আশরাফুল হাবিব মিহির, নিউইর্য়ক
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট উত্তর আমেরিকার উদ্দ্যোগে নিউইর্য়কের জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টারে গত ১৩ ডিসেম্বর সোমবার সন্ধ্যা ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত উদযাপন করা হলো শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। এ উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও বুদ্ধিজীবী দিবসের প্রথম প্রহরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।
চারুশিল্পীদের তাৎক্ষণিক উপস্থিতিতে আঁকা ট্রাফিক পেইন্টিং (মুক্ত চিত্রাঙ্কন) এর মাধ্যমে সুচনা করা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, চারুশিল্পী তাজুল ইমাম। গোপাল স্যানালের সমন্বয়ে, ট্রাফিক পেইন্টিং পর্বটিতে ছিলেন- আজিজুল ইসলাম তারিফ, সৈয়দ খুরশীদ আলম সেলিম, কাটুনিস্ট টিপু আলম, কচি ও এম. এম আজিজ নাইমী।
পারভীন সুলতানার সঞ্চালনায় আবৃত্তিতে অংশগ্রহন করেন স্বাধীন মজুমদার, মেহের কবীর, নজরুল কবীর ও খাইরুল ইসলাম পাখি। আবীর আলমগীরের সঞ্চালনায় সংগীত পরিবেশন করেন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান পরিবেশন করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায় ও শহীদ হাসান, আরো ও সংগীত পরিবেশন করেন সেলিমা আশরাফ, চন্দন চৌধুরী। কবির কন্ঠের পাঠ: স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন শামস্ আল মোমিন ও ফারহানা ইলিয়াস তুলি, এই পর্বটি সঞ্চালনা করেন স্বীকৃতি বড়ুয়া। মিনহাজ আহমেদের সঞ্চালনায় যুদ্ধদিনের কথা: একাত্তরের স্মৃতিচারণ করেন ড. মাসুদুর রহমান, সরাফ সরকার, তাজুল ইমাম, ফাহিম রেজা নুর ও জাহিদ রেজা নুর।
নাজিব তারেকের কথা ও অংকিত প্রতিকৃতি অবলম্বনে মিথুন আহমেদ রচিত কথকভাষ্যে পরিকল্পিত ও নির্দেশিত পরিবেশনা: ‘নয়ন জলে ভাসি’ {শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মকথন}। অংশগ্রহনে ছিলেন: শুক্লা রায়, তাহরিনা পারভীন প্রীতি, বিলকিস রহমান দোলা, আবীর আলমগীর, পারভীন সুলতানা, জারিন মাইশা ও মিথুন আহমেদ। ‘নয়ন জলে ভাসি’ এর সমন্বয়কারী ছিলেন আশরাফুল হাবিব মিহির।
প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন নিউ ইর্য়ক বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল এস এম নাজমুল হাসান। মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে ঘোষনা পত্র পাঠ করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট উত্তর আমেরিকার আহ্বায়ক মিথুন আহমেদ।
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের মাত্র দুইদিন পূর্বে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামাত-রাজাকার-আলবদর-আলশামস্ বাহিনির নরপশুরা একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর এক নৃশংস বর্বর হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। তারা হত্যা করে বাংলাদেশের মেধাবী লেখক, কবি, সংগীতজ্ঞ, চলচ্চিত্রকার, ঔপন্যাসিক, সাংবাদিক, শিক্ষক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, দার্শনিক ও প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীদের। বাঙালি জাতির শোকাবহ এই বিপর্যয়ের দিনটিকে স্মরণ করার জন্যে বিগত ২৩ বছর ধরে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট উত্তর আমেরিকা ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করে আসছে।
লেখক, শিল্পী, সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে সংহতি-সমাবেশটি রাত ১২টা ০১ মিনিটে দিবসটি প্রদীপ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত করা হয়।