• রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ১২:০৩ পূর্বাহ্ন
Headline
টেকসই উন্নয়ন অর্জনে শিক্ষা খাতে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ, গবেষণা ও নীতি প্রণয়ন জরুরি -অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন ডা. সিনথিয়া আলম ত্বকচর্চার নতুন দিগন্তের পথপ্রদর্শক কানাডায় নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য নীতিগত সহায়তা ও সরকারি সহযোগিতা নিশ্চিত করছি -আরিফুর রহমান, P.Eng. ৩৯তম ফোবানা সম্মেলনের প্রচারে নিউইয়র্ক সফরে হোস্ট কমিটি শুরু হলো ঢাকা ক্লাব প্রেসিডেন্ট কাপ স্নুকার টুর্নামেন্ট-২০২৫ তানিয়া আফরিন পেলেন আন্তর্জাতিক মর্যাদাপূর্ণ ‘সাউথ এশিয়ান লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার উদ্যোগে ইফতার মাহফিল ও নারী-শিশু নির্যাতন বিরোধী আলোচনা সভা অদম্য নারী পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এম মুরশিদ উপস্থিত ছিলেন। BAMGLADESHI AMERICAN COMMUNITY CHANGEMAKERS দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা পুনরুজ্জীবিত করতে একমত ড. ইউনূস ও শাহবাজ শরিফ

অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪২৮’ পেলেন রঞ্জনা বিশ্বাস

Reporter Name / ১০৪ Time View
Update : বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০২২

মশিউর আনন্দ, ঢাকা:
‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪২৮’-ভূষিত হলেন প্রাবন্ধিক-গবেষক রঞ্জনা বিশ্বাস। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে বিকাল ৪.৩০মিনিটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক-প্রাবন্ধিক আকিমুন রহমান। সভাপতিত্ব করেন অনন্যা-সম্পাদক তাসমিমা হোসেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে রঞ্জনা বিশ্বাসের উপর লেখক-নির্মাতা ও সাংবাদিক তাপস কুমার দত্ত নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানটি শেষ হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতি সংসদের পরিবেশনা দিয়ে।অনুষ্ঠানে আলোচক আকিমুন রহমান বলেন, বেদেরাও আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। তাদের আত্মত্যাগের কাহিনির শেষ নেই। কিন্তু আমরা সেটা মানি না। রঞ্জনার গবেষণায় আমরা বেদেদের কথা জানতে পারি। মুক্তিযুদ্ধে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অবদান ও আত্মত্যাগের কথা জানতে পারি। বাংলা ঐতিহ্যবাহী পালকিবাহীদের জীবন ও অনালোচিত সেই ইতিহাসও আমাদের সামনে তুলে ধরেন তিনি। তিনি লোকগীতি, লোকসঙ্গীতের কথাগুলোও তুলে ধরেছেন।

তিনি আরো বলেন, রঞ্জনা শুধু গবেষক না, সৃজনশীল লেখকও। তিনি একাধারে কবি ও ঔপন্যাসিক। তার কবিতা ও উপন্যাস পড়ার সময় আমি অভিভূত হয়ে যাই। তিনি এক্ষেত্রে আলাদা করে পুরস্কৃত হওয়ার যোগ্য।

সভাপ্রধানের ভাষণে তাসমিমা হোসেন জানান, রঞ্জনা বিশ্বাস নতুন প্রজন্মের লেখক। ওর দেখার দৃষ্টিও অনন্য। তিনি বাংলাদেশের অবহেলিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন ইতিহাস ও সংষ্কৃতির সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘঠিয়ে দিচ্ছেন। একবিংশ শতকে এসে মানুষ হিসেবে সমাজের এই শ্রেণিভেদ ভেঙে দিতে চাই আমরা। রঞ্জনা লোকধর্ম ও লোকায়াত জীবন নিয়ে কাজ করে সেই বার্তা পৌছে দিয়েছেন আমাদের কাছে। অনন্যা কখনো বয়স দিয়ে মানুষের যোগ্যতা বিচার করে না। রঞ্জনাকে তাই পুরস্কৃত করতে পেরে সম্মানিত বোধ করছে অনন্যা।

পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশ করে রঞ্জনা বলেন, ১৫ বছর আগে যে জীবনকে আমি অস্বীকার করতে চেয়েছিলাম আজ সেই জীবন অনন্যা স্বীকৃতি পাচ্ছে। এই বিষয়ে ঘোর আমার কাটছে না। আমি সকলকে বলতে চাই, ভালোবেসে শুধু জীবনকে উদযাপন করতে শেখো। যেসকল নারী জীবনের অর্থ বোঝেন না, তাঁদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, জীবনে প্রয়োজনের জন্য বাঁচুন। সমাজের প্রতিটি শ্রেণিপেশা, ধর্ম-বর্ণের মানুষকে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে মানুষ হিসেবে নিজেকে অতিক্রম করে যান।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে নৃত্য ও সঙ্গীত পরিবেশন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতি সংসদের সদস্যরা।

উল্লেখ্য, দেশের প্রবন্ধ ও গবেষণা সাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখার জন্য রঞ্জনা বিশ্বাসকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। তিনি একইসঙ্গে সৃজনশীল ও মননশীল লেখক। এ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ২৪। বেদে জনগোষ্ঠী ও বাংলাদেশের লোক-ঐতিহ্য নিয়ে গবেষণা করে তিনি খ্যাতি অর্জন করেছেন। এছাড়া, মুক্তিযুদ্ধ ও লোকসাহিত্য তাঁর গবেষণার অন্যতম প্রধান বিষয়। ইতিপূর্বে রঞ্জনা তরুণ লেখক হিসেবে কালি ও কলম সাহিত্যপুরস্কার এবং ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্যপুরস্কার অর্জন করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে আছে: বাংলাদেশের লোকধর্ম-১ম খণ্ড, বাংলাদেশের পালকি ও পালকিবাহক, বেদে জনগোষ্ঠির জীবনযাত্রা, বেদনার পাথর ও প্রান্তিক দীর্ঘশ্বাস, বেদে জনগোষ্টীর ভাষাঃ উৎস ও তাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য, বাংলাদেশের বেদে জনগোষ্ঠীর নৃতাত্ত্বিক পরিচয়, নারী পুরুষ সম্পর্ক: জেনেটিক প্রভাব, মুক্তিযুদ্ধে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়- ১ম খণ্ড, লোকসংস্কৃতিতে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও শেখ রাসেল,  লোকগানে বঙ্গবন্ধু, নারীপুনর্বাসনে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধুর কিশোরজীবন : আমাদের মহানায়ক, আমি মুজিব বলছি : অসমাপ্ত আত্মজীবনীর সমাপ্ত অধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ : ‘কাবুলিওয়ালা’, ‘সুভা’ ও ‘দালিয়া’, বিষ্যুৎবারের বারবেলা, জয়নাল বাদশা ও রাজপুত্র তাজেম, আয়নায় ভাঙতে থাকা চাঁদ, আমি তিনবেলা বৃষ্টিতে ভিজি।

বাংলা ১৪০১ সন (১৯৯৩ সাল) থেকে অনন্যা সাহিত্যপুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। প্রতিবছর একজন নারী-সাহিত্যিককে বাংলাদেশের সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ পর্যন্ত ২৬জন নারী সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে অনন্যা সাহিত্যপুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। এ-পর্যন্ত যাঁরা এ পুরস্কার পেয়েছেন, তাঁরা হলেন: সেলিনা হোসেন, রিজিয়া রহমান, ড. নীলিমা ইব্রাহিম, দিলারা হাশেম, রাবেয়া খাতুন, ড. সন্‌জীদা খাতুন, জাহানারা ইমাম (মরণোত্তর), নূরজাহান বেগম, রাজিয়া খান, রুবী রহমান, পূরবী বসু, আনোয়ারা সৈয়দ হক, মকবুলা মনজুর, ঝর্ণা দাশ পুরকায়স্থ, সালেহা চৌধুরী, নূরজাহান বোস, মালেকা বেগম, কাজী রোজী, নিয়াজ জামান, জাহানারা নওশিন, সোনিয়া নিশাত আমিন, বেগম মুশতারী শফী, বেগম আকতার কামাল, আকিমুন রহমান, নাদিরা মজুমদার ও ঝর্না রহমান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category