সুব্রত নন্দী
আপাত দৃষ্টিতে মনে হয়েছিল উত্তর জনপদ নওগাঁর ইরা নামের এই মেয়েটি ঢাকার আকাশে মুক্ত বিহঙ্গের মতো ভাসছেন বা উড়ে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশের মোল্লাতন্ত্রের গড্ডালিকা প্রবাহকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পাশ্চাত্যের নৃত্য কলা ব্যালের অপূর্ব শৈলীকে বাংলাদেশের একটি মেয়ে কি করে অনুশীলন করে ঢাকার রাজপথে প্রদর্শন করার মতো সাহস দেখিয়েছে তা সত্যিই বিস্ময়কর! ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকায় তার এই নৃত্য শৈলীর শৈল্পিক উপস্থাপনাটি অনন্য পেশাদারিত্বে ক্যামেরা বন্দি করেছেন জয়িতা আফরিন নামের এই প্রজন্মের আরেকটি মেয়ে।
শিল্পী মোবাশ্বিরা কামাল ইরা গত ২২-২৩ জানুয়ারি ঢাকা শিল্পকলা একাডেমিতে জাতিয় নৃত্য উৎসবে নওগাঁ থেকে অংশ নিতে এসেছিলেন। তখন তার সঙ্গে কথা হয় জয়িতার। গত ২৫ জানুয়ারিতে ইরা’র নৃত্য কসর
তেরএই ছবিগুলো তোলেন জয়িতা, যা এখন ফেসবুকের নিউজ ফিডে একদম ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।
শৈশবে মোবাশ্বিরা ইরা’কে নৃত্যে তালিম দেন স্থানীয় নৃত্য শিক্ষক সুলতান মাহমুদ। তারপর মায়ের একান্ত ইচ্ছা ও প্রচেষ্টায় তিনি শরীর চর্চা ও নৃত্যের সমন্বিত রূপ ব্যালের অনুশীলন শুরু করেন ভিডিও দেখে। ঢাকাতে ভরত নাট্যম শিখেছিলেন ইরা, তাই ব্যালে তার কাছে অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। কিভাবে পায়ের আঙ্গুল ও পাতার উপর ভর করে সম্পূর্ণ শরীর বাতাসে ভাসিয়ে দেয়া যায় সেটা শিখতে বেশ খানিকটা সময় লেগে যায় নওগাঁ সরকারী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ইরার।
বাংলাদেশে ব্যালে চর্চার কোন সুযোগ নেই তবে ভারতে গত ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ন্যাশনাল ব্যালে একাডেমি অব ইন্ডিয়া। শিল্পকলায় নৃত্যের এক স্বতন্ত্র রূপ হলো ব্যালে যা ১৫০০ শতকে ইতালীয় রেঁনেসার সৃষ্টি। পরবর্তীতে ফ্রান্স, জার্মান সহ গোটা ইউরোপ হয়ে এখন আমেরিকায় ব্যাপক জনপ্রিয়।
আমাদের দেশে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক শিক্ষা গ্রহণরত মেয়েরা এক এক করে বো*রকা ও হি*জাবের ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে তখন ইরা’র পাশ্চাত্য শিল্পকলার প্রতি গভীর আকর্ষণ ও অনুশীলন আমাদের ভেতরে আশার আলো জাগিয়ে দেয়।