নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল আজ যথাযথ মর্যাদায় ’ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ২০২২’ উদযাপন করে। বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসে অবিস্মরণীয় এদিনে কনস্যুলেটের আমন্ত্রণে ”ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার” পদকপ্রাপ্ত ড. ডেভিড নেলিন কনস্যুলেট পরিদর্শন করেন এবং পরবর্তীতে এ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান জানিয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এবং ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার প্রাপ্ত বাংলাদেশের বন্ধু ডাঃ ডেভিড নেলিনসহ কনস্যুলেটের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে ঢাকা হতে প্রেরিত মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র বাণী পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে ৭ই মার্চের বক্তব্যের ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং মুজিববর্ষের থীম সঙ্গীতটি পরিবেশিত হয়।
দিবসটির তাৎপর্য ও গুরুত্বের উপর আলোচনা করা হয়। ড. নেলিন বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে বঙ্গবন্ধুর অবদান, স্বল্প সময়ে সংবিধান প্রণয়নে তার ভূমিকা, জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ এবং বাংলায় জাতিসংঘের অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রদানসহ স্বাধীন দেশের পূনর্গঠন কার্যক্রমে তার অবদানের কথা বিশদভাবে উল্লেখ করেন। উল্লেখ্য, ড. নেলিন ১৯৬৭ সালে বাংলাদেশ গমনের পর স্বাধীনতা পূর্ব এবং পরবর্তী সময়ে ৭ বছরের অধিককাল বাংলাদেশে অবস্থান করেন। বাংলাদেশে অবস্থানকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধুর সাথে তার সাক্ষাতের বিষয়টি তিনি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি বাংলাদশের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, আতিথেয়তার কথা আনন্দের সাথে স্মৃতিচারণ করেন।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মান্যবর জনাব এম শহিদুল ইসলাম এবং ”ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার” পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধে সমর্থনকারী বাংলাদেশের বন্ধু লিয়ার লেভিন উক্ত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালী যুক্ত হন। রাষ্ট্রদূত মান্যবর জনাব এম শহিদুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে ইউনেস্কো কর্তৃক ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণকে বিশ্ব-ঐতিহ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন যে ৭ই মার্চের ভাষণ এখন শুধু বাংলাদেশেই নয় বিশ্ব সম্পদে পরিণত হয়েছে। লিয়ার লেভিন তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের পটভূমি এবং স্বাধীনতা অর্জনে ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশিলতায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রাসঙ্গিকতা ও প্রয়োজনীয়তার কথা তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এ অর্জনের জন্য সকলকে অভিনন্দন জানান।
আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম তাঁর স্বাগত বক্তব্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন যে এ বছরের ৭ই মার্চ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কারণ সমগ্রজাতি একই সময়ে বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী পালন করছে।
কনসাল জেনারেল কর্তৃক ড. ডেভিড নেলিনকে স্মৃতিসৌধ খচিত স্মারক প্রদানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।