কাজী আসমা আজমেরী
পহেলা মার্চ কাশানি থেকে জোহান্সবার্গ fly জর্ডানের যাওয়ার উদ্দেশ্যে। পরবর্তীতে জর্ডানে যাওয়ার গল্প তা পরবর্তীতে বলব কি হয়েছে কিন্তু এখন বলি সবচেয়ে চমৎকার যে এই ঘটনাটা ঘটেছিল সেটাই বলে।
এক ভদ্রলোককে বললাম আমাকে একটু ছবি তুলে দেন। এখন কষ্ট করে অনেকগুলো ছবি তুলো প্লেনের বাইরে এয়ারপোর্টে। তারপর যখন প্লেনের ভিতর ঢুকলো ছোট প্লেন খুব ভালই লাগলো এত ছোট প্লেন অনেকদিন পরে দেখলাম। কক্সবাজার কিংবা চিটাগাং যাওয়ার প্লেনের মত।প্লেন তার থেকে একটু বড় হবে। প্লেনে ঢুকতেই পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে ম্যারাথনে আগত লোকদের সাথে দেখা হল। অবাক হলাম যে ইন্টার্নেশনাল ফ্লাইট এত ছোট হতে পারে। ছোট শহরে ছোট প্লেনে করে বড় শহরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম জোহান্সবার্গ জর্ডানের রাজধানী আম্মানে উদ্দেশ্যে। আমার সিট নাম্বার হচ্ছে এইটা তো আমি একটু এগোলে আসলাম খালি সিট দেখে পাঁচ নাম্বারে বসে পড়লাম। আমার সদ্য পরিচিত ফটোগ্রাফার বলল যে আমার সিট নাম্বার ৫ তো আমি বললাম কি হয়েছে আমি একটু উইন্ডোজ সিটে বসতে চাচ্ছি আপনি নাহলে আমার পাশেই বসুন। রাজি হয়ে গেল ,কোন সমস্যা নাই।
বসলাম দুজন অনেকক্ষণ কথা হল বিভিন্ন জিনিস নিয়ে কেমন বা ম্যারাথন দৌড় মারলাম, চারটি দেশের বর্ডার শহর কাসানি এইসব কথা হল। জিজ্ঞেস করলেন আমি কি করি আমি বললাম আমার পরিচয় দিলাম এবং কতগুলো দেশ ভ্রমণ করেছি তাই বললাম তারপর উনাকে জিজ্ঞেস করলে উনি বিজনেস কার্ড টা আমাকে ধরিয়ে দিলেন। দেখে তো আমি অবাক? মিনিস্টারের পাশে বসে রয়েছি আর এই ভদ্রলোক হচ্ছে মিনিস্টার। আরে একে তো আমি দেখেছি এড দেয়ার সময় তাকে তার নাম ধরে ডাকা হয়েছে কিন্তু তাকে দেখতে পাইনি অনেক দূর থেকে। সব কালোদের দেখতে প্রায় একই রকম লাগে।
ফটোগ্রাফার বন্ধুর সাথে অনেক কথা হলো বাংলাদেশ সম্পর্কে বাংলাদেশ কেমন? দেশের লেবার মিনিস্ট্রি কিভাবে কাজ করে এবং বাংলাদেশের সাথে বৈদেশিক সম্পর্ক কেমন এইসব বিনিময় কথা হল কথা বলতে বলতে এক ঘন্টা কেটে গেল আমরা খেতে বসলাম? এটা খুবই মজার ছিল খাবারটা। বিফ খেলাম। তারপরে খাওয়া শেষে গল্প করতে করতে জিজ্ঞেস করলাম বিয়ে করেছেন কেনা তো বলল বিয়ে করেন নাই আমিও বললাম যে আমিও বিয়ে করিনি 39 বছরে বিয়ে করেন নাই। আমার বিয়ে করার সৌভাগ্য হয়নি কারণ এখনও পর্যন্ত আমার রাজপুত্রকে খুঁজে পায়নি। দুষ্টামি করে বললাম ওহ কত মজার আমরা দুজন সিঙ্গেল।
আমাকে বলল যে চলেন তাহলে বিয়ে করে ফেলি, আমি বললাম যদি আপনি আমাকে কতগুলো গরু দিবেন আগে বলেন? আফ্রিকান সমাজে মেয়েদেরকে বিয়ে করতে হলে, দশটি গরু দিয়ে বিয়ে করতে হয়। তিনি বললেন আমাকে তিরিশটি গরু দিবেন, আরো উঠাতে হবে। দশটি জিরাব বাংলাদেশ পাঠান তাহলে বিয়ে করতে পারি? পাত্র আমার বললেন 10 টি জিরাফ দিতে পারবেন ,চিন্তা করতে হবে কোথায় পাওয়া যায়? এরকম কথা চলতে লাগল অনেকক্ষণ তার পরে একসময় আড়াই ঘন্টার ফ্লাইট শেষ হয়ে গেল আমি চলে আসলাম জোহান্সবার্গ। আমাদের দুজনেরই দুটি দেশে ফ্লাইট রয়েছে , ইথোপিয়ায় এ যোগদান করতে আর আমি যাব আম্মানে পৃথিবীর বিখ্যাত পেট্রা দেখতে। তারপর দুজনে অনেকক্ষণ বসে লাউঞ্জে আড্ডা দিলাম, আমার লাগেজ ব্যাগ বের করে চেকিং করার জন্য আমি তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলাম।
খেলাম পৃথিবী, অবাক হলাম বাংলাদেশের কোন মন্ত্রী মিনিস্টার হলে তার সাথে নাহলেও দশ জন চাটুকারিতা ও অনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট দু’চারজন তো থাকবেই? বতসোয়ানা আমাদের থেকে অনেক ধনী দেশ তাদের ডায়মন্ডের অনেক মাইন্ড রয়েছে, 25 লাখ লোকের বসতি। এই দেশের একজন মিনিস্টার কত সাধারণভাবে যায় ,যদিও নিউজিল্যান্ডের মিনিস্টার এরকমই যায়। অবশ্য আমার হাতে পাসপোর্ট দেখে আমাকে Passport Girl বলে ডাকছিলেন। Botswanian Minister পাসপোর্ট গালের উপাধিটা পাওয়ায় ভালই লাগলো।
মাথায় শুধু চিন্তা আসছিল বাংলাদেশ কত দরিদ্র? তারপরও আমাদের দেশের মিনিস্টার আসতে হলে মিনিমাম তাদের সাথে ১০ থেকে ১৫ জন লোকের এক্সট্রা খরচ দিয়ে আমাদের টাকায় নিয়ে আসতে হয়? কোন উন্নতি হয়নি, দুর্নীতি ও অনিয়মের চেপে গেছে বাংলাদেশ। মন্ত্রী তো দূরের কথা আমার বন্ধুর বাবা মন্ত্রী রয়েছেন বর্তমানে সে যখন দেখা করে তার সাথে না হলেও 4-5 জন গান মান থাকে, অবাক বাংলাদেশ ?অবাক আমি?
কাল অবশ্য পছন্দ করিনা, তারপরও দেখা যাক কতদূর যায়?
নতুন নতুন অনেক অভিজ্ঞতা হয়, আমার এই অভিজ্ঞতা গুলো লিখে বই বের করব প্লিজ বই বইয়ের করতে বলবেন না অনেক কষ্ট হয় লিখতে।
#kaziasmaazmery
#Botswana
#travelled121countries
#bangladeshipassport
বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে বিশ্ব ভ্রমন করছেন কাজী আসমা আজমেরী। ১২১ তম দেশে ঘোরার সময় তাঁর এই বিশেষ লেখা