• শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন
Headline
তানিয়া আফরিন পেলেন আন্তর্জাতিক মর্যাদাপূর্ণ ‘সাউথ এশিয়ান লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার উদ্যোগে ইফতার মাহফিল ও নারী-শিশু নির্যাতন বিরোধী আলোচনা সভা অদম্য নারী পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এম মুরশিদ উপস্থিত ছিলেন। BAMGLADESHI AMERICAN COMMUNITY CHANGEMAKERS দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা পুনরুজ্জীবিত করতে একমত ড. ইউনূস ও শাহবাজ শরিফ ইউনূস-বাইডেন বৈঠক নিয়ে যা বলেছে হোয়াইট হাউস ‘রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের বিমানবন্দরে ভিআইপি সার্ভিস দেব’ দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা জরুরি : ড. যশোদা জীবন দেবনাথ মাহবুব সিরাজ তুহিন সাউথ অস্ট্রেলিয়ায় বাঙালি ছাত্র ও অভিবাসন প্রত্যাশীদের অভিভাবক সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য সুশাসন, শিক্ষার প্রসার ও প্রযুক্তির উন্নয়নে গুরুত্ব দিতে হবে : প্রীতি চক্রবর্তী

ব্যক্তিগত কৈফিয়ৎ, আমাকে মাফ করবেন

Reporter Name / ১১৬ Time View
Update : রবিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২১

 

 

 

মাহমুদ রেজা চৌধুরী

কিছুক্ষণ বসে ভাবছিলাম, কথাগুলি সামাজিক মাধ্যমে লিখব কিনা। পরে মনে হলো বিষয়টা একান্ত ব্যক্তিগত
তাছাড়া সব কথা সামাজিক মাধ্যমে দেয়া তা হয়তো ঠিক হবে না। কারণ আমার লেখার পাঠক খুবই সীমিত।
এ কারণে সীমিত কয়েকজন পাঠকের কাছে আমার ব্যক্তিগত একটা কৈফিয়ৎ দেয়া শুধু তাদের মধ্যে থাকুক। আপনাকেও সেই অর্থে আমার সীমিত পাঠকের একজন হিসেবে শ্রদ্ধা করি। আমার সীমাবদ্ধতা নিঃসংকোচে তাই প্রকাশ করছি ব্যক্তিগত পরিসরে।

শুরুতেই বলি, আমি কোনো অর্থেই “লেখক” নই। লেখক হতে হলে যেসব গুণাবলী প্রয়োজন আমার সেটা একেবারেই নেই। শুধু লিখি বলে লেখক, এটা একটা জেনারালাইজ কথা। লেখক হবার জন্য কিছু ব্যাকরণ বা গ্রামার মেনে চলতে হয়, আমি সেখানে দুর্বল। এর প্রধান একটি কারণ, আমি প্রধানত এবং প্রথমত কেবল নিজের জন্য লিখি। আমার লেখার পাঠক তাই আমি নিজে। আমার বাইরে যারা আমার লেখা পড়েন তারা অনেকটা আমাকে যে কোন কারনে কিংবা অকারনে পছন্দ করেন বলেই হয়তো পড়েন। এদের মধ্যে আপনি একজন। পাঠক হিসাবে আপনি আমার প্রতি বেশ আন্তরিক, মনোযোগী তো বটেই। আমার লেখা পড়ে আপনার যেকোনো মন্তব্য আমার কাছে তাই ভিশন শ্রদ্ধাপূর্ণ এবং উদ্দীপনা জাগায়। এটা যেকোন মন্তব্যই হোক না কেন।

আমার লেখার মধ্যে অনেক প্রকার সীমাবদ্ধতা আছে এবং ছিল। আমার লেখার এটা একটা বেগুন। সব লেখা সেভাবে গুছিয়ে লিখতেও পারিনা। যারা লেখক তারা এটা পারেন। তাদের এই গুণটা সবচেয়ে বড় গুণ।

যেহেতু আমি যখন লিখি কখনোই মনে আসে না আমার লেখা পড়ে পাঠক কতটা হতাশ হবেন অথবা হতাশ হতে পারেন। তাই মনের মাধুরী দিয়ে যা মনে আসে তাই লিখি। সেখানে ছন্দের পতন হলো কিনা, ভাষা ঠিক হল কিনা, অথবা একটার সাথে অপর প্যারাগ্রাফের সংযুক্তি মিললো কিনা সেগুলি তখন মাথায় থাকে না। পাঠায় থাকে আমি কিভাবে দেখছি সেটাই। তারও কারণ আমি যে লেখক হবার জন্য লিখিনা। আমি জানি আমি কখনোই লেখক হতে পারব না যে অর্থে লেখক হন অনেকে। লেখক আছেন অনেক।

