• শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:১৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবর
Irwin casino зеркало – Рабочие зеркало на сегодня Ирвин казино Играть слоты гараж бесплатно Ирвин Казино Основные понятия политики конфиденциальности в казино Аркада, требования к клиентам и условия идентификации. Играть бесплатно в Misery Mining на Аркада Казино Онлайн казино Аркада. Зеркало казино Arkada. Личный кабинет, регистрация, игровые автоматы Arkada casino зеркало – Рабочие зеркало на сегодня Аркада казино Банда казино рабочее зеркало Банда Казино – как начать играть? Banda casino официальный сайт: бонусы, игровые автоматы в казино Банда Как Вывести Деньги Драгон Мани? Казино Драгон Мани Зеркало Банда Казино – официальный сайт Банда казино онлайн Общий обзор Банда Казино Отзывы Банда Казино – Мнения и Отклики от Реальных Игроков Banda Casino Обзор популярных игр в Banda Casino: Зеркало Банда Казино | Halostar Marketing Kometa casino официальный сайт: бонусы, игровые автоматы в казино Комета Казино Комета официальный сайт онлайн. Зеркало казино Kometa. Личный кабинет, вход, регистрация Как получить бонусы в Комета Казино? Онлайн Казино Банда. Зеркало Казино Banda. Личный Кабинет, Регистрация, Игровые Автоматы Банда Казино Мобильная Версия Официальный Сайт Banda Casino Банда Казино Мобильная Версия Официальный Сайт Banda Casino Banda Casino Зеркало – Рабочие Зеркало На Сегодня Банда Казино Онлайн Казино Банда. Зеркало Казино Banda. Личный Кабинет, Регистрация, Игровые Автоматы Банда Казино – Вход На Сайт, Личный Кабинет, Бонусы За Регистрацию, Лучшие Слоты На Деньги И Бесплатно В Демо-Режиме Banda Casino Зеркало – Рабочие Зеркало На Сегодня Банда Казино Банда Казино Мобильная Версия Официальный Сайт Banda Casino Играй В Уникальном Стиле: Комета Казино Ждет Тебя! Комета Казино Мобильная Версия Официальный Сайт Kometa Casino Онлайн Казино Комета. Зеркало Казино Kometa. Личный Кабинет, Регистрация, Игровые Автоматы Kometa Casino Зеркало ᐈ Вход На Официальный Сайт Комета Казино Игровые автоматы бесплатно лягушка Комета Казино Slottica Zaloguj Się Best Online Casino Hungary Los excelentes aplicaciones de tragaperras por Casino 1xslot recursos positivo sobre 2024 Slottica Casino Avis Best Online Slots Casino Hierbei ganz Microgaming Spielautomaten 150 Chancen Ultra Hold And Spin für nüsse online zum besten geben! Steam Tower Slot Review 2024 Incl No Deposit Gratification 10 Greatest Online Casinos Throughout Canada For Actual Money In 2024 How Much Do On Line Casino Hosts Make? Earnings And Bonuses How To Open A Casino: Some Sort Of Detailed Six-steps Guide 10 Greatest Online Casinos Throughout Canada For Actual Money In 2024 How Much Do On Line Casino Hosts Make? Earnings And Bonuses

প্রস্তাবিত বাজেট ২০২২-২৩
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই বড় চ্যালেঞ্জ : অর্থমন্ত্রী

রিপোর্টারের নাম : / ৮৫ ভিউ
আপডেট সময়: শনিবার, ১৮ জুন, ২০২২

অর্থকণ্ঠ প্রতিবেদক
প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
‘কোভিড অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ শিরোনামে গত ৯ জুন বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। এ সময় জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।
বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বাড়ার কারণে দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়টি পণ্যের (জ্বালানি তেল, এলএনজি, গম, রাসায়নিক সার, পাম অয়েল, সয়াবিন তেল, কয়লা, ভুুট্টা ও চাল) একই পরিমাণ আমদানি করতে বাংলাদেশকে ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে সম্ভাব্য অতিরিক্ত ব্যয় হিসেবে ৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ইউএস ডলার পরিশোধ করতে হবে। এসব পণ্যের বাইরেও আন্তর্জাতিক বাজারে শিল্পের কাঁচামাল ও অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের দাম এবং আন্তর্জাতিক পরিবহন খরচ বেড়েছে। এতে করে অভ্যন্তরীণ বাজারে আমদানিতে মুদ্রাস্ফীতির চাপ অনুভূত হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশে বর্তমানে বিরাজমান চাহিদার প্রবৃদ্ধি কমিয়ে সরবরাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান বাড়ানোসহ সামষ্টিক অর্থনীতির অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে চায়। কোভিড-১৯ অতিমারিজনিত অর্থনৈতিক শ্লথগতি থেকে উত্তরণের উদ্দেশ্যে শিল্প উৎপাদন এবং রপ্তানি খাতের পুনরুদ্ধারের জন্য সরকার যে কাউন্টার সাইক্লিক্যাল ব্যবস্থা নিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- রপ্তানিমুখী শিল্পের শ্র্রমিকদের বেতন পরিশোধের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল, ক্ষতিগ্রস্ত বৃহৎ শিল্প ও সেবা খাতের উদ্যোগের জন্য ৭৩ হাজার কোটি টাকা এবং সিএমএসএমই খাতের জন্য ৪০ হাজার কোটি টাকার চলতি মূলধন ঋণের তহবিল, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইএফডি) ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার থেকে ৬ বিলিয়ন ডলারে বৃদ্ধি এবং ২ শতাংশের বেশি সুদের হারে ভর্তুকি প্রদান এবং ৫ হাজার কোটি টাকার একটি প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট পুনঃঅর্থায়ন প্রকল্প।
তিনি আরো বলেন, সরকার রপ্তানিমুখী শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধি, গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ, রপ্তানি পণ্যের জন্য নতুন বাজার অনুসন্ধান, পরিবহন ও ইউটিলিটি সুবিধার উন্নয়ন এবং দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক অগ্রাধিকার এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ অ্যান্ড এফটিএ) ইত্যাদি স্বাক্ষরের মাধ্যমে রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। উপরন্তু, সরকার রপ্তানি বাড়াতে বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছে। পাশাপাশি, সরকার রপ্তানি বাড়াতে রপ্তানি ভর্তুকি/প্রণোদনা অব্যাহত রেখেছে।
৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন
জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গত ৯ জুন জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। বাজেট অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এটি স্বাধীন বাংলাদেশের ৫১তম বাজেট। বর্তমান সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের চতুর্থ বাজেট। এটি আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১৪তম বাজেট। এবং অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের চতুর্থ বাজেট।
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে প্রাধিকার পাবে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। এবারের বাজেটে সঙ্গত কারণেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কৃষি খাত, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ, কর্মসংস্থান ও শিক্ষা খাতসহ বেশ কিছু খাতকে।
বাজেটের আকার চূড়ান্ত করা হয়েছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে নতুন বাজেটের আকার বাড়ছে ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। কিন্তু ব্যয়ের বিপরীতে অর্থের সংস্থান কম। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিল ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। বাজেটের ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছর ছিল ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা।
মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। যা গত অর্থবছর ছিল ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা।
বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ।


সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ল শিক্ষায়
২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ বেড়েছে।
দুই মন্ত্রণালয়ের জন্য চলতি অর্থবছরের তুলনায় আসন্ন অর্থবছরে মোট ৯ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ দুই মন্ত্রণালয়ের জন্য আসন্ন অর্থবছরে মোট ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা চলতি বছরের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল ৭১ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা। গত ৯ জুন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল শিক্ষাখাতে বরাদ্দের এ তথ্য উল্লেখ করেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য এবার ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা চলতি অর্থবছরের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল ২৬ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা এ বছরের জন্য করা হয়েছিল ৩৬ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ করা হয়েছিল ৯ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা।
শিক্ষা বাজেট প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, শিক্ষায় বিনিয়োগ ডিজিপির ছয়ভাগে যেতে হবে। আমরা তিন ভাগে আছি। ২০০৬ সালে আমাদের সারা দেশের যা বাজেট ছিল; এখন শিক্ষা বাজেটই তার চেয়ে অনেক বেশি।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষায় আমরা অনেক বিনিয়োগ করছি আরও অনেক বিনিয়োগ করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, বড় বড় সব মেগা প্রকল্প হচ্ছে, যেগুলো যেমন আমাদের যোগাযোগের জন্য দেশের এগিয়ে যাওয়ার জন্য দরকার। তেমনি পরবর্তীতে সব চেয়ে বেশি প্রয়োজন শিক্ষা। সেটিই হবে বড় মেগা প্রকল্প।
