• শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবর
Банда казино рабочее зеркало Банда Казино – как начать играть? Banda casino официальный сайт: бонусы, игровые автоматы в казино Банда Как Вывести Деньги Драгон Мани? Казино Драгон Мани Зеркало Банда Казино – официальный сайт Банда казино онлайн Общий обзор Банда Казино Отзывы Банда Казино – Мнения и Отклики от Реальных Игроков Banda Casino Обзор популярных игр в Banda Casino: Зеркало Банда Казино | Halostar Marketing Kometa casino официальный сайт: бонусы, игровые автоматы в казино Комета Казино Комета официальный сайт онлайн. Зеркало казино Kometa. Личный кабинет, вход, регистрация Как получить бонусы в Комета Казино? Онлайн Казино Банда. Зеркало Казино Banda. Личный Кабинет, Регистрация, Игровые Автоматы Банда Казино Мобильная Версия Официальный Сайт Banda Casino Банда Казино Мобильная Версия Официальный Сайт Banda Casino Banda Casino Зеркало – Рабочие Зеркало На Сегодня Банда Казино Онлайн Казино Банда. Зеркало Казино Banda. Личный Кабинет, Регистрация, Игровые Автоматы Банда Казино – Вход На Сайт, Личный Кабинет, Бонусы За Регистрацию, Лучшие Слоты На Деньги И Бесплатно В Демо-Режиме Banda Casino Зеркало – Рабочие Зеркало На Сегодня Банда Казино Банда Казино Мобильная Версия Официальный Сайт Banda Casino Играй В Уникальном Стиле: Комета Казино Ждет Тебя! Комета Казино Мобильная Версия Официальный Сайт Kometa Casino Онлайн Казино Комета. Зеркало Казино Kometa. Личный Кабинет, Регистрация, Игровые Автоматы Kometa Casino Зеркало ᐈ Вход На Официальный Сайт Комета Казино Игровые автоматы бесплатно лягушка Комета Казино Evento oposto, nao ha nenhuma argumento a haver complicacao Corno desarrimar estrondo amador alienado infantilidade ansia (2024) Dependable transactions in virtual clubs Karavan casino giriş: how the process works Consistent payments in virtual gambling platforms masalbet giris: how the system functions Establishing a personal cabinet and funding the account for paid gaming in 7Slots casino Tilslutte Casino inden for Danmark Bedste Danske Online Casinoer inden for 2024 Uefa Uncovers Mostbet As Winners League Sponsor” 2024 25 Uefa Countries League: All You Need To Know Uefa Nations League Mostbet Brazil Spotlight: Perspectives And Even Challenges Of The Particular Brazilian Market Noticias Igaming” Withdrawal Actions Casino Withdrawal Alternatives On the web

বাইডেন বিরিয়ানি একটি ক্রিয়েশন, যাতে রয়েছে বাংলা ও বাঙালির ঐতিহ্য
মো: খলিলুর রহমান
শেফ এবং সিইও
খলিল বিরিয়ানি হাউজ, নিউ ইয়র্ক

সাক্ষাৎকার গ্রহণ : এনামুল হক এনাম / ৩২০ ভিউ
আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০২২


সাক্ষাৎকার গ্রহণ : এনামুল হক এনাম
বাংলাদেশের এক গুণী ও কৃতী রন্ধনশিল্পী মো: খলিলুর রহমান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশকে ব্যাপকভাবে সম্মানিত হবার সুযোগ এনে দিয়েছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে সেবাকে প্রাধান্য দিয়ে ব্যবসা করার স্বীকৃতিস্বরূপ সম্প্রতি ‘প্রেসিডেন্সিয়াল লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেছেন। বাংলাদেশি আমেরিকান মো: খলিলুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্যশিল্প জগতের অন্যতম প্রতিষ্ঠান ‘খলিল বিরিয়ানি হাউস’-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং এর প্রধান ‘শেফ’। তিনি একই সাথে খলিল হালাল চায়নিজ, খলিল সুইটস অ্যান্ড বেকারি এবং আমেরিকান ফার্স্ট ফুড খলিল পিৎজা অ্যান্ড গ্রীল-এরও স্বত্বাধিকারী।
