্বে’ উন্নীত হয়েছিল।
জাপানকে বৃহত্তম দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে আরও জাপানি বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান এবং দু’দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধিতে আরও জোর দেন। এছাড়া দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি ইউক্রেন, উত্তর কোরিয়া ও ইন্দো-প্যাসিফিকের বিষয়ে জাপানের অবস্থান তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন।
বিশ্ব শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষায় বাংলাদেশের অবদান, শান্তির সংস্কৃতি বিনির্মাণের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমার হতে আগত রোহিঙ্গাদের বর্তমান অবস্থা, সমস্যা এবং এর দ্রুত ও স্থায়ী সমাধানের বিষয়ে জাপানের সহযোগিতা চান। জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি বাংলাদেশকে অব্যাহত সহায়তা প্রদানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানান ড. মোমেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সংসদ সদস্য সেলিমা আহমেদ, জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২৭ সেপ্টেম্বর জাপানের সদ্যপ্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবের রাষ্ট্রীয় অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।