• রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:২২ পূর্বাহ্ন

পদ্মা সেতু বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি : প্রধানমন্ত্রী

অর্থকণ্ঠ প্রতিবেদক / ৯০ Time View
Update : বুধবার, ৬ জুলাই, ২০২২

অর্থকণ্ঠ প্রতিবেদক

স্বপ্ন, সক্ষমতা আর বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হলো গত ২৫ জুন শনিবার। প্রমত্তা পদ্মায় বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস জেগেছে। দক্ষতা, সৃজনশীলতা এবং চ্যালেঞ্জ জেগেছে। পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ ও জনগণকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস এনে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওইদিন বীর বাঙালির অহংকার পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দুপুর ১২টায় মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে সেতুর উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু শুধু একটি সেতুই নয়, এটা আমাদের সক্ষমতা, আমাদের আবেগ। আমাদের সক্ষমতা-মর্যাদার প্রতীক। এটা বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। পদ্মা সেতুর জন্য আমি গর্ববোধ করি। ২৫ জুন সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্যের শুরুতে এ কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রী

পদ্মা সেতু নির্মাণে অমিত সাহস নিয়ে অদম্য নেতৃত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন, নজর কেড়েছেন বিশ্ববাসীর


শেখ হাসিনা বলেন, ইতিহাসের এক বিশেষ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আমরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাংলার মানুষের গর্বের ‘পদ্মা সেতু’র শুভ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এ সেতু নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা-কর্মচারী, দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ পরামর্শক, ঠিকাদার, প্রকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ, শ্র্রমিক, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। ধন্যবাদ জানাই পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের অধিবাসীদের যাদের জমিজমা ও বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের এই ত্যাগ ও সহযোগিতা জাতি চিরদিন স্মরণ রাখবে।
তিনি বলেন, কোটি কোটি দেশবাসীর সঙ্গে আমিও আজ আনন্দিত, গর্বিত এবং উদ্বেলিত। অনেক বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে, ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে প্রমত্তা পদ্মার বুকে আজ বহু কাক্সিক্ষত সেতু দাঁড়িয়ে গেছে। এ সেতু শুধু ইট-সিমেন্ট-স্টিল-লোহার কংক্রিটের একটি অবকাঠামো নয়- এ সেতু আমাদের অহংকার, আমাদের গর্ব, আমাদের সক্ষমতা ও মর্যাদার প্রতীক। এ সেতু বাংলাদেশের জনগণের। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের আবেগ, আমাদের সৃজনশীলতা, আমাদের সাহসিকতা, সহনশীলতা আর জেদ।
সরকারপ্রধান বলেন, ষড়যন্ত্রের ফলে আমাদের সেতু নির্মাণ খানিকটা বিলম্বিত হয়েছে; কিন্তু আমরা হতোদ্যম হইনি। শেষ পর্যন্ত অন্ধকার ভেদ করে আমরা আলোর মুখ দেখেছি। পদ্মার বুকে জ্বলে উঠেছে লাল, নীল, সবুজ, সোনালি আলোর ঝলকানি। ৪১টি স্প্যান যেন স্পর্ধিত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বলেছিলেন, বাঙালিকে কেউ ‘দাবায়ে রাখতে পারবা না,’ পারেনি। আমরা বিজয়ী হয়েছি। তারুণ্যের কবি, দ্রোহের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভাষায় তাই বলতে চাই : সাবাস, বাংলাদেশ, এ পৃৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়, জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার তবু মাথা নোয়াবার নয়। আমরা মাথা নোয়াইনি।