বাংলাদেশের যশোর জেলার গুণী সন্তান মো: খলিলুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করার পর আমেরিকা যান। তিনি সেখানে একটি হোটেলে কাজ শুরু করেন। এক পর্যায়ে রন্ধন শিল্পের প্রতি তাঁর দারুণ আগ্রহের সৃষ্টি হয়। তিনি রন্ধন শিল্পের ওপর Culinary Institute of America   থেকে ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি City College of New York থেকেও স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তিনি একটি ফাইভস্টার হোটেলে সহকারী শেফ এবং শেফ-এর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি উপলব্ধি করেন এ পেশায় বিশেষ দক্ষতা অর্জন করতে পারলে সুনাম এবং অর্থ দুটোই অর্জন করা সম্ভব।

এক পর্যায়ে ২০১৭ সালে তিনি ‘খলিল বিরিয়ানি হাউজ’ নামে একটি বাংলাদেশি রেস্টুরেন্ট প্রতিষ্ঠা করেন। এই খলিল বিরিয়ানি হাউজ এখন আমেরিকার খাদ্যপ্রেমিদের ‘মোস্ট ফেভারেট’ ফুড প্যালেস। তাঁর আন্তরিক ব্যবহার এবং খাদ্য মানের সুবাদে এই হাউজ এখন বাংলাদেশি ও আমেরিকান রাজনীতিবিদদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। খলিল বিরিয়ানির পাশাপাশি তিনি ‘বাইডেন বিরিয়ানি’ও চালু করেছেন যা বিদেশিদেরও দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে। প্রেসিডেন্সিয়াল লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড অর্জনকারী বাংলাদেশি আমেরিকান শেফ মো: খলিলুর রহমান সম্প্রতি অর্থকণ্ঠকে বিশেষ সাক্ষাৎকার প্রদান করেন, এখানে তা উপস্থাপন করা হলো-
অর্থকণ্ঠ : জনাব খলিল, আপনি একজন বাংলাদেশি আমেরিকান। আপনি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছ থেকে অত্যন্ত সম্মানজনক ‘প্রেসিডেন্সিয়াল লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেছেন। এই সম্মাননা প্রাপ্তির অনুভূতি জানতে চাইছি।
মো: খলিলুর রহমান : সত্যি বলতে কি এই সম্মাননা প্রাপ্তিতে আমি আনন্দিত ও অভিভূত। তবে একটি কথা বলবো যে, আমি কখনো কোনো সম্মাননা বা পদক প্রাপ্তির লোভে সমাজ সেবা ও উন্নয়নমূলক কাজের উদ্যোগ বা অংশগ্রহণ করিনি। আমার দ্বারা প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং আমি ব্যক্তি উদ্যোগে সমাজের উন্নয়নে কাজ করছি। সেবাকে প্রাধান্য দিয়ে ব্যবসা করার কারণেই প্রেসিডেন্সিয়াল লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। আমি মনে করি, এ ধরনের স্বীকৃতি আমার সেবা উদ্যোগ ও উদ্যমকে আরো বাড়িয়ে দেবে। এই পুরস্কার শুধু আমাকেই নয়, বাংলাদেশিদের মানমর্যাদাকেও বৃদ্ধি করেছে। দেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হয়েছে।
আমি বিশ্বাস করি, দেশের উন্নয়নে অবদান রাখা মানুষদের জন্য অত্যন্ত সম্মানজনক পুরস্কার এটি। আমি আমার উদ্যম ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো- যাতে অধিক সংখ্যক মানুষের কল্যাণ সম্ভব হয়। এই অর্জন আমার একার নয়, এই অর্জন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সব বাংলাদেশির। যারা স্বপ্ন নিয়ে বসে থাকেন না, স্বপ্ন বাস্তব করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যান।
অর্থকণ্ঠ : আপনি একজন সফল ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তা। এই অর্জনের পেছনে কোন বিষয়টি বেশি কাজ করেছে বলে আপনি মনে করেন?
