দু’জনের একাকিত্তে হাতে হাত রেখে-বৈশাখ
– ফারুক সরকার প্রধান,সিল্কেবোর্গ, ডেনমার্ক।
শজিনার ডালপালা গেছে ভেঙ্গে
এই বৈশাখী ঝড়ে। কচি শিশু আম
আর বোল কেঁদে মরে, ঝরে কালচে
মাটিতে। পরাজিত প্রকৃতি জানায় শর্তহীন
অধঃকৃত ধ্বস্ততার নির্জল ইস্তাহার।
তবুও চলে মেলা পরব-পার্বণ
আদরের উৎসব আর অতিরঞ্জিত আপ্যায়ন,
শীতের জড়তা আজ অনেক পুরোনো কথা।
নতুন আবাহন আর প্রত্যাশা নিয়ে
চাষী-বৌ ভবিষ্যৎ খুঁজে দিগন্তের মাঠে।
সুহৃদয়াকে ভালবেসে বাউলের গানে
বলে ঝড়ুয়া হাওয়া – দিয়ে যাও, গেয়ে যাও
আমার মনের কথা অনাবিল হেসে।
পুতুলের নাচ আর নাগরদোলার শেষে
জারিগান পালাগান নিয়ে সবাই ব্যাস্ত আবার।
লক্ষ্মী-গনেশ পূর্ণ্যার্থী শেষে, নয়া হালখাতায়
ভুস্বামীদের ঋণ খাজনা পরিশোধ আজ! তাই দেখো
চমকিত লিচু তাকায় – হাসে গাছে গাছে,
যেন লজ্জাবতি মেয়ে সব, সাথে লটকন
নটকাফল মন কেনে বৈশাখী উল্লাসে।
বৈষ্ণব পঞ্জিকার মধুসূদন বৈশাখ তুমি –
তবে নাব্যতা হারিয়ে নদীর চৌচির হাঁ হাঁ কার
আর বার্ধ্যকের আয়নায় এ রুক্ষতা কেন?
বসন্ত চলে গেছে, রেখে গেছে কানে তালা
বজ্র বিদ্যুৎ আর হঠকারী উন্মত্ত বর্ষণ।
ঝড়ঝঞ্ঝা কেটে গেলে চলো মুখরিত
বৈশাখী মেলায় আমারই সাথে,
দু’জনের একাকিত্তে হাতে হাত রেখে
খুঁজে নেবো দু’দন্ডের বিশাখা নক্ষত্রযুক্তা
এক মুঠো পূর্ণিমার আলো।
কবি পরিচিতি:
কবি, লেখক এবং প্রাক্তন সাংবাদিক।
১৯৭৩ সনের পর থেকে স্থায়ী ঠিকানা ডেনমার্ক – বহুজাতিক কর্পোরেশনে মহাপরিচালক পদে চাকরি শেষে এখন অবসরপ্রাপ্ত জীবন।
পাঁচটা ভাষায় অনর্গল – বাংলা ছাড়াও ড্যানীশ এবং ইংরেজীতে লেখেন এবং প্রকাশ করে থাকেন।