আবেগাপ্লত প্রধানমন্ত্রী
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে আয়োজিত সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় বাবা-মায়ের কথা স্মরণ করে তিনি আবেগাপ্লত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের পর রিফিউজির মতো থাকতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করায় বাংলাদেশে আসতে পেরেছি। আমি মনে করি, আমার বাবা-মায়ের আশীর্বাদের হাত সবসময় আমার মাথার ওপর আছে। আমার মতো একজন সাধারণ মানুষ এত কাজ করতে পারতাম না।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি কৃৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের মানুষের কাছে যারা আমাকে বার বার নির্বাচিত করেছেন। আমি একটা লক্ষ্য নিয়েই বাংলাদেশে এসেছিলাম। বাংলার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করাই আমার লক্ষ্য।
বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের মর্যাদা ও সক্ষমতার প্রতীক। এটা আমাদের আবেগ, বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। পদ্মা সেতুর জন্য আমি গর্ববোধ করি।
প্রধানমন্ত্রীর পাশে সৈয়দ আবুল হোসেন ও মোশাররফ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুইচ টিপে ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এসময় তাঁর পাশে ছিলেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও তৎকালীন সেতু বিভাগের সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। উদ্বোধনী মঞ্চে সৈয়দ আবুল হোসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পা ছুঁয়ে সালাম করেন।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান প্রমুখ।


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১১টা ৪৮ মিনিটে প্রথম যাত্রী হিসেবে নিজের হাতে মাওয়া প্রান্তে সেতুর টোল পরিশোধ করেন। এর পর তিনি গাড়ি বহর নিয়ে অতিথিবর্গসহ সেতু উদ্বোধনের ফলকের স্থানে যান। গাড়ি থেকে নেমে সেখানে প্রথমে মোনাজাত করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম মোনাজাত পরিচালনা করেন। এরপর দুপুর ১২টায় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। এর আগে তিনি হেলিকপ্টারে করে সেখানে আয়োজিত সুধী সমাবেশস্থলে পৌঁছান। সেখানে বক্তব্য দেন।
উদ্বোধনের আগে স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধনী খাম ও বিশেষ সিলমোহর উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি মাওয়ায় স্থাপিত টোল প্লাজায় টোল পরিশোধের পর উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন।
‘বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন দেশ, তুুমি
দিলে পদ্মা সেতু

‘তুমি অবিচল, দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, তুমি ধূমকেতু, বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন দেশ, তুমি দিলে পদ্মা সেতু’। দেশের মানুষকে স্বপ্নের পদ্মা সেতু উপহার দেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিবাদন জানিয়ে এমনই থিম সং নির্মিত হয়েছে। গানটি পরিবেশিত হয়েছে এই সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।
২৫ জুন সকাল ১০টার পর অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি নির্মিত এবং বাংলাদেশ সেতু বিভাগের সেতু কর্তৃপক্ষের পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প নিবেদিত পদ্মা সেতুর এই থিম সং পরিবেশিত হয়।
পদ্মা সেতু এলাকায় ধারণকৃত ভিডিওচিত্রের এই গানে কণ্ঠ দেন নন্দিত সব সংগীত তারকা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন- সাবিনা ইয়াসমিন, রফিকুল আলম, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, কুমার বিশ্বজিৎ, মমতাজ, বাপ্পা মজুমদার, কনা, ইমরান, কিশোর দাস ও নিশীতা বড়ুয়া।
সেতুতে নামলেন প্রধানমন্ত্রী, দেখলেন
৩১ বিমানের ফ্লাইং ডিসপ্লে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাওয়া প্রান্তে টোল পরিশোধ শেষে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন। তিনি উদ্বোধন শেষে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের উদ্দেশে যাত্রা করেন। সেতুর মাঝামাঝি গিয়ে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ান প্রধানমন্ত্রী। এসময় বিমান বাহিনীর ৩১টি বিমান ও হেলিকপ্টারের সমন্বয়ে এক মনোজ্ঞ ‘ফ্লাইং ডিসপ্লে’ উপভোগ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এসময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন।