মো: খলিলুর রহমান : দেখুন, মানুষের সাফল্যের পেছনে মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপা অবশ্যই লাগে। তবে মানুষকে অবশ্যই অধ্যবসায়ী হতে হবে। শুরুতে নির্ধারণ করতে হবে তিনি কোন কাজটি করবেন। তাকে সেই কাজের সঙ্গে মিশে যেতে হবে। সেই কাজটির সাফল্য পেতে যে কঠোর পরিশ্রম, চিন্তা ও মননশীলতা প্রয়োজন সেটি তাকে করতে হবে। তবে শুরুটা এমন হতে হবে যে, নির্দিষ্ট কাজকে ভালোবাসতে হবে গভীর মমতা দিয়ে।


আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছি। এখানে এসে ‘অডজব’ করেছি। হোটেলে মাংস কেটেছি আর তখনই দেখেছি এদেশে বাবুর্চি অর্থাৎ ‘শেফ’দের একটা মর্যাদা রয়েছে। আর্থিক এবং সামাজিক উভয় ক্ষেত্রেই তারা সম্মানিত। বিষয়টি আমাকে মুগ্ধ এবং আপ্লুত করেছে। আমি চেষ্টা করেছি কীভাবে ভালো শেফ হওয়া যায়। এ জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি, এখনো করছি। ভেবেছি আমাকে যেতে হবে অনেক দূর। আমি নিউ ইয়র্কের ক্যুলিনারি ইনস্টিটিউটে রন্ধন বিষয়ে পড়াশোনা করেছি। এই শিক্ষা অর্জন আমাকে একটি ফাইভস্টার হোটেলে কাজের সুযোগ এনে দেয়। তখন আমার মনে হয়, আমি কেন নিজ দেশের ভালো খাদ্য মানুষকে খাবার সুযোগ করে দিচ্ছি না। আমি বাংলাদেশের জনপ্রিয় ও সুস্বাদু খাবার ‘বিরিয়ানি-’কে তুলে ধরার উদ্যোগ গ্রহণ করি এবং এ জন্যে ২০১৭ সালের ২৫ জুন নিজ নামে ‘খলিল বিরিয়ানি হাউজ’ প্রতিষ্ঠা করি। আল্লাহর অপার অনুগ্রহে অল্প দিনেই এটি জনপ্রিয়তা লাভ করে।
অর্থকণ্ঠ : আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা অর্জনকারী। প্রবাসে অন্য পেশায় না যেয়ে শেফ হবার পেছনে কোন বিষয়টি আপনাকে উদ্বুদ্ধ করেছে?
মো: খলিলুর রহমান : দূর প্রবাসে এসে এত বড় মর্যাদার অধিকারী হবো এ ধরনের একটি কাজের মাধ্যমে তা আমি কখনো চিন্তা করিনি। এ জন্যে আল্লাহর কাছে কোটি কোটি শোকরিয়া। সৎ উদ্যোগ ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করলে যে পুরস্কৃত হওয়া যায় এটি তার বড় উদাহরণ।
আমি যখন রেস্টুরেন্টে রান্নার কাজ করি, শেফ-এর দায়িত্ব পালন করি, তখন আমার পরিবার এটি মেনে নিতে পারেনি। উচ্চ শিক্ষা নিয়ে আমি কেন এ কাজ করছি! কারণ আমাদের দেশে ‘বাবুর্চি’র কাজকে সে ভাবে মর্যাদা দেয়া হয় না। এমন কি আমার স্ত্রী এদেশে আসার পর স্বামীর এই পেশা দেখে খুব কান্নাকাটিও করেছে। আমি তাকে বুঝিয়েছি- এটা বাংলাদেশ না, আমেরিকা। এখানে এ কাজের সম্মান ও মূল্য অনেক।
অর্থকণ্ঠ : আমেরিকায় আপনার এই সর্বোচ্চ সম্মাননা প্রাপ্তিতে তার প্রতিক্রিয়া কি?
