• রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪১ অপরাহ্ন
Headline
তানিয়া আফরিন পেলেন আন্তর্জাতিক মর্যাদাপূর্ণ ‘সাউথ এশিয়ান লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার উদ্যোগে ইফতার মাহফিল ও নারী-শিশু নির্যাতন বিরোধী আলোচনা সভা অদম্য নারী পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এম মুরশিদ উপস্থিত ছিলেন। BAMGLADESHI AMERICAN COMMUNITY CHANGEMAKERS দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা পুনরুজ্জীবিত করতে একমত ড. ইউনূস ও শাহবাজ শরিফ ইউনূস-বাইডেন বৈঠক নিয়ে যা বলেছে হোয়াইট হাউস ‘রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের বিমানবন্দরে ভিআইপি সার্ভিস দেব’ দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা জরুরি : ড. যশোদা জীবন দেবনাথ মাহবুব সিরাজ তুহিন সাউথ অস্ট্রেলিয়ায় বাঙালি ছাত্র ও অভিবাসন প্রত্যাশীদের অভিভাবক সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য সুশাসন, শিক্ষার প্রসার ও প্রযুক্তির উন্নয়নে গুরুত্ব দিতে হবে : প্রীতি চক্রবর্তী

মেক্সিকোর পিরামিড তে-ওতি-ওয়াকান

Reporter Name / ৭৩ Time View
Update : বুধবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২২

 

 

 

 

শাহাব আহমেদ

একজন নারীর শরীর, মন ও অনুভূতিকে ভেঙে ফেলার জন্য পুরুষের চেয়ে বড় কোনো টুল নেই পৃথিবীতে- তানিয়া বলেছিল। সৃষ্টির সূক্ষ্ম ও সুন্দরতম অভিব্যক্তি সে, কিন্তু পুরুষের পায়ের নিচে কচলানো।
কিন্তু গল্প এখানে তানিয়ার নয়, সৃষ্টি রহস্যের। তিনবার সৃষ্ট ও ধ্বংস হয়েছে পৃথিবী, কিন্তু কেউ আর তার পুনঃর্সৃষ্টির দায়িত্ব নিচ্ছে না। বন্ধ্যাত্ব বিমোচনে মেয়েরাই অগ্রগামী হয়। সৃজনের মন্ত্র ঠোঁটে, সৃষ্টি সুখের উল্লাস বুকে নিয়ে এগিয়ে আসে কালচি-উইটিলি-কিউ। সাগর, মহাসাগর, হ্রদ, স্রোতস্বীনী ও স্রোতের মহাদেবী সে। ঘন সবুজরংয়ের স্কার্ট তার কোমরে, সাপের ফনার মত বেণী দুলিয়ে হাঁটে সে। তার নয়নঠারে অবশ ত্লালক। নারী যখনই কোথাও যায়, “চিরতরে চলে গেল বুঝি’ এই ভেবে ত্লালকের
নয়ন ঝুরে অবিরল। বৃষ্টি যে কারো না কারো চোখের জল, সে আমি দু’বছর বয়সেই বুঝেছি।

কালচি-উইটিলি-কিউ’র সৃষ্ট ৪র্থ সূর্য ও ৪র্থ পৃথিবী ছিল ভালোবাসায় উষ্ণ ও লাস্যময়। তবে ঠিক কতদিন সে বেঁচে ছিল কেউ জানে না, জানে শুধু মেয়েদের সৃষ্টি নিখুঁত হয়। বলা হয়ে থাকে, অন্য সবার চেয়ে বেশিদিন স্থায়ী হয়েছিল তা। তবে কবে, কখন, কিভাবে বিলুপ্ত হয়েছে তা কারুর ধারণায় নেই। বিশ্বাসীদের একদল বলে, বিবস্বানের পুত্র মনুর আমলে স্থাবর জঙ্গম জলমগ্ন করে যে মহাপ্রলয় হয়েছিল এবং মৎস তার শৃঙ্গে দড়ি বেঁধে মনুর নৌকা টেনে নিয়েছিল পর্বত চুড়ায়-তখন। অবিশ্বাসীদের অন্যদল বলে, না, আরো অনেক পরে, গিলগামেসের উত্নাপিশিতামের কালে যখন অনম্বর সামাত এনকিদুকে প্রলুব্ধ করে বির্যহীন করেছিল। আরবী স্ক্রিপচার না বুঝে সবচেয়ে সোচ্চার যারা, তারা বলে, “না, মোটেও না, ইহা কড়ায় গণ্ডায় প্রমাণিত, সর্বনাশ ঘটেছিল নূহের আমলে।”
নির্বোধের তর্কে দিগম্বর নাচে!

