সরকারি হিসেবে দেশে ৩ হাজার ৮৪৭ জনের জন্য একজন রেজিস্ট্রার্ড ডাক্তার সেবা প্রদান করতে পারছেন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সুবিধা-বঞ্চিত মানুষের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ‘স্বাস্থ্য চাকা’ নামের একটি ভ্রাম্যমাণ প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছে। পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক প্রধান অতিথি হিসেবে এই সেবা চালু করেন। ঢাকার মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য বিশেষায়িত এই সেবা চালুর অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে যোগ দেন ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী, নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন ও কসভোর রাষ্ট্র্রদূত গুনের উরেয়া।
হেলথ কেয়ার অন হুইল প্রকল্পের মাধ্যমে বস্তিবাসী, ছিন্নমূল প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে চিকিৎসা পরামর্শ, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং ঔষধ সরবরাহ করছে আমাদের প্রতিধ্বনি ফাউন্ডেশন। ঢাকার একটি হোটেলে স্বাস্থ্য চাকার উদ্বোধনী আয়োজনে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, ‘করোনা মহামারির প্রেক্ষিতে মানুষ এখন ঘরের কাছেই স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যাশা করে। ভ্রাম্যমাণ অবকাঠামোর মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে সঠিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যাবে। স্বাস্থ্য চাকা সেবার মাধ্যমে চিকিৎসা সেবায় দারুণ পরিবর্তন আসবে বলে আমার প্রত্যাশা।’
অনুষ্ঠানে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, এ ধরনের সেবা মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য দারুণ এক উদ্যোগ বলা যায়। নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন বলেন, চিকিৎসা সেবা পাওয়া সবার মৌলিক অধিকার। সবার কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য এ ধরনের উদ্যোগ সমাজে দারুণ পরিবর্তন আনবে।
কসভোর রাষ্ট্রদূত গুনের উরেয়া বলেন, ব্যক্তিউদ্যোগের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার প্রচেষ্টা খুবই কার্যকর। স্বাস্থ্য চাকার মতো উদ্যোগ বাংলাদেশের সমাজকে আরও সামনে এগিয়ে নেবে।
২০২০ সালে যাত্রা শুরু করে আমাদের প্রতিধ্বনি ফাউন্ডেশন। আমাদের প্রতিধ্বনি ফাউন্ডেশনের সভাপতি সানজিদা ভূঁইয়া হক জানান, সব শ্রেণির মানুষের কাছে চিকিৎসা সেবাকে ছড়িয়ে দিতে আমাদের এই আন্তরিক প্রচেষ্টা। এই সেবার মাধ্যমে চিকিৎসা পরামর্শের পাশাপাশি বিশেষায়িত পরিবহনে রোগী দেখা থেকে শুরু করে ল্যাব সুবিধা রয়েছে যেখানে রক্ত পরীক্ষা, গ্লুকোজ ও প্রেগনেন্সি টেস্ট করা যাবে। পরীক্ষার পাশাপাশি শিশুস্বাস্থ্য, সংক্রামক রোগ এবং মানুষকে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার পরামর্শ প্রদানের জন্য কাজ করবো আমরা।
এ ধরনের প্ল্যাটফর্মের গুরুত্ব সম্পর্কে ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রফেশনাল ফেলো ও গবেষক আশা জাহিদ বলেন, ঢাকা বিশ্বের অন্যতম জনবসতিপূর্ণ শহর। এই শহরের মানুষের কাছে চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য সরকারি ও বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশের পরিসংখ্যান বলছে, ১ হাজার ৮৪৭ জনের জন্য একজন রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসক সেবা প্রদান করছেন। এই বাস্তবতায় স্বাস্থ্য চাকার মতো উদ্যোগ স্বাস্থ্যসেবায় বহুমাত্রিক সুযোগ তৈরি করবে।
অনুষ্ঠানে আরও অংশ নেন সংগঠনটির উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার মঞ্জুর কাদের, সহ-সভাপতি হাবিবুল হক এবং বিভিন্ন দূতাবাসের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কর্মকর্তারা। অর্থকণ্ঠ ডেস্ক