মো: খলিলুর রহমান : তিনিও বেশ আনন্দিত। তিনি এখন আমাকে নিয়ে বেশ গর্বিত।
অর্থকণ্ঠ : আপনি একজন বাংলাদেশি আমেরিকান হিসেবে কেন বিরিয়ানি রান্না ও পরিবেশনকেই বেশি প্রাধান্য দিলেন?
মো: খলিলুর রহমান : বাংলাদেশে ঐতিহ্যবাহী বিরিয়ানি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং উঁচুমানের খাবার। সাধারণত দেশে যে কোনো অনুষ্ঠান উপলক্ষে এর কদর লক্ষ্য করা যায়। আমি ভেবেছি একজন বাংলাদেশি হিসেবে প্রবাসে যদি বাংলাদেশের এই ঐতিহ্যবাহী খাবারটিকে উপস্থাপন করা যায় তবে একদিকে যেমন এখানকার দেশি-বিদেশিরা এই খাবার খাওয়ার সুযোগ পাবেন, তেমনই বাংলাদেশ সম্পর্কেও তাদের উঁচু ধারণার জন্ম নেবে। আমি মনে করি, আমার সেই ইচ্ছার বাস্তবায়ন ঘটেছে। আমি এ জন্যেই এই বিরিয়ানি হাউজের নাম রেখেছি ‘খলিল বিরিয়ানি’। এটি যে বাংলাদেশি একটি প্রতিষ্ঠান অনেকেই তা জানেন। আমি লক্ষ্য করেছি খাবারের পরিবেশনা হোটেল ও রেস্তোরাঁ শিল্পের একটি আর্ট। বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের খাবারের পাশাপাশি চায়নিজ রেস্টুরেন্টে খেতে পছন্দ করেন। যদি ওই ধরনের ব্যবস্থাপনায় ঢাকা কিংবা অন্য জায়গাতেও আমাদের ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো পরিবেশন করা হয় তবে দেশীয় খাবারের দোকানেও মানুষের ভিড় থাকবে।


আমি আনন্দিত যে, খলিল বিরিয়ানি এদেশে ইতোমধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। আমার হোটেলে শুধু সাধারণ গ্রাহকরাই নন, রাজনীতিবিদরাও আসেন এবং খেতে খেতেই পরবর্তী কর্মসূচির প্রেক্ষাপট তৈরি করেন। রাজনীতিবিদ, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সমাজের বিশিষ্টজনদের অনেকটা প্রিয় স্থানে পরিণত হয়ে উঠেছে খলিল বিরিয়ানি হাউজ। আমি মনে করি, বাংলাদেশে কমিউনিটির সাথে এখানকার রাজনীতিবিদদের পারস্পরিক সম্পর্কও নিবিড় হচ্ছে এই হাউজের মাধ্যমে।
অর্থকণ্ঠ : আমরা জেনেছি কোভিড-১৯ সংক্রমণ কালে আপনার বিরিয়ানি হাউজ চালু রেখেছিলেন; এ কি মুনাফার উদ্দেশ্যে?
মো: খলিলুর রহমান : জ্বী না। পেন্ডামিকের সময় যখন নিউ ইয়র্কের সকল রেস্টুরেন্ট বন্ধ তখন খলিল বিরিয়ানি হাউজ চালু রেখেছিলাম। আপনাদের অবগতির জন্য বলছি- করোনা সংক্রমণ শুরু হলে আমিও এতে আক্রান্ত হই এবং আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়ে উঠি। সে সময় লক্ষ্য করি, অসংখ্য মানুষ না খেয়ে আছে। তখন আমার দু’জন কর্মচারী নিয়ে যে যেখানে খাবারের সমস্যায় আছেন সেখানে মানুষের দ্বারে দ্বারে বিনা মূল্যে খাবার পৌঁছে দিয়েছি। আমার ড্রাইভার গাড়িতে করে খাবার নিয়ে গেছে। এখানে হালাল খাবার প্রাপ্তি এক সময় বেশ কঠিন ছিল। খলিল বিরিয়ানির মাধ্যমে আমরা সেই সমস্যার সমাধান করেছি। বর্তমানে এখানে হালাল খাবার পেয়ে মানুষের মধ্যে খলিল বিরিয়ানির প্রতি আস্থা বেড়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে খলিল বিরিয়ানির প্যাকেট পেয়ে অসংখ্য অভুক্ত মানুষ আমাদের জন্যে দোয়া করেছেন। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কি হতে পারে!