এসময় দুটি মিগ-২৯, দুটি এফটি-৭বিজি/এফ-৭ এমবি ও দুটি এফ-৭ বিজিআইর সমন্বয়ে স্মোক পাস, তিনটি এফ-৭ বিজিআই/বিজির ফ্লাই পাস্ট প্রদর্শন, একটি সি-১৩০জে ও পাঁচটি কে-৮ ডব্লিউর সমন্বয়ে স্মোক পাস প্রদর্শন, তিনটি এল-৪১০ ও পাঁচটি গ্রোব-১২০ টিপির সমন্বয়ে ফ্লাই পাস্ট প্রদর্শন, পাঁচটি এমআই-১৭/১৭১ এর মাধ্যমে পতাকা প্রদর্শন ও একটি বেল-২১২ এর মাধ্যমে লিফলেট বিতরণ, দুটি কে-৮ ডব্লিউর মাধ্যমে শেকুল মেন্যুভার প্রদর্শন, পাঁচটি কে-৮ ডব্লিউ এর মাধ্যমে ভিক্সেন ব্রেক প্রদর্শন এবং একটি মিগ-২৯ এর মাধ্যমে লো লেভেল অ্যারোবেটিক্স প্রদর্শন করা হয়।
পাঁচ হেলিকপ্টারের একটি বহরের শুরুতেই ছিল লাল সবুজের পতাকা। যা জানান দেয় বাঙালির আত্মমর্যাদা ও সক্ষমতার।
দ্বিতীয়টিতে ছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সম্বলিত পতাকা। অসীম আকাশে পাখা মেলে জানান দিয়ে গেল দাবিয়ে রাখা অসম্ভব অদম্য বাঙালিকে।
দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে যাঁর দৃঢ়তায় স্বপ্নের এই পদ্মা সেতু, বিমানবাহিনীর এই মনোমুগ্ধকর প্রদর্শনীর তৃতীয় হেলিকপ্টারে ছিল বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত পতাকা।
চতুর্থ ও পঞ্চম হেলিকপ্টার বহন করে স্বপ্নজয় ও জাতীয় স্লোগান জয়বাংলা সম্বলিত পতাকা। যেন কোটি বাঙালিকে আরেকবার ডাক দিয়ে গেল সম্মিলিত বিজয় উল্লাসে শামিল হওয়ার।
নীল আকাশে লাল সবুজের আবীরে ফুটিয়ে তোলা হয় বাংলাদেশের পতাকার অবয়ব। এক পর্যায়ে হাজির হয় যুদ্ধ বিমান। গর্জন তুলে জানান দেয় ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে এগিয়ে যাওয়ার।
পদ্মার আকাশে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এই অ্যারোবেটিক ডিসপ্লে ও ফ্লাই পাস মুগ্ধ করে পদ্মার দুই পাড়ে অপেক্ষমাণ লাখো মানুষকে।
রেহানা, জয়, পুতুল ও ববিকে
ধন্যবাদ জানালেন প্রধানমন্ত্রী

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু নির্মাণকে কেন্দ্র করে অতীতের অনেক অপপ্রচারের কথা স্মরণ করতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি জাজিরায় এক বিশাল সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার এবং তাঁর পরিবারকে লক্ষ্য করে বিরূপ মন্তব্যের কথা তুলে ধরেন।
নিজের ছোট বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং ভাগ্নে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের বিপক্ষে থাকা একটি অংশের লজ্জাজনক আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিল তারা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তাদের মানহানি করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর তৎকালীন অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন এবং তৎকালীন যোগাযোগ সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকেও ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু হচ্ছে এ সব অপমানের জবাব।
উদ্বোধনের শুভক্ষণে যে আহ্বান জানালেন শেখ হাসিনা
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের শুভক্ষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সাধারণ জনগণসহ সবার প্রতি একটি আহ্বান জানান। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগ মুহূর্তে সুধী সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, আসুন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের এই ঐতিহাসিক দিনে যে যার অবস্থান থেকে দেশ এবং দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করার শপথ করি।
তিনি বলেন, বাঙালি বীরের জাতি। বাঙালির ইতিহাসের প্রতিটি বাঁক রঞ্জিত হয়েছে ত্যাগ-তিতীক্ষা আর রক্তধারায়। কিন্তু বাঙালি আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী দৃপ্ত কণ্ঠে উচ্চারণ করেন, ‘যতবারই হত্যা করো, জন্মাবো আবার। দারুণ সূর্য হবো, লিখবো নতুন ইতিহাস’।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম। অংশ নিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, দেশের রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিরা।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় খুশি বিশ্বব্যাংক