শিক্ষায় বিনিয়োগ ডিজিপির ছয় ভাগে যেতে হবে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, মেগা প্রকল্পগুলো শেষ হলে শিক্ষাই হবে সবচেয়ে বড় মেগা প্রকল্প।
কমতে পারে স্বর্ণালঙ্কারের দাম
জুয়েলারি শিল্পের ব্যাপক বিকাশ ও সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে বাজেটে স্বর্ণ আমদানিতে অগ্রিম কর বিলোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে আগের তুলনায় দেশের বাজারে স্বর্ণালঙ্কারের দাম কমতে পারে। এবারের বাজেটে জনস্বার্থে কিংবা দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় শুল্ক ও ভ্যাট কমানো হয়েছে কিছু পণ্যে।
অর্থমন্ত্রী প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের সময় এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, স্বর্ণখাতকে নিয়মতান্ত্রিক কাঠামোর অধীনে পরিচালনার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর ‘স্বর্ণ আমদানি নীতিমালা ২০১৮’ প্রণয়ন করা হয়েছিল। এ নীতিমালা প্রণয়নের পর সরকারি নিয়মনীতি অনুসরণ করে স্বর্ণ আমদানি করার লক্ষ্যে বেসরকারি পর্যায়ে বেশ কিছু উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে এবং উৎসাহ দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশে বৈধপথে স্বর্ণ আমদানি উৎসাহিত করা এবং স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধ করার লক্ষ্যে স্বর্ণ আমদানিতে বিদ্যমান অগ্রিম কর বিলোপের প্রস্তাব করছি। এতে জুয়েলারি শিল্পের ব্যাপক বিকাশ ঘটবে এবং সরকারের কর রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছি।
নতুন এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশে নির্ধারণ করা হয়েছে।
আয়ের লক্ষ্যমাত্রা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি। কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। যা আগের বছরের তুলনায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা এবং কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা।
বাড়বে গাড়ির দাম
প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন, সংযোজিত এবং হাইব্রিড সব ধরনের গাড়ির সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে গাড়ির দাম বাড়বে। এবারের প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী ২০০১ সিসি থেকে ৩০০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ির সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ২৫০ শতাংশ করা হয়েছে, আগে যা ছিল ২০০ শতাংশ। ৩০০১ সিসি থেকে ৪০০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ির সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ৫০০ শতাংশ করা হয়েছে, যা আগে ছিল ৩৫০ শতাংশ। তবে ৪০০০ সিসির ঊর্ধ্বের গাড়ির সম্পূরক শুল্ক আগের ৫০০ শতাংশই রাখা হয়েছে।
এছাড়া দেশে এনে যেসব গাড়ি সংযোজন করা হয় সেসব গাড়ির দামও বাড়বে। সংযোজিত গাড়ির মধ্যে ২০০১ সিসি থেকে ৩০০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ির সম্পূরক শুল্ক ১০০ থেকে বাড়িয়ে ১৫০ শতাংশ করা হয়েছে। ৩০০১ সিসি থেকে ৪০০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ির সম্পূরক শুল্ক ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ৩৫০ শতাংশ করা হয়েছে।
নতুন ৪০০০ সিসির ঊর্ধ্বের গাড়িতে না বাড়ালেও সংযোজিত গাড়ির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে ১৫০ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক আগের ৩৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ শতাংশ হয়েছে।
সম্পূরক শুল্ক বেড়েছে হাইব্রিড গাড়িরও। এর মধ্যে ২০০১ সিসি থেকে ২৫০০ সিসি পর্যন্ত হাইব্রিড গাড়ির শুল্ক ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৬০ শতাংশ করা হয়েছে। ২৫০১ সিসি থেকে ৩০০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ির সম্পূরক শুল্ক ৬০ থেকে বেড়ে হয়েছে ১০০ শতাংশ। ৩০০১ সিসি থেকে ৪০০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ির সম্পূরক শুল্ক ১০০ থেকে ১৫০ শতাংশ হয়েছে। ৪০০০ সিসির ঊর্ধ্বের হাইব্রিড গাড়ির সম্পূরক শুল্ক ৩০০ থেকে ৩৫০ শতাংশ হয়েছে।
কর দিয়ে পাচার করা অর্থ বৈধ করার প্রস্তাব