তবে কেন আমার কোনো লেখা সামাজিক মাধ্যমে আমি লিখি। এর একটি প্রধান কারণ, আমি যখন যা কিছুই ভাবি বা চিন্তা করি না কেন, সেগুলো ছাপার অক্ষরে যেন থাকে। পরবর্তী সময়ে যদি কখনো মনে হয় সেগুলো পড়ে যেন মনে করতে পারি আমার চিন্তার গুণগত কোন পরিবর্তন হলো কি হলো না, এবং আমার কথা আমার নিজেকে স্মরন করিয়ে দেয়া আমার লেখার অন্যতম একটি লক্ষ্য। আমার লেখার আরেকটি উদ্দেশ্য হলো, আমি যে সময় এবং যে সমাজে বসবাস করি আমার বর্তমানে সময় টা কেমন ছিল এটা যদি কখনো কেউ পড়েন। তখন বুঝতে পারবেন আমাদের অতীতটা কেমন ছিল, তখন আমরা কে কেমন ছিলাম, কেমন ভাবতাম।

আমি যেহেতু সমাজ বিজ্ঞানের ছাত্র, তাই কোন সমস্যা বা তার সমাধানের নির্দিষ্ট কোন একটি পথ দেখিনা। যে কোন সমস্যা এবং তার সমাধানের একাধিক সূত্র খুঁজে পাই। তাই কবিতা কিংবা গল্পের মতো গুছিয়ে কিছু লিখিনা। এলোমেলো থাকে আমার চিন্তা-ভাবনাগুলো, এলোমেলোভাবেই সেটা লিখি।

সেসব লেখা কারো ভাল লাগতে পারে কারও বা সেটা নাও লাগতে পারে। এটাই স্বাভাবিক। পাঠকরা সাধারণত যে লেখে তার চাইতে বেশি চৌকস এবং মেধাবী হন। পাঠকের মন্তব্য যে লিখেন তার কাছে অসাধারণ অনুপ্রেরণার পাশাপাশি প্রত্যক্ষ অথবা প্রত্যক্ষভাবে অনুপ্রেরণার মূল শক্তি।

আমার অনেক লেখা পড়ে আমার শ্রদ্ধেয় গুরুজনদের অনেকেই কখনো কখনো আমাকে একটু বেশি স্নেহ করেন বলেই উৎসাহ যোগান, তাঁদের ভালোলাগাকেও প্রকাশ করেন। শ্রদ্ধেয় ডক্টর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আমার লেখা পড়ে প্রায়ই বলেন, “রেজা, তোমার লেখার সব কথার সাথে আমি একমত না হলেও তোমার লেখার নিজস্ব পদ্ধতিতে আমি এপ্রিশিয়েট করি। অনেক সময় তোমার লেখা বিক্ষিপ্ত হলেও কিংবা অপ্রাসঙ্গিক হলেও সেটা অনেক পাঠকের কাছে ভাবনার উদ্রেক করে বটে। কি কোন লেখকের এর কাছে এটা এক বড় পাওয়া। তোমার সব লেখায় বেশ একটা দার্শনিকতার প্রভাব আছে। মুক্তচিন্তার সাবলীল ভঙ্গি আছে। এটা তোমার নিজস্ব গুন, এটাকে ধরে রেখো”।

স্যার আমাকে একটু বেশি স্নেহ করেন বলে এমন কথা বলেন হয়তো। তবে আমি জানি স্যারের প্রশংসা পাওয়ার মত কিছুই আমি লিখি না। আমি যা-ই লিখি প্রায় সবটাই ধার করা। কেউ-না-কেউ একই কথা বহুবার বহু সময় বলে গেছেন যা এখনো বলেন। আমি কান পেতে রই, যখন সে সব কথা শুনি।
লিখতে বসলে সে সব কথাই কালি ও কলম এ চলে আসে। আমার লেখায় এর চেয়ে বেশি কিছু থাকে না।

আমার ব্যক্তিগত কৈফিয়ৎ আমাকে “লেখক” কোন অর্থে কখনো মনে করবেন না। আমি নিজেও মনে করিনা। লেখার শেষে লেখকের নামটা আসে লেখক শব্দের অর্থকে সাধারণীকরণের কারণের কারণেই।

লিখলেই যদি লেখক হওয়া যেত বা যায় সীতা লেখক এর প্রতি এক ধরনের অবহেলা হয়ে যেতে পারে অথবা অসম্মান। তাহলে সবাই লেখক হতে পারত। এই পাড়ার দৌড়ে আমি অনেক পেছনে আছি।

তবু আপনারা যারা আমার লেখা পড়েন, আমি বিনীতভাবে তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি শিখতে চেষ্টা করি তাদের মতামত থেকে অনেক কিছু। কখনো সেটা নিজের মধ্যে অ্যাডাপ্ট করে নিতে পারি, কখনোবা পারিনা। তার প্রধান কারণ, আমি চাই আমার মত করে লিখি পাঠকের কথা ভেবে লিখিনা, লেখক হবার জন্য লিখিনা। সেটা কেন লিখি না ব্যাখ্যা করেছি।

আমার এলোমেলো কথাগুলি এত মনোযোগ দিয়ে আপনারা গুটি কয়েক জন যখন পড়েন নিজেকে বড় বেশি ভাগ্যবান বলে মনে হয়। এইটুকু আমার অর্জন আপনাদের ভালোলাগা, আপনাদের সহিষ্ণুতা, আপনাদের পরামর্শ আমার ব্যাপারে।

বিনীত শ্রদ্ধা আমার পাঠক আপনার প্রতি অম্লান থাকবে।

অক্টোবর, ১৯, ২০২১


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category