মার্সি মিয়াং টেম্বন

বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য নিয়োজিত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেম্বন বলেছেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে বিশ্বব্যাংক খুশি। ২৫ জুন শনিবার সকালে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠান চলার পাশাপাশি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আমরা খুশি যে সেতুটি সম্পূর্ণ হয়েছে। এই সেতুর মাধ্যমে বাংলাদেশ উপকৃত হতে যাচ্ছে বলে আমরা আনন্দিত।


টেম্বন বলেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অন্যতম বড় উন্নয়ন সহযোগী। আমরা এই সেতুর গুরুত্ব স্বীকার করি। সেতুটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ভ্রমণ সময় কমিয়ে বাংলাদেশের জনগণের জন্য অর্থনৈতিক সুবিধা বয়ে আনবে।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, সেতুটি বাজার সম্প্রসারণ ও দারিদ্র্র্য হ্রাস করে দেশের মানুষের কল্যাণ ও সমৃৃদ্ধি বাড়াতে সহায়তা করবে। বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের অংশীদার হিসেবে আমরা এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাশে আছি।
২০১২ সালে বিশ্বব্যাংক পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের জন্য তাদের ১.২ বিলিয়ন ইউএস ডলার ঋণ বাতিল করে দাবি করে যে- এতে বাংলাদেশি কর্মকর্তা, কানাডিয়ান ফার্মের নির্বাহী ও অন্যান্য ব্যক্তির দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের প্রমাণ রয়েছে। পরে কানাডার একটি আদালত এই প্রকল্পে কোনো দুর্নীতি খুঁজে পায়নি।
জাতিসংঘে পদ্মা সেতুর
উদ্বোধন উদযাপন

জাতীয় উদযাপনের অংশ হিসেবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে পদ্মা সেতু উদ্বোধন উদযাপন করেছে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন। ২৫ জুন মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতারা, প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।
স্থায়ী মিশন জানায়, পদ্মা সেতুর সাফল্য এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে একটি বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে শুরু করা হয় এ উদযাপন অনুষ্ঠান। পরে সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।


ওবায়দুল কাদের, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী

ন্দমুখর এ অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের স্বাগত জানান জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
এসময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য আজ অত্যন্ত আনন্দের দিন। বাংলাদেশ সময় ২৫ জুন সকালে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে বহুল আকাঙ্খিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেছেন। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের বিস্ময়। আমাদের জাতীয় জীবনে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের অহংকার, গৌরব ও সক্ষমতার প্রতীক; কারণ এটি নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে। এটি বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় এক অনন্য মাইলফলক। এ অর্জনের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার অগ্রযাত্রায় আমরা আরও একধাপ এগিয়ে গেলাম। আর এর সবই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের ফলে।
বক্তব্যে পদ্মা সেতুকে ঘিরে গড়ে ওঠা বিনিয়োগ, শিল্পায়ন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে রাজধানীর সংযোগ এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগসহ অর্থনৈতিক সম্ভাবনার নানা দিক তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
প্রবাসের সব বাংলাদেশি নাগরিককে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত।


যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগসহ নিউ ইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতারা পদ্মা সেতুর মতো এমন গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় স্থাপনা সফলভাবে নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। তারা আগামী নির্বাচনে আবারও আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করার মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
পদ্মা সেতুর ওপর নির্মিত ভিডিও ডকুমেন্টারিসহ প্রধানমন্ত্রীর পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ভিডিও ক্লিপস প্রদর্শন করা হয় অনুষ্ঠানে।
দূতাবাসগুলোতে পদ্মা সেতুর
উদ্বোধন উদযাপন

শুধু দেশেই নয়, পদ্মা সেতু উদ্বোধন উদযাপন করেছে বিদেশের বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো। ২৫ জুন বাংলাদেশে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে বেশিরভাগ দূতাবাসে উদ্বোধন অনুষ্ঠান করা হয়।
ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে জাতির দীর্ঘ প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উদযাপন করেছে। দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বাংলাদেশে পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের অহংকার। এটি আমাদের গৌরব ও আত্মমর্যাদার প্রতীক।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, দেশ-বিদেশে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বের পাশাপাশি দৃঢ় সংকল্প ও মনোবলের কারণে দেশের বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনাইদ কামাল আহমেদ এবং নর্থ ক্যারোলাইনা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. এবিএম নাসির।
নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের ঐতিহাসিক মুহূর্ত উদযাপন করা হয়। কনস্যুলেট বাংলাদেশ সময়ের সঙ্গে মিল রেখে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রবাসীদের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।
ইতালিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ঐতিহাসিক মুহূর্ত উদযাপন করেছে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান স্বাগত বক্তব্যে দূতাবাস আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি দূর থেকে উপস্থিত হওয়ার জন্য বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান। তিনি উল্লেখ করেন যে, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের গর্ব, আত্মনির্ভরশীলতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক। বাঙালি জাতির এ গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহাসিক দিনে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতা, বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত ও যুগোপযোগী পদক্ষেপের ফলেই সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে প্রমত্তা পদ্মার বুকে এই সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। সেতু নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার ও জনগণের একনিষ্ঠ প্রচেষ্টার ফলে এ সেতু নির্মাণের মাধ্যমে বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ হয়েছে।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের ঐতিহাসিক মুহূর্ত উদযাপন করেছে উজবেকিস্তানের বাংলাদেশ দূতাবাস। দূতাবাসের আলোচনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জাহাঙ্গীর আলম বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ হাইকমিশন মালদ্বীপ পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান সরাসরি প্রদর্শন ও উদযাপন করেছে। হাইকমিশনার রিয়ার এডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ আগত অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে কেক কেটে পদ্মা বহুমুখী সেতুর উদ্বোধন উদযাপন করেন।
ভিয়েতনামের বাংলাদেশ দূতাবাসেও পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উদযাপন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ পদক্ষেপ এবং যুগোপযোগী সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে।
কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনও পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উদযাপন করেছে।


চীন-যুক্তরাষ্ট্রসহ পাঁচ
দেশের অভিনন্দন

পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের মানুষকে অভিনন্দন জানিয়েছে চীন, যুক্তরাষ্ট্রসহ পাঁচটি দেশ। ঢাকাস্থ দূতাবাসের মাধ্যমে দেশগুলো এ অভিনন্দন জানিয়েছে।
২৪ জুন শুক্রবার ঢাকাস্থ ভারতের হাইকমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে অভিনন্দন জানায়। এই সেতু শুধু বাংলাদেশের অভ্যন্তরেই যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাবে না, এটি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাধারণ অঞ্চলগুলোকে সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে ও ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় গতি আনবে। এই সেতু আমাদের দ্বিপাক্ষিক ও উপ-আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বহুল প্রতীক্ষিত এই প্রকল্পটির সমাপ্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী সিদ্ধান্ত ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের প্রমাণ। এই সাফল্য প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে প্রমাণ করে এবং এতে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, যা আমরা অবিচলভাবে সমর্থন করে এসেছি যখন বাংলাদেশ একাই এই প্রকল্প এগিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা এক চিঠির মাধ্যমে অভিনন্দন জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ। চিঠিতে শাহবাজ শরীফ বলেন, আমি পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প সম্পূর্ণ হওয়ায় আপনাকে এবং বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
তিনি বলেন, ভ্রাতৃপ্রতিম বাংলাদেশের উন্নয়ন-যাত্রায় সেতুটির উদ্বোধন একটি কালের সাক্ষী হয়ে থাকবে। এটি বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই, স্থায়ী উন্নয়নের সর্বোচ্চ স্তরে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, যেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় সংকল্পের একটি প্রমাণ।