তবে যখনই ঘটে থাকুক, সংসারের যে সবকিছু জলে ভেসে গিয়েছিল এবং সব প্রাণি মারা গিয়েছিল,
এতে সবাই একমত। তারপরেও নাকি কিছু বেঁচেছিল জলে ডুব দিয়ে। মাছ, হাঙর, কুমির, কুইচ্চা, তিমি, কাঁকড়া ও কচ্ছপ। আর কিছু ঢোড়া সাপ।

এরপরে কতকাল গেছে কেউ জানে না। জল আর জল চারিদিকে। সেখানে সাপ সাঁতরায়, হাঙর জলকেলি করে, মাছের মুখে রা নেই। শব্দহীন SSRI-গেলা বিজন বিষণ্ণতা। সুদর্শন অশ্বিনীকুমার ভ্রাতৃদ্বয় অবিরল ঢালেন আর ভগবানগণ সোমরসে নাক উঁচিয়ে থাকেন। অবশেষে তাদের বোধোদয় হয়, মানুষ না হলে তারা না-পান নরবলি, না-পান পুরোহিত পাদ্রিদের জনপদ লুণ্ঠনের ভোগ। তারা পাগলা ঘণ্টা বাজিয়ে তড়িঘড়ি তে-ওতি-ওয়াকানে উপস্থিত হন। কিন্তু ঘনকালো অন্ধকারে আবৃত পৃথিবী। কেউ কারো মুখ দেখতে পায় না। তাদের মনে হয়, তারা ডাচ পেইন্টার ‘পিতের ব্রুগেল দি এলডার’ এর ছবির কানার দল, গর্তে পড়েন পড়েন… বুঝতে পারেন, অন্ধকার ভারি অসুন্দর!

নতুন সূর্য দরকার, শুধু তাই নয়, তাদের চিন্তায় এই প্রথম প্যারাডাইম শিফট হয়। সূর্য আলো দেয় দিনে, রাতেও আলো দরকার। সুতরাং চাঁদ চাই চাঁদ, শশধর। ধনীতম ভগবান তেক- সিস-তেকাটল নতুন সূর্য হবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। আর ক্ষুদ্র, নিরীহ, নানাওয়াতজিনও সম ইচ্ছায় পিছিয়ে থাকেন না। দুজনে চারদিন চার রাত ধরে রোজা রাখেন, জিকির করেন, অজু করে সেজদায় হত্যা দিয়ে থাকেন। তাদের প্রার্থনা শেষ হলে অন্য দেবদেবীরা তে-ওতি-ওয়াকানের মাটিতে বিশাল হোমানল জ্বালান। সুদর্শন পোষাক পরে তেক-সিস-তেকাতল তার স্বর্ণাভ-সবুজ পালক, স্ফটিকমণি পাথর ও ধূপ-ধুনার নৈবেদ্য আগুনে ছুঁড়ে দেন। নানাওয়াতজিনের বসন জীর্ণ, চুলে ধূলা, চোখে কেতুর; নিবেদন করার মত কিছু নেই তার। তিনি নিজের রক্তে ভেজানো কিছু ঘাসপাতা ছুঁড়ে দেন আগুনে। দুজনেই তারপরে এগিয়ে যান লেলিহান আগুনের মুখবিবরের কাছে। তেক-সিস-তেকাতল কদম বাড়ান প্রথম কিন্তু নরকতুল্য তীব্র উত্তাপে তার ভ্রু ও গোঁফ পুড়ে যায়, তিনি ভয় পেয়ে পিছিয়ে আসেন। ধাতস্থ হয়ে এগিয়ে যান আবার কিন্তু এবারও ফিরে আসেন। এভাবে তৃতীয় চতুর্থ পঞ্চম বারেও তিনি সাহস সঞ্চয় করতে পারেন না। অন্যদিকে নানাওয়াতজিন এগিয়ে যান নির্ভয়ে। চোখ মুদে, ধীর পদক্ষেপে ও স্থির মস্তিষ্কে ঝাঁপ দেন তিনি। প্রতিদ্বন্দ্বির সাহস দেখে তেক-সিস-তেকাতল হায় হায় করে কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে ঝাঁপ দেন।

কিন্তু দেরি হয়ে গেছে, ইতিমধ্যেই দেবতারা নানাওয়াতজিনকে নবীন প্রভাকর হবার রায় দিয়েছেন। তেক-সিস-তেকাতল হন সৃষ্টির প্রথম চাঁদ। রায় হয়, দুজনে মিলে নতুন পৃথিবী সৃষ্টি করবেন তারা। কিন্তু দিন যায়, রাত যায়, সবকিছু চুপচাপ। কোথাও হাতুড়ির শব্দ নেই, করাত কাটে না, শঙ্খ বাজে না, নেই কোনো উলুধ্বনি, হুইসেল বাজে না মালগাড়ির।
ঘটনা কী?
দেবতারা কথা বলেন নানাওয়াতজিনের সাথে। তারপরে তারাও একে একে ঝাঁপ দেন আগুনে এবং তাদের আত্মবলির মধ্য দিয়ে সৃষ্টির চাকা নড়ে ওঠে। এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ সূর্যের নতুন যুগ শুরু হয়। এবং তে-ওতি-ওয়াকান হয় সর্বমানুষের জন্মস্থান।

পরিব্রাজক, জন্ম কই তোমার?
বিশ্বাসী হলে, তে-ওতি-ওয়াকানে।
অবিশ্বাসী হলে, পদ্মার তীরে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category