২০২২-২৩ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশ থেকে বিভিন্ন উপায়ে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ কর দিয়ে বৈধ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি জানান, কর দিয়ে এসব অর্থ বৈধ হয়ে গেলে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবে না কর্তৃপক্ষ।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দার পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় আগামী অর্থবছরে আমাদের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হতে পারে। তাই আর্থিক নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অধিক বিচক্ষণতা ও দূরদর্শী পন্থা অবলম্বন করতে হবে। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সরকারি ব্যয় নির্বাহের জন্য একদিকে আমাদের অধিক পরিমাণে রাজস্ব যোগান দিতে হবে, অন্যদিকে বেসরকারি খাতেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনতে হবে।
এ অবস্থায় বিদেশে অর্জিত অর্থ ও সম্পদ অর্থনীতির মূল স্রোতে আনার মাধ্যমে বিনিয়োগ ও আর্থিক প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়কর অধ্যাদেশে নতুন বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী।
নতুন বিধানের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বিধান অনুযায়ী বিদেশে অবস্থিত যে কোনো সম্পদের ওপর কর পরিশোধ করা হলে আয়কর কর্তৃপক্ষসহ যে কোনো কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করবে না। বিদেশে অর্জিত স্থাাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে আনা না হলে এর ওপর ১৫ শতাংশ, বিদেশে থাকা অস্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে আনা না হলে ১০ শতাংশ ও বাংলাদেশে পাঠানো (রেমিটকৃত) নগদ অর্থের ওপর ৭ শতাংশ হারে করারোপের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী। এ সুবিধা ২০২২ সালের ১ জুলাই হতে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
অপরিবর্তিত থাকছে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার
প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্রের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সুদহার অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তব্যে বলেন, স্বল্প-আয়ের লক্ষ্যভিত্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য উচ্চ সুদহারের সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ব্যবস্থা রাখা হলেও অনেক উচ্চ-আয়ের বিনিয়োগকারীরা এ স্কিমগুলোর সুবিধা নিচ্ছিল বেশি। সে কারণে আমরা এর আগে বিক্রয় ব্যবস্থাপনা অটোমেশন করেছিলাম। যার ফলে নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ক্ষমতা সীমিত হয়েছে। এ ছাড়া সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও টিআইএন নম্বর দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতায় চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে প্রাপ্ত মুনাফার ওপর নির্ভরশীল স্বল্প-আয়ের মানুষের স্বার্থ সমুন্নত রেখে ১৫ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সীমাভেদে ১ থেকে ২ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফার হার কমানো হয়। এতে করে সঞ্চয়পত্র বাবদ সরকারের সুদ ব্যয় কমলেও ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের ক্ষেত্রে মুনাফার হার একই থাকবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
গত ২১ সেপ্টেম্বর সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে। সঞ্চয়পত্রে ১৫ লাখ টাকার ওপরে বিনিয়োগের মুনাফার হার দুই শতাংশ পর্যন্ত কমানো হয়েছে। তবে ১৫ লাখ টাকার নিচে মুনাফার হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
ব্যাংকে ৫ কোটি টাকার বেশি থাকলে বাড়তি শুল্ক
২০২২-২৩ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে ৫ কোটি টাকার বেশি ব্যাংকে জমা হলে বেশি কর আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ফলে বছরের যেকোনো সময় আপনার ব্যাংক হিসাবে ৫ কোটি টাকা জমা হলে ৫০ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক কাটা হবে, আগে যা ছিল ৪০ হাজার টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ব্যাংক হিসাব ও বিমান টিকিটের ওপর আবগারি শুল্ক আদায় করা হয়ে থাকে। বর্তমানে ৫ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে ব্যাংক স্থিতির ওপর (বছরের যেকোনো সময়) ৪০ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক প্রযোজ্য রয়েছে। শুধু ৫ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে ব্যাংক স্থিতির ওপর (বছরের যেকোনো সময়) আবগারি শুল্ক ৪০ হাজার টাকার পরিবর্তে ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি।
আমদানি করা ল্যাপটপের দাম বাড়বে
২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানি করা ল্যাপটপের ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে ল্যাপটপ কিনতে হলে বাড়তি অর্থ গুনতে হবে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ল্যাপটপ কম্পিউটার আমদানিতে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) অব্যাহতি রয়েছে। ফলে দেশীয় কম্পিউটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে। তাই ল্যাপটপ কম্পিউটার আমদানিতে ১৫ শতাংশ মূসক আরোপ করার প্রস্তাব করছি। নতুন মূসক আরোপের কারণে ল্যাপটপ কম্পিউটার আমদানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য মোট করভার দাঁড়াবে ৩১ শতাংশ।
