বর্তমান যুগে ত্বকের চিকিৎসা শুধু রোগ নির্ণয় ও নিরাময়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই; এটি সৌন্দর্য, আত্মবিশ্বাস এবং ব্যক্তিত্ব গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে উঠেছে। এই ক্ষেত্রটিতে একাধারে চিকিৎসক, গবেষক এবং সৌন্দর্য সচেতন পথপ্রদর্শক হিসেবে যিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি লাভ করেছেন, তিনি হলেন ডা. সিনথিয়া আলম।
শিক্ষাজীবন ও পেশাগত পথচলা
ডা. সিনথিয়া আলম তাঁর চিকিৎসাশাস্ত্রের পড়াশোনা সম্পন্ন করেন ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে। এরপর তিনি কম্বাইন্ড মিলিটারি হসপিটাল (CMH), ঢাকা থেকে ডিডিভি (ডার্মাটোলজি ও ভেনেরিওলজি) বিষয়ে দুই বছরের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন, যেখানে তিনি ত্বকের বিভিন্ন জটিল ও সাধারণ রোগের সফল চিকিৎসার মাধ্যমে হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
তিনি American Academy of Aesthetic Medicine (AAAM), USA থেকে অ্যাস্থেটিক মেডিসিনে ডিপ্লোমা গ্রহণ করেন। এই কোর্সে তিনি বোটক্স, ফিলার, লেজার থেরাপি, স্কিন রিজুভেনেশনসহ আধুনিক ত্বকচর্চার বিভিন্ন পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
এরপর তুরস্ক, দুবাই এবং সিঙ্গাপুরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফেলোশিপ এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে Aesthetic Dermatology এবং Skin Microsurgery-তে তাঁর দক্ষতা আরও বিস্তৃত হয়।
ক্লিনিক্যাল ও অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজির একত্রীকরণ
ডা. সিনথিয়া আলম ত্বক রোগ ও যৌনরোগ চিকিৎসায় যেমন দক্ষ, তেমনি আধুনিক সৌন্দর্যচর্চা ও বার্ধক্য প্রতিরোধে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। এ্যাকনি, একজিমা, সোরিয়াসিস, রোসেসিয়া, স্নেহরোগ, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, লেপ্টোপ্যাটি, স্ক্যাবিস প্রভৃতি রোগের ক্ষেত্রে তাঁর ক্লিনিক্যাল অ্যাপ্রোচ সুনির্দিষ্ট ও প্রমাণভিত্তিক।
অন্যদিকে, বোটক্স, ফিলার, থ্রেড লিফট, কিউ-সুইচ লেজার, কার্বন লেজার, পিআরপি (Platelet Rich Plasma), CO₂ ফ্র্যাকশনাল লেজার, মেলাসমা টোনিং, হেয়ার পিআরপি, কেমিক্যাল পিল, ট্যাটু রিমুভালসহ বিভিন্ন অ্যাস্থেটিক চিকিৎসায় তিনি বিশেষ পারদর্শী।
ডা. সিনথিয়া আলমের চিকিৎসাপদ্ধতির বিশেষত্ব হলো- প্রতিটি রোগীকে স্বতন্ত্রভাবে মূল্যায়ন করা এবং তার চাহিদা ও ত্বকের অবস্থা অনুযায়ী কাস্টমাইজড ট্রিটমেন্ট প্ল্যান প্রদান করা।
রোগীর আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধারে অঙ্গীকার
ত্বকের সমস্যা অনেক সময় শুধু বাহ্যিক নয়; এটি আত্মবিশ্বাস, মানসিক স্বাস্থ্য এবং সামাজিক জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। ডা. সিনথিয়া আলম এই বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্ধি করেন। তাই তিনি কেবল চিকিৎসা দেন না, বরং তাঁর রোগীদের সঙ্গে নিকটস্থ সম্পর্ক গড়ে তোলেন, তাদের উদ্বেগ বুঝে চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক সহায়তা প্রদান করেন।
গবেষণা ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অবদান
ডা. সিনথিয়া আলম শুধু একজন ক্লিনিশিয়ান নন, তিনি একজন গবেষকও। তিনি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গবেষণা উপস্থাপন করেছেন এবং পেশাগত উন্নয়নের লক্ষ্যে নিয়মিত বিভিন্ন দেশে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। তিনি একাধিক আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সংগঠনের সদস্য এবং ত্বকচিকিৎসা বিষয়ে গ্লোবাল কমিউনিটির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন।
একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ত্বকচিকিৎসা সেবার লক্ষ্যে
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় ত্বকচিকিৎসার মান উন্নয়নে ডা. সিনথিয়া আলম নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। তাঁর চেম্বারে প্রতিনিয়ত শত শত রোগী সেবা গ্রহণ করেন, যাদের মধ্যে রয়েছে সেলিব্রেটি, কর্পোরেট এক্সিকিউটিভ, গৃহিণী এবং তরুণ-তরুণীসহ সকল শ্রেণির মানুষ।
ডা. সিনথিয়া আলম বিশ্বাস করেন, ‘ত্বক যত সুস্থ, আত্মবিশ্বাস তত দৃঢ়।’ এ কারণেই তিনি রোগ নিরাময় এবং সৌন্দর্য চর্চাকে একই ছাতার নিচে এনে এক অনন্য চিকিৎসা অভিজ্ঞতা তৈরি করেছেন।
উপসংহার
ডা. সিনথিয়া আলম শুধু দক্ষ চিকিৎসক নন; তিনি একজন প্যাশনেট, দূরদর্শী এবং উদ্ভাবনী চেতনাসম্পন্ন মানুষ, যিনি ত্বকচিকিৎসা এবং সৌন্দর্যচর্চার জগতে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা দক্ষতা এবং হৃদয়স্পর্শী রোগীসেবা তাঁর পরিচয়কে করে তুলেছে অনন্য এবং অনুকরণীয়। ভবিষ্যতের ত্বকচিকিৎসা ও অ্যাস্থেটিক মেডিসিনের পথে তিনি এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা।
প্রতিবেদন : ইফতি আহমেদ