তিনি আরও বলেন, এই সুযোগে আমি আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি, সেই সঙ্গে বাংলাদেশের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের দীর্ঘস্থায়ী উন্নতি ও সমৃৃদ্ধির জন্য আমি পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আমার ব্যক্তিগত অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। অনুগ্রহ করে আমার এই অভিনন্দন সর্বোচ্চ বিবেচনায় গ্রহণ করুন।
চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, ২৫ জুন একটি মহৎ দিন। এ দিন বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে, আর এক দশকের স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে। পদ্মা সেতু আমার কাছে সাহস, সংকল্প ও সমৃদ্ধির প্রতীক। স্বপ্নের এই সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানাই।
পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দক্ষতার সঙ্গে জনগণ ও পণ্য পরিবহনের সংযোগ ঘটাতে পরিবহনব্যবস্থার টেকসই অবকাঠামো নির্মাণ সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জরুরি বিষয়। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি বাণিজ্যিক অগ্রগতিসহ মানুষের জীবনমানের গুণগত উন্নয়ন ঘটাবে। এই সেতু দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের নেতৃত্বে আঞ্চলিক যোগাযোগ স্থাপনে আরেকটি নজির হিসেবে বিবেচিত হবে।
এছাড়া পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
বিশ্ব গণমাধ্যমে পদ্মা সেতু

দেশের দীর্ঘতম ও বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বুক চিড়ে বয়ে চলা পদ্মার বুকে ২৫ জুন শনিবার স্বপ্নের এই সেতুর উদ্বোধন করেন তিনি।
সেতুর উদ্বোধন ঘিরে সারা দেশের মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। সেই উৎসবের খবর বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমেও ফলাও করে প্রকাশ ও প্রচার করা হয়েছে।
মার্কিন বার্তা সংস্থা এসোসিয়েট প্রেস (এপি) ‘বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতুর উদ্বোধন’ শিরোনামে এক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার দেশের দীর্ঘতম সেতুর উদ্বোধন করেছেন। রাজনৈতিক সংঘাত আর দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যে এই সেতু তৈরি করতে সময় লেগেছে আট বছর।
এপি আরও লিখেছে, জনসাধারণের জন্য রোববার খুলে দেওয়া হবে সেতুটি। এর মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলার দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার কমে যাবে।
ঢাকা থেকে ৩১ কিলোমিটার দূরে মাওয়া প্রান্তে সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেছেন, এই সেতু বাংলাদেশের জনগণের। এটি আমাদের আবেগ, সৃজনশীলতা, সাহস, সহনশীলতা এবং অধ্যবসায়ের ফল।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেছে, দুর্নীতির অভিযোগ, মানব বলির গুজব ছড়িয়ে পিটুনির মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডসহ নানা ঘটন-অঘটনের পর শনিবার রাজধানী ঢাকার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু খুলে দিয়েছে বাংলাদেশ।


আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির দীর্ঘতম পদ্মা বহুমুখী সেতুর উদ্বোধন করা হয়েছে। নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার প্রায় আট বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি মূল অবকাঠামো নির্মাণের লক্ষ্য পূরণ হয়েছে।
এএফপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের এই প্রকল্পে কর্মকর্তাদের ঘুষের অভিযোগে কানাডিয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম এসএনসি-লাভালিনকে এক দশকের জন্য বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পে দরপত্রে অংশ নেওয়া থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কানাডার প্রসিকিউটররা এই কোম্পানির নির্বাহীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের প্রমাণ পাননি।
পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা বলি দিতে হবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন গুজব ছড়িয়ে ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ৮ জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ধরনের নানা ঘটনার পর বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জনগণের দীর্ঘদিনের এক স্বপ্নের দুয়ার খুলেছে শনিবার।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে ‘বাংলাদেশের দীর্ঘতম রেল-সড়ক সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।


এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার দেশের দীর্ঘতম এবং সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেছেন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের সড়ক-রেল সেতুটি রাজধানী এবং অন্যান্য অঞ্চলের সাথে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সংযোগকারী পদ্মা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে।
বহুমুখী সড়ক-রেল সেতুটি বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। এনডিটিভি লিখেছে, বাংলাদেশের এই সেতুর উদ্বোধন অনেক তাৎপর্য বহন করে। অনেক অর্থনৈতিক বিশ্লেষক বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেও তা উড়িয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।
সেতুর উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কারও বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। তবে আমি মনে করি যারা পদ্মা সেতু নির্মাণ পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন এবং এটাকে ‘পাইপ ড্রিম’ বলেছিলেন, তাদের আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে। আমি আশা করি, এই সেতু তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।
সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া ট্যুডে বলছে, শনিবার পদ্মা নদীর ওপর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার রেল-সড়ক সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিশাল পরিবর্তনের গল্পের শুরু হয়েছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর এটি বাংলাদেশের এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প। এছাড়াও ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস, আনন্দবাজার, দ্য হিন্দু, মধ্যপ্রাচ্যের গালফ নিউজ, খালিজ টাইমস, আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাংলাদেশের বৃহত্তম পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের খবর প্রকাশ করা হয়েছে।
পদ্মা সেতু আমাদের গর্বের
প্রতীক : মেয়র আতিকুল


ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, পদ্মা সেতু শুধু একটি অবকাঠামো নয়। এটি আমাদের গর্বের প্রতীক, আমাদের অহংকারের প্রতীক এবং আমাদের আত্মমর্যাদার শক্তি।
২৫ জুন শনিবার রাতে ঢাকা জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে হাতিরঝিলে লেজার শো, আতশবাজি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতু সততা ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। আমাদের যদিও বিশ্বাস ছিল কিন্তু অনেকে অবিশ্বাস করেছিল পদ্মা সেতু হওয়া নিয়ে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে প্রমাণ করলেন আমরা পারি, জাতির পিতার বাঙালি জাতি পারে। তিনি প্রমাণ করলেন বাঙালি কখনো মাথা নত করে না।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য ঋণদাতারা হাত গুটিয়ে নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়তা ও সাহসিকতার সুবাদেই সমস্ত সংশয় ও অনিশ্চয়তাকে পেছনে ফেলে স্বপ্নের সেতুটি বাস্তব রূপ নিয়েছে। অথচ আজ পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ও বাংলাদেশের মানুষকে অভিনন্দন জানিয়েছে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও পাকিস্তানসহ আরও অনেক দেশ। এছাড়াও অভিনন্দন জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা।
ঢাকা জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজাসহ ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কাউন্সিলররা।
সাত মিনিটেই খরস্রোতা পদ্মা
পাড়ি দিচ্ছে যানবাহন