বাড়ছে বিড়ি-সিগারেট ও তামাকজাত পণ্যের দাম
২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সব প্রকার তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানির সারচার্জ আগের মতোই রাখা হয়েছে। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেট ও বিড়ির শুল্ক কর বাড়ানো হয়েছে। এতে বিড়ি-সিগারেটের দাম বাড়তে পারে। সিগারেট ও বিড়ির পাশাপাশি ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত পণ্যের দাম বৃদ্ধিরও প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে কম দামি ১০ শলাকার দাম ৪০ টাকা ও তদূর্ধ্ব এবং সম্পূরক শুল্ক ৫৭ শতাংশ ধার্যের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া মাঝারি মানের ১০ শলাকার দাম ৬৫ টাকা ও তদূর্ধ্ব, এবং বেশি দামি ১০ শলাকার দাম ১১১ টাকা ও তদূর্ধ্ব, খুব বেশি দামি ১০ শলাকার দাম ১৪২ টাকা ও তদূর্ধ্ব এবং এই তিনটি স্তরের সম্পূরক শুল্ক ৬৫ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
আগের বছরগুলোর মতো যন্ত্রের সাহায্য ছাড়া হাতে তৈরি ফিল্টার বিযুক্ত বিড়ির ২৫ শলাকার দাম ১৮ টাকা, ১২ শলাকার দাম ৯ টাকা ও আট শলাকার দাম ৬ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফিল্টার সংযুক্ত বিড়ির ২০ শলাকার দাম ১৯ টাকা ও ১০ শলাকার দাম ১০ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৪০ শতাংশ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে এ বাজেটে।
আগের বছরগুলোর মতো প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার দাম ৪০ টাকা ও সম্পূরক শুল্ক ৫৫ শতাংশ এবং প্রতি ১০ গ্রাম গুলের দাম ২০ টাকা ও সম্পূরক শুল্ক ৫৫ শতাংশ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে।
পদ্মা সেতুর জন্য বরাদ্দ আড়াই হাজার কোটি টাকা
আগামী ২৫ জুন বহুল কাক্সিক্ষত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হবে। প্রকল্পের অন্যান্য কাজের জন্য ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বাজেটে ১০টি খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা। এছাড়া একক প্রকল্প হিসেবে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৮৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে ।
সর্বোচ্চ বরাদ্দপ্রাপ্ত ১০ প্রকল্পগুলোর মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে ১৪ হাজার ৮৩৬ কোটি টাকা, মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্টে ৬ হাজার ১৬২ কোটি টাকা, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচিতে (পিইডিপি-৪) ৬ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগে (১ম সংশোধিত) ৬ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা, ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টে (লাইন-৬) ৪ হাজার ২৩৩ কোটি টাকা, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ (১ম পর্যায়) কাজে ৩ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা, পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণে (২য় সংশোধিত) ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে (১ম সংশোধিত) প্রায় ২ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ কাজে প্রায় ২ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা এবং ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ এবং উভয় পাশ্বের্¦ পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণ কাজে প্রায় ২ হাজার ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে।
চালু হচ্ছে সর্বজনীন ‘পেনশন’
আসছে অর্থবছরে সরকার সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃৃতায় সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তনের ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা দিচ্ছি, সরকার আগামী অর্থবছরে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে প্রবৃদ্ধি ৭.৫%
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে সাময়িক হিসাবে প্রবৃদ্ধি ধরা হয় ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ।
বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনা অতিমারির কারণে শুধু ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছিল। নতুন ভিত্তিবছর অনুসারে গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে রেকর্ড ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে তা হ্রাস পেয়ে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশে দাঁড়ায়। তবে আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় অতি দ্রুত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু করতে পেরেছিলাম। ফলে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে কোভিড-১৯-এর প্রভাব অব্যাহত থাকার পরও ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। অর্থনৈতিক চলকসমূহের গতিপ্রকৃতি দৃষ্টে প্রতিভাত হয় যে, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ অব্যাহত থাকলেও অর্থনীতির ওপর উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি।
তিনি বলেন, চলতি অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ অর্জিত হবে বলে আশা করা যায়। পাশাপাশি কোভিড-১৯ অতিমারির প্রলম্বিত প্রভাব, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
সুদ পরিশোধে ৮০ হাজার
৩৭৫ কোটি টাকা

২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর মধ্যে সরকার সুদ পরিশোধ করবে ৮০ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা। জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ কথা জানানো হয়।
প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতার ১৮৩ নম্বর পৃষ্ঠায় খাতভিত্তিক বরাদ্দের তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেটে (ক) সামাজিক অবকাঠামো খাতে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা (খ) ভৌত অবকাঠামো ২ লাখ ৮৬০ কোটি টাকা (গ) সাধারণ সেবা খাতে ১ লাখ ৫৩ হাজার ২০৮ কোটি টাকা (ঘ) সুদ পরিশোধে ৮০ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা (ঙ) পিপিপি ভর্তুকি ও দায় হিসেবে ৫৩ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা এবং (চ) নিট ঋণ দান ও অন্যান্য খাতে ৭ হাজার ৪১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এবারও ব্যক্তির করমুক্ত
আয়ের সীমা ৩ লাখ

চলতি অর্থবছরের মতো ২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যক্তির করমুক্ত আয়ের সীমা এবারও ৩ লাখ টাকা রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থবছরের জন্য খসড়া বাজেট ঘোষণায় অর্থমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বার্ষিক আয় তিন লাখ টাকা হলে কর দিতে হবে না। চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তির করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা। এরপর ১ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর কর ধরা হয়েছে ৫ শতাংশ। এর পরের ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর কর দিতে হবে ১০ শতাংশ। পরে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর কর ১৫ শতাংশ। পরবর্তী ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর কর ২০ শতাংশ। এর বেশি আয়ের ক্ষেত্রে কর ২৫ শতাংশ।
সর্বশেষ ২০২০ সালের বাজেট ঘোষণার সময় করমুক্ত আয়ের সীমা আড়াই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা করা হয়েছিল।
দাম বাড়ছে করোনা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখা পণ্যের
প্রস্তাবিত বাজেটে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখা পণ্যসামগ্রীর উৎপাদন ও প্রস্তুত করার কাঁচামাল আমদানির ওপর বিদ্যমান শুল্ক ও কর মওকুফের সুবিধা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ প্রস্তাব করেন।
করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখা এসব পণ্য সামগ্রীর তালিকায় রয়েছে- টেস্টিং কিট, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) এবং করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে আরটি-পিসিআর কিট।
এ প্রস্তাব অনুমোদন হলে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখা এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
বাজেট বক্তৃৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় বিশেষ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে টেস্টিং কিট, বিশেষ ধরনের মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক ও পিপিই উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল এবং করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে আরটি-পিসিআর কিট প্রস্তুতকরণে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানির ওপর প্রযোজ্য সমুদয় শুল্ক-কর মওকুফ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী দিক-নির্দেশনায় দেশে এখন করোনা পরিস্থিতির সমূহ উন্নতি ঘটেছে দাবি করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এসব পণ্যের ওপর প্রদত্ত বিদ্যমান রেয়াতি সুবিধা আগামী ৩০ জুনের পর রহিত করা হবে।
তবে, স্বাস্থ্য খাতে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান রেয়াতি সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।৩


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর