পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতা ৭০ বছর বয়সী শেহবাজ শরিফ দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। ১১ এপ্রিল পাকিস্তানের সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে সংসদ সদস্যদের ভোটে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ভোটের আগে সংসদ অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) আইনপ্রণেতারা। এর আগে তারা গণপদত্যাগের ঘোষণা দেন।
দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন পিএমএল-এনের প্রেসিডেন্ট শেহবাজ শরিফ। পিটিআইয়ের সদস্যরা ভোট বর্জন করার পর জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে ১৭৪ জন আইনপ্রণেতা তার পক্ষে ভোট দেন। সূত্র : ডন, জিও নিউজ
এর আগে, পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতারা ওয়াক আউট করে সংসদ ভবন থেকে বেরিয়ে যান। ওই সময় পিটিআই-সমর্থিত প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী শাহ মাহমুদ কুরেশি ঘোষণা দেন, তার দলের আইনপ্রণেতারা জাতীয় পরিষদ থেকে গণপদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সংসদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি বিবেকের তাড়নায় ভোট আয়োজন করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেওয়ার পর পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের সংসদ সদস্য আয়াজ সাদিকের সভাপতিত্বে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমরান বিরোধীদের ১৭৪ ভোট পেয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন শেহবাজ শরিফ। ফলাফল ঘোষণার সময় সাদিক অতীতের স্মৃৃতিচারণ করে বলেন, তিনি এমন এক অধিবেশনের সভাপতিত্বও করেছিলেন যেখানে পিএমএল-এন নেতা এবং শেহবাজের বড় ভাই নওয়াজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি বলেন, আজ আমি শেহবাজ শরিফের নির্বাচনের অধিবেশনে সভাপতিত্ব করার সম্মান পেয়েছি।
মিয়া মোহাম্মদ শেহবাজ শরিফ ১৭৪ ভোট পেয়েছেন বলে ঘোষণা দেন আয়াজ সাদিক। তিনি বলেন, মিয়া মোহাম্মদ শেহবাজ শরিফ ইসলামি প্রজাতন্ত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন।
ফল ঘোষণা করে আয়াজ সাদিক যখন পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেহবাজ শরিফের নাম ঘোষণা করেন, তখন সংসদ সদস্যরা নতুন এই প্রধানমন্ত্রী ও তার ভাই নওয়াজ শরিফের নাম উল্লেখ করে স্লোগান দেন। পরে শেহবাজ শরিফকে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার অনুরোধ জানান আয়াজ সাদিক।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সংসদে দেওয়া প্রথম ভাষণে শেহবাজ শরিফ ‘পাকিস্তানকে বাঁচানোর’ জন্য আল্লাহকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, পাকিস্তানের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব সফল হয়েছে। এর মাধ্যমে মন্দের বিরুদ্ধে মঙ্গল জয়লাভ করেছে।
এর আগে, ৯ এপ্রিল দিনভর নানা নাটকীয়তা এবং মধ্যরাতে সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের পদত্যাগের পর অনাস্থা ভোটে হেরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান ইমরান খান। দেশটির ৩৪২ সদস্যের সংসদের ১৭৪ জনই ইমরান খানের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি।