মশিউর আনন্দ, ঢাকা
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সামরিক জান্তা কর্তৃক সংঘটিত অপরাধযজ্ঞকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় জেনোসাইড ওয়াচ এবং লেমকিন ইন্সটিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন-কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার জেনোসাইড ওয়াচ-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি (Founding President) ড. গ্রেগরি এইচ স্টান্টন (Dr. Gregory H. Stanton) এবং লেমকিন ইন্সটিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন-এর কো-ফাউন্ডার ও কো-প্রেসিডেন্ট মিজ এলিসা জোডেন-ফোর্জি (Ms. Elisa Von Joeden-Forgey) এবং মিজ ইরিনে ভিক্টোরিয়া মাসিমিনো (Ms. Irene Victoria Massimino) – এর কাছে প্রেরিত পৃথক দুটি চিঠির মাধ্যমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের ধন্যবাদ জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিঠিতে বলেন, “১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী তাদের স্থানীয় দোসরদের সহযোগে পরিকল্পিতভাবে যে ব্যাপক গণহত্যা ও অপরাধ সংঘটন করেছিল— সেটিকে আপনাদের পক্ষ হতে গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়ে সমব্যথী হওয়ায় বাংলাদেশের জনগণ সান্ত্বনা খুঁজে পেয়েছে।”
চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন, “২০১৭ সালের ১১ই মার্চ তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে গৃহীত সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে বাংলাদেশে প্রতিবছর ২৫শে মার্চ গণহত্যা দিবস পালন করা হচ্ছে। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে ‘জেনোসাইড কর্নার’ স্থাপন করেছি।”
বাংলাদেশের গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে সরকারের প্রতি জাতীয় সংসদের প্রদত্ত দায়িত্বের কথা চিঠিতে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২৫শে মার্চ বাংলাদেশের গণহত্যা দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে জেনোসাইড ওয়াচ এবং লেমকিন ইন্সটিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন-এর প্রদত্ত স্বীকৃতি বিশেষ সহায়ক হবে।
উল্লেখ্য, জেনোসাইড ওয়াচ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সামরিক জান্তা কর্তৃক বাঙালি জনগোষ্ঠীর উপর সংঘটিত অপরাধযজ্ঞকে গণহত্যা, মানবতা বিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীতে লেমকিন ইন্সটিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালি জাতির উপরে সংঘটিত অপরাধযজ্ঞকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে। এছাড়া সংস্থা দুটি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যাকে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। গণহত্যা বিষয়ক সংস্থাসমূহের স্বীকৃতির ফলে ২৫শে মার্চ-কে গণহত্যা দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে অগ্রগতি হবে।