বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জলবায়ুর পরিবর্তন। উপকূলীয় অঞ্চলে শস্য আবাদে আরও ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এজন্য বাংলাদেশে ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ ও সহযোগিতা বাড়াবে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও গবেষণায় সহযোগিতা আরও প্রসারিত করবে দেশটি। বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাঁচ কোটি ডলারের কার্যক্রম করছে ইউএসডিএ। গত ২৩ মার্চ ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ইউএসডিএ’র বাংলাদেশ মিশন প্রধান মেগান এম ফ্র্যানসিক এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের কৃষিতে সহযোগিতা, বিনিয়োগ এবং পটভূমি জানানোর জন্য রাজধানীর আমেরিকান সেন্টারে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক কৃষি সহায়তা (এফএএস) বিভাগ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরামের (বিএজেএফ) ১৫ জন সদস্য এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে বিএজেএফ সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার উপ নগর সম্পাদক সাহানোয়ার সাইদ শাহীন, সহ-সভাপতি ইয়াসির ওয়ার্দাদ, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মোহাম্মদ আল-মাসুম মোল্লা এবং ঢাকা ট্রিবিউনের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ বক্তব্য রাখেন।
ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব খাদ্য নিরাপত্তায় আরও সংকট তৈরি করবে জানিয়ে মেগান এম ফ্র্যানসিক বলেন, ‘ইতোমধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। সামনের দিনে সাপ্লাই চেইন আরও বাধাগ্রস্ত হতে পারে। বিশেষ কৃষি উপকরণ বিপণন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র কোনোভাবেই খাদ্য ও কৃষির পণ্যের ওপর বাধা আসুক এটা চায় না। শক্তিশালী জি-৭ এর সদস্যভুক্ত দেশ হিসেবে প্রতিবারই যুক্তরাষ্ট্র বলে আসছে, কৃষি পণ্যের ওপর যেন কোনো দেশই নিষেধাজ্ঞা না দেয়।’
বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়নে সামনের দিনে ইউএসডিএ কী করবে এমন প্রশ্নে মেগান এম ফ্র্যানসিক বলেন, কৃষির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বিপণন বা সাপ্লাই চেইনের উন্নতি করা। সেটি নিয়ে ভাবা হচ্ছে। এছাড়া কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ এবং আরও সঠিক তথ্য সরবরাহ বাড়ানোয় নজর দিচ্ছে ইউএসডিএ। এছাড়া কৃষির উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারত্ব বাড়াতে কাজ করা হবে। বিশেষ করে কৃষির মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন বাড়ানো, কৃষক ও সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়া ও দক্ষ করে তোলায় কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এছাড়া দেশের কৃষি বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের যুক্তরাষ্ট্র সরকার উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের জন্য ফেলোশিপ কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করছে।
তিনি বলেন, ২০০৬ সাল থেকে বাংলাদেশি স্কুুল শিক্ষার্থীদের জন্য ১২ কোটি ডলারের খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বাংলাদেশের কৃষি পণ্যের বাণিজ্য সহজীকরণ করতে সহায়তা অব্যাহত রাখবে। তৈরি পোশাক খাতের জন্য সুতার একটি বড় অংশ আমদানি করা হয় যুক্তরাষ্ট্র থেকে। সেটিও আগামীতে সরবরাহ করবে। বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়নে সব ধরনের সহযোগিতা ও কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।