স্বপ্ন, সক্ষমতা আর বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয়েছে ২৫ জুন শনিবার। দুপুর ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুর ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৬ জুন রোববার সকাল ৬টায় যান চলাচলের জন্য সেতু খুলে দেওয়া হয়।
পদ্মা পার হতে আগে লঞ্চ অথবা ফেরিতে যেখানে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগতো, এখন সহজেই ৬-৭ মিনিটে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সেতুর ওপর দিয়ে পার হচ্ছে যানবাহনগুলো। এতদিন শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও মাঝিকান্দি নৌরুটে লঞ্চ, স্পিডবোট আর ফেরিতে করে নদী পারাপার হলেও এখন সেতু হয়ে দক্ষিণবঙ্গ থেকে রাজধানী ঢাকা, আর ঢাকা থেকে দক্ষিণবঙ্গ যাতায়াত করা যাবে খুব সহজেই।
ঘাট সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ নৌরুটে লঞ্চ পারাপারে ৫০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা সময় নেয়। ফেরিতে যানবাহন পারাপারে সময় লাগে দেড় ঘণ্টার কিছুটা বেশি। নদীর স্রোতের ওপর নির্ভর করে সময় কম-বেশি হয়।
মাদারীপুরের বাসিন্দা হাসান বলেন, ‘আমাদের কষ্টের দিন ফুরালো। আগে ঢাকায় পৌঁছাতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা লাগতো। তার ওপর ঝড়-বৃষ্টি হলে ফেরিঘাটে ফেরি বন্ধ হয়ে যেতো। কুয়াশায়ও ফেরি চলাচল বন্ধ থাকতো। এখন দেড় দুই ঘণ্টার পথ গাড়িতে করে ৬-৭ মিনিটে পার হয়ে যেতে পারব। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় স্বস্তি।’
বরিশালের যাত্রী তানজিম অন্তরা বলেন, ‘ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। নদী পার হতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লেগে যায়। তবে জরুরি সময়ে আমাদের বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সময়মতো ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করাতে না পেরে আমার দুই নিকটাত্মীয়ের মৃত্যু হয়েছে। শিমুলিয়া ঘাটের ফল ব্যবসায়ী সফিকুল বলেন, ‘সবচেয়ে ভালো হলো মুমূর্ষু রোগীদের জন্য। তাদের সময়ের সঙ্গে জীবনের কাটাও ঘুরতে থাকে। জীবন-মরণ মুহূর্তে সময়ের দাম সবচেয়ে বেশি। এখন তারা সহজেই নদী পার হতে পারবেন। মৃৃত্যুর ঝুঁকি কমে যাবে।’
প্রথম দিনে টোল আদায়
২ কোটি ৯ লাখ টাকা

পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরুর প্রথম দিনে ৫১ হাজার ৩১৬টি যানবাহন চলাচল করেছে। এসব যানবাহন থেকে টোল আদায় করা হয়েছে ২ কোটি ৯ লাখ ৪০ হাজার ৩০০ টাকা। ২৬ জুন রোববার সকাল ছয়টা থেকে ২৭ জুন সোমবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত এই হিসাব। এই হিসাব বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বাসেক)।
গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি টোল দিয়ে সেতু পার হন। তবে সাধারণ যানবাহনের জন্য ২৬ জুন সকাল ছয়টা থেকে সেতু উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
পদ্মা সেতু নির্মাণের আগে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, এ সেতু দিয়ে দিনে প্রায় ২৪ হাজার যানবাহন চলাচল করবে। সে তুলনায় প্রথম দিন পূর্বাভাসের দ্বিগুণের বেশি যান চলেছে। তবে বাসেক সূত্র জানায়, প্রথম দিনের যানবাহনের বড় অংশই মোটরসাইকেল।
বাসেকের তথ্য অনুসারে, প্রথম দিন মাওয়া দিয়ে যানবাহন পার হয়েছে ২৬ হাজার ৫৮৯টি। এপথে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৮ লাখ ৯৫ হাজার ৯০০ টাকা। জাজিরা দিয়ে যানবাহন পার হয়েছে ২৪ হাজার ৭২৭টি। আয় হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ ৪ হাজার ৪০০ টাকা।
পদ্মা সেতু পারাপারে যাত্রীদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান সড়ক পরিবহনমন্ত্রীর
পদ্মা সেতু পারাপারে যাত্রীসাধারণকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ২৭ জুন সোমবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান বলে সরকারি এক তথ্য বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু অবকাঠামো একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় স্থাপনা এবং দেশের এক বড় সম্পদ। এর নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব রক্ষা করা সবার দায়িত্ব।
বিবৃতিতে সেতু পারাপারে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ যেসব নির্দেশনা জারি করেছে, তা যথাযথভাবে পালনের মধ্য দিয়ে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যও তিনি আহ্বান জানান।
পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ
পদ্মা সেতুতে ২৭ জুন সোমবার ভোর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেতু বিভাগ।
তথ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিবরণীতে সেতু বিভাগ জানায়, ২৭ জুন ২০২২ সোমবার ভোর ৬টা থেকে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category