মশিউর আনন্দ, ঢাকা
জাতীয় সংস্কৃতি ও কৃষ্টির উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষন ও প্রসারের মাধ্যমে সকল মানুষের জন্য শিল্প সংস্কৃতির প্রবাহ তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিষ্ঠিতা করেছেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
শিল্পের উৎকর্ষ সাধন, সকলের জন্য শিল্প সংস্কৃতি এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাঙালি সংস্কৃতিকে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ৪৮ বছর যাবৎ কাজ করে চলেছে জাতির পিতার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দিবসটি উদযাপনে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি এবং একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর উপস্থিতিতে বিকালে একাডেমির নন্দনমেঞ্চে জাতীয় পতাকা ও একাডেমির পতাকা উত্তোলন করা হয়। এসময় জাতীয় সংগীত এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে শিশু সংগীত ধন্য মুজিব ধন্য পরিবেশন করেন একাডেমির শিশু সংগীত দল। এরপর ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের’… ও ‘মুক্তিযুদ্ধ চেতনাদীপ্ত পিতার পতাকা হাতে’ গান দুটির মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্ববৃহৎ প্রতিকৃতি (৪৩/৩২ ফুট) প্রদর্শনীর উদ্ধোধন করেন। প্রদর্শনী চলবে ৭ মার্চ পর্যন্ত। জতীয় চিত্রশালার ২ ও ৩ নং গ্যালারিতে উদ্ধোধন করা হয় সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম নিয়ে ১০দিনব্যাপী প্রদর্শনী। প্রদর্শনী চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
বিকালে জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে একাডেমির সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ২৪টি বইয়ের পাঠ উন্মোচন করেন মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, বিশেষ অতিথি, প্রধান আলোচক এবং সভাপতিসহ সকলে। এরপর শুরু হয় আলোচনা পর্ব। স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির সম্মানিত সচিব মো. আছাদুজ্জামান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: আবুল মনসুর।
আলোচনা পর্বের পর সাংকৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রথমেই স্নাতা মাহরিন পরিচালনা ও লিয়াকত আলী লাকীর ভাবনা ও পরিকল্পনায় ‘শুভেচ্ছা ভালোবাসা’ শিরোনামে নৃত্য পরিবেশন করে একাডেমির নৃত্যশিল্পীবৃন্দ। একক সংগীত পরিবেশন করেন খায়রুল আলম শাকিল, ফরিদা পারভীন, সাইদুর রহমান বয়াতির বঙ্গবন্ধু ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে গান এবং সুরবালা রায় এর পরিবেশন করেন। একাডেমির অ্যাক্রোবেটিক দলের পরিচালনায় ক্যাপডান্স, চেয়ার সেটিং, রিং ডান্স, দিয়াবো ব্যালেন্স ও নেক আয়রন বার নিয়ে ৫ টি পরিবেশনা পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। কবিতা আবৃত্তি করেন আহকাম উল্লাহ এবং ডালিয়া আহমেদ। সমবেত সংগীত পরিবেশন করেন একাডেমির বাউল দলের পরিবেশনায় সোনার মানুষ চাই, শিশুদলের পরিবেশনায় আমরা সবাই মঞ্চকুঁড়ি ও এ মাটি নয় জঙ্গীবদের…., একাডেমির সংগীত শিল্পীদের পরিবেশনায় প্রয়াত পাঁচ প্রখ্যাত গুণীশিল্পী লতা মঙ্গেশকর, বাপ্পি লাহিড়ি, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, সুবীর নন্দী এবং এন্ড্রোকিশোরের গান নিয়ে ট্রিবিউট, একাডেমির প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পীবৃন্দ পরিবেশনা এবং একাডেমির ভাওয়াইয়া দলের সোনার এ দেশ পরিবেশন করেন।
জয়দ্বীপ পালিত এর নৃত্য পরিচালনা ও ইবনে রাজন এর সংগীত পরিবেশনায় ‘প্রত্যয় হাতে হাতে’ পরিবেশন করেন একাডেমির শিশু নৃত্যদল। মেহরাজ হক তুষার এর নৃত্য পরিচালনা ও ইবনে রাজন এর সংগীত পরিবেশনায় আমরা সুন্দরের অতন্ত্র প্রহরী.. পরিবেশন করেন একাডেমির শিশু নৃত্যদল। মেহরাজ হক তুষার এর নৃত্য পরিচালনা ও লিয়াকত আলী লাকীর ভাবনা ও পরিকল্পনায় ‘সহজ মানুষ’ পরিবেশন করেন একাডেমির নৃত্যশিল্পীবৃন্দ। ফিফা চাকমা পরিচালিত সম্প্রীতি পরিবেশন করেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি নৃত্যদল। ফারহানা চৌধুরী বেবী পরিচালনা ও ইবনে রাজন এর সংগীত ও লিয়াকত আলী লাকীর ভাবনা ও পরিকল্পনায় নৃত্যালেখ্য পরিবেশিত হয় ষড়ঋতু।অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দিলরুবা সাথী ও মোঃ আলমগীর।