বইমেলা সমাচার ২০২২
ঢাকায় থেকে একুশের বইমেলাতে না গেলে ভীষণ লজ্জার ব্যাপার। তাই ট্রাফিককে উপেক্ষা করেই চলে এলাম। সাথে নিয়ে এলাম একটি লিস্ট। সেই লিস্ট ধরেই ঘোরা হয়ে গেল সমগ্র বইমেলা। রাস্তার ওপারে বাংলা একাডেমী ঘুরে আমার লিস্টের কারুরই পেলাম না।
অবশেষে সরওয়াদ্দী উদ্যানে এক এক করে খুঁজতে থাকলাম। প্রথমে গেলাম আমার কবিবন্ধু মুকতাদির চৌধুরী’র কবিতার বই শরৎ হেমন্তের পদাবলী কাব্য গ্রন্থ কেনার জন্য ঝিনুক প্রকাশনীর স্টলে। ব্যথিত হলাম। কবির বই এখনো স্টলে আসেনি। পরবর্তী বই লিস্টে ছিল বন্ধু সাংবাদিক তপন দেবনাথ সম্পাদিত কামরুল আহসানের আমেরিকা দেখা না দেখা গ্রন্থ। সব বই ২৫% ছাড় রয়েছে। বইয়ের লেখক লস এঞ্জেলেস প্রবাসী।
বইমেলাতে এসে হাসান মাহমুদ এর বই বাঙালী মুসলমান প্রশ্ন যদি না নেই তাহলে সোমাইয়া মাহমুদ এর বিষন্ন মুখচ্ছবি ভেসে উঠল। নেওয়ার পেছনে আরো একটা কারন হল, বাঙলা মূকাভিনয় গবেষণা কেন্দ্রের লেখনীতে তথ্য সমূহ কাজে লাগবে, স্বরেআ প্রকাশনী।
আমার মামী শাম্মি পেন্সিল প্রকাশনীর সাথে জড়িত। আগামী বছর একটি কবিতার বই প্রকাশের আশ্বাস দেওয়াতে গেলাম সেই স্টলে। পেন্সিল প্রকাশনীতে আমার ভাগ্নী’র বইও সংগ্রহ করেছি।
সবশেষে , গেলাম বিদ্যাপ্রকাশ স্টলে। মুজিবুর রহমান খোকা ভাইকে স্টলে বসা জনৈক ব্যাক্তিকে বলে আসলাম জানাবেন লস এঞ্জেলেস থেকে হুদা এসেছিল। কাউন্টারের জনৈক ব্যাক্তি বললেন ওহ আপনারা একই জায়গায় থাকেন?
বইমেলায় যাওয়ার আগে গিয়েছিলাম অভিনন্দন জানাতে বন্ধুবর কবি কামাল চৌধুরীর সাথে দেখা করতে। দেখলাম বিদ্যাপ্রকাশ প্রকাশিত কামাল চৌধুরীর সমগ্র কাব্যগ্রন্থ । ২৫টা কপি ছিল। সবাই হাতে করে নিয়ে গেছে। একটা কপি আছে লাইব্রেরির জন্য এবং বন্ধু হিসাবে সংগ্রহ করার অনুরোধ জানাল।
আমার এলাকার ছোট ভাই মোহাম্মদ শামছুজ্জামান বই লিখেছে বুয়েটের স্মৃতিকথা। ফেসবুকে জানাল বই মেলায় গেলে শ্রাবণী প্রকাশনীতে বই আছে যেখানে স্মৃতিকথায় আমার সম্পর্কে ছবিসহ শ্রদ্ধার সাথে লিখেছে। এরপর সেই বই না কিনে কি পারা যায়।
এই কয়টা বই সংগ্রহ করতেই সময় শেষ।
চেয়ারে বসে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলাম । এমন সময় একজন এসে সালাম দিয়ে বলল স্যার ভাল আছেন? একটু অবাক হলাম। বুঝতে পেরে বলল স্যার আমি সিলেট থেকে বই মেলাতে এসেছি। কিন্ত আমি আপনার সাথে ফেসবুকে আছি। আপনার সব কিছুই ফলো করি। আপনাকে দেখেই চিনে ফেলেছি। যাওয়ার সময় আমার সাথে একটা ছবি তুলে গেল।
বের হয়ে যাচ্ছি শিল্পকলা একাডেমীর উদ্দেশ্যে। ওখানে মূকাভিনয় ফেডারেশন এর একটি ওয়ার্কশপ হবে। এমন সময় একটা কিশোরী এসে বলল আমি বিকাশের হয়ে কাজ করছি। বঞ্চিত শিশুদের পড়ার জন্য বই ডোনেট করবেন? বললাম করব। তিনটা বই কিনে দিলাম। তারা তার জন্য আমার ছবি তুলে প্রিন্ট আউট করে ছবি দিল সেই সাথে সার্টিফিকেট। ভাল লাগল । যারা বইমেলায় যাচ্ছেন। সবার কাছে অনুরোধ। বিকাশের বই সংগ্রহ স্টলে বঞ্চিত শিশুদের জন্য বই কিনে দিলে দেখবেন আপনার আত্মার কাছে একটা অনুভূতির জন্ম নেবে, যা প্রশান্তিমূলক।