ঢাকা: আগামী নির্বাচনে বিদেশি হস্তক্ষেপের সুযোগ দেখছে না সরকার। এই প্রবণতাগুলো কমছে এবং আগামী দিনে বিদেশিদের কোনো সম্পৃক্ততা থাকবে না।
র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে সরকারের সমালোচনা—এগুলো অতীতের মতো নির্বাচনের আগে হস্তক্ষেপ বা চাপ সৃষ্টির ধারাবাহিকতা কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহিরয়ার আলম গত রবিবার সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মোটাদাগে এই প্রবণতা হারিয়ে যাচ্ছে।
হস্তক্ষেপ কম বা কমে গেছে। আশা করি, আগামী দিনেও (নির্বাচনে) বিদেশিদের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা থাকবে না। ’
ওয়াশিংটন ডিসিতে গত ৪ এপ্রিল মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের বৈঠকে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় আছে। বিএনপি ছাড়া সবাই ওই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহ দিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানান।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহিরয়ার আলম বলেছেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশে এলে হয়তো আরো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। তিনি আদৌ কী বলেছেন বা কী পরিস্থিতিতে বলেছেন, আমি সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। কিন্তু আমাদের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করতে বিদেশিদের আমন্ত্রণ জানানোর কোনো নীতি সরকারের নেই। এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তও হয়নি। ’
গত জানুয়ারিতেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, সরকার আগামী নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এখনো বিদেশে আছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সর্বশেষ বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা হয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ৬ এপ্রিল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেন, বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে যুক্তরাষ্ট্রকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুরোধ জানানোর ঘটনায় প্রমাণ হলো, আওয়ামী লীগই বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়।
এর পরদিন ৭ এপ্রিল তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে অনুরোধ করেছেন তা একান্ত তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। এটি দলের বা সরকারের নয়।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব বান কি মুনের দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো বাংলাদেশ সফর করেও বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে পারেননি। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে থেকে বিদেশি কূটনৈতিক মিশনগুলো সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের কাছে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রত্যাশা তুলে ধরে আসছে। এবার নির্বাচনের আগে থেকেই পশ্চিমা দূতরা বলছেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের এই সময়ে বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ও সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে ২০১৮ সালের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র কোনো পর্যবেক্ষকদল পাঠায়নি।