তথ্যপ্রযুক্তি ও সোস্যাল মিডিয়ার বদৌলতে বিশ্ব আজ উন্মুক্ত। পৃথিবীর এক প্রান্তের খবর অন্য প্রান্তে পৌঁছাতে সময় লাগে এখন মাত্র কয়েক সেকেন্ড। আর এর পেছনে নিরন্তর কাজ করছেন গণমাধ্যম কর্মী তথা সাংবাদিক সমাজ। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে গণমাধ্যম কর্মীদের অবদান ব্যাপক। গণমাধ্যম তথা সংবাদপত্র সমাজ ও জাতির দর্পণ। সবখানেই মিডিয়ার একটা বড় ভূমিকা আছে। মিডিয়া ছাড়া সরকারও চলতে পারে না বিরোধীদলও চলতে পারে না। গত ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব আয়োজিত সাংবাদিক আড্ডার আলাপচারিতায় এ বিষয়গুলো উঠে আসে।
সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব, কর্তব্য, জনগণের প্রত্যাশাসহ বিভিন্ন বিষয় ‘আড্ডা’য় উপস্থিত সাংবাদিকগণ তুলে ধরেন।
জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে আয়োজিত এই আড্ডায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন।
এতে সভাপতিত্ব করেন আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ এবং সঞ্চালনায় ছিলেন প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও প্রথম আলোর চিফ রিপোর্টার মনজুরুল হক।
প্রধান অতিথি ফরিদা ইয়াসমিন তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, সাংবাদিকতার ধরন-ধারন পাল্টে গেছে। আর এর কারণ সোস্যাল মিডিয়ার আধিপত্য। এখন আর পত্রিকার জন্য কেউ অপেক্ষা করেন না। হাতের মুঠোয় ডিভাইসে সব কিছু পেয়ে যান। এজন্য সাংবাদিকতা পেশার চ্যালেঞ্জ বেশি। কারণ সোস্যাল মিডিয়ার খবর অনেক যাচাই-বাছাই করে তারপর প্রকাশ করতে হয়। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই কাজ করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের সমাজে সবক্ষেত্রে একটা অবক্ষয় চলছে। সাংবাদিকরা এর বাইরে নয়। তবে এতো কিছুর মধ্যেও সাংবাদিকদের সৎ থাকতে হবে। সাংবাদিকতায় যদি সৎ না থাকা যায় তাহলে তার চাল-ডালের ব্যবসা করা উচিত। কারণ আমরা সাংবাদিকতার নামে পাঠকদের প্রতারিত করতে পারি না।
ফরিদা ইয়াসমিন প্রবাসে বসবাসকারী এ প্রজন্মের সন্তানদের বাংলা শেখানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, তারা যাতে তাদের শেকড় ভুলে না যান সে দিকে খেয়াল রাখবেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এটি আপনারা ইতিবাচকভাবে তুলে ধরুন। কারণ আপনারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের অ্যাম্বাসেডর।
সভাপতি মোহাম্মদ সাঈদ তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ হাসলে আমরা হাসি। বাংলাদেশ ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকি। তাই বাংলাদেশকে ভালো রাখার জন্য দল-মত নির্বিশেষে চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অপরিসীম। দায়িত্বরত সাংবাদিকদের একে অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা, আলাপচারিতা, সহভাগিতা ও পেশাগত মান উন্নয়নে একে অপরের সহযোগিতা অপরিহার্য।
সাধারণ সম্পাদক ও অনুষ্ঠান সঞ্চালক মনজুরুল হক বলেন, আপনাদের সকলের উপস্থিতি আমাদের এ আড্ডা অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করেছে। আগামীতেও আমরা সময় ও সুযোগ পেলে একত্রিত হবার আশা রাখি।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দিতে বাংলাদেশ থেকে আগত ও প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে বাংলাদেশ থেকে আগত সাংবাদিকদের সাথে আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের এই মতবিনিময় আড্ডায় বাংলাদেশ থেকে আগত সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিজনেস এডিটর রুহুল আমিন রাসেল, দৈনিক পূর্বাঞ্চলের বিশেষ প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম টুটুল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াদুর রহমান জিহাদ।
এই আড্ডা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডেমোক্রেটিক ডিস্ট্রিক্ট লিডার অ্যাট লার্জ এটর্নি মঈন চৌধুরী, জেবিবিএর সভাপতি গিয়াস আহমেদ, কবি সালেম সুলেরি, সাংবাদিক সাঈদ তারেক, ইউএসএ নিউজ অনলাইনের সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন সেলিম, লায়ন্স ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, টাইম টিভি ও বাংলা পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক সালাউদ্দিন আহমেদ, অর্থকন্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এনামুল হক এনাম, ফোবানার স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ওয়াহিদ কাজী এলিন, ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম, কাজী তোফায়েল ইসলাম।
আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শওকত ওসমান রচি, বর্তমান কমিটির কোষাধ্যক্ষ মশিউর রহমান মজুমদার, সাপ্তাহিক প্রবাসের প্রধান সম্পাদক ওয়ালিউল আলম, জাতীয় দলের সাবেক বক্সার সেলিম, আইবিটিভি ইউএসএর বিশেষ প্রতিনিধি মাহমুদ হাসান, বক্সার এনায়েত হোসেন, বাংলাট্রিবিউন-এর নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি আলমগীর হোসেন, পাপিয়া রহমান প্রমুখ।