অর্থকণ্ঠ : করোনার অভিঘাতকালে অভুক্ত মানুষদের বিনামূল্যে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। এখন যদি কেউ সমস্যায় পড়ে আপনাদের কাছে খাবার চায়- তখন কি করেন?
মো: খলিলুর রহমান : আগেই বলেছি, শুধু মুনাফা অর্জনই আমার উদ্দেশ্য নয়। আর্তমানবতার সেবায়ও নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। যে কোনো ক্ষুধার্ত মানুষ যদি টাকা দিতে অসমর্থ হয় আমরা বিনামূল্যে তাকে খাবার পরিবেশন করি। আমি না থাকলে আমার হাউজের কর্মচারীরা খাবার পরিবেশন করেন এটা তাদের বলে দেয়া আছে।
অর্থকণ্ঠ : আপনি একজন ব্যবসায়ী উদ্যমী ব্যক্তিত্ব। আপনার মধ্যে এই যে সেবার মানসিকতা, এর পেছনে কোন বিষয়টি কাজ করেছে?
মো: খলিলুর রহমান : পৃথিবীতে বাংলাদেশের মতো গৌরবগাথা খুব কম জাতিরই রয়েছে। ১৯৫২ সালে মহান ভাষা আন্দোলনে এদেশের ছাত্র-যুবকরা রক্ত দিয়েছেন। একাত্তরে ত্রিশ লাখ মানুষের রক্ত আর আত্মত্যাগে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। সেই গৌরবময় দেশের সন্তান হিসেবে আমাদেরও এই সমাজের জন্যে, দেশের জন্যে, পৃথিবীর মানুষদের জন্যে সামর্থ্য অনুযায়ী সেবা করা উচিত। সেই চেতনা থেকেই আমার মধ্যে ক্ষুদ্রাকারে হলেও এই সেবা মানসিকতার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের মানুষ স্বভাবগতভাবেই সংবেদনশীল। আমি খেয়ে আছি আর আমার প্রতিবেশী না খেয়ে থাকবে এ বিষয়টি আমাকে খুব পীড়া দেয়। ছোটবেলা হতেই অন্যের বিপদে এগিয়ে যাওয়ার শিক্ষা পেয়েছি মা-বাবার কাছ থেকে।


অর্থকণ্ঠ : আপনি খলিল বিরিয়ানির পাশাপাশি আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নামে ‘বাইডেন বিরিয়ানি’ নামে একটি রেসিপি চালু করেছেন-
মো: খলিলুর রহমান : মিস্টার জো বাইডেন আমেরিকার জনপ্রিয় প্রেসিডেন্টদের একজন। আমি তাঁর এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির সমর্থক। জো বাইডেন নির্বাচনে জয়ী হলে তাঁর নামে ‘বাইডেন বিরিয়ানি’ রেসিপি চালু করব এমন একটি সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিলাম। আমার আশার বাস্তবায়ন ঘটেছে। লক্ষ্য করলাম, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার পর বিশ্বের অনেক দেশেই তাঁর নামে খাবার চালু হয়েছে। জাপানে একটি রেস্টুরেন্ট ‘বাইডেন বার্গার’ চালু করে। একজন পেশাদার শেফ হিসেবে তাঁর প্রতি সম্মান দেখিয়ে নিউ ইয়র্কে আমি ‘বাইডেন বিরিয়ানি’ চালু করি। জো বাইডেনের নামের বিরিয়ানি খেয়ে আমার এলাকার স্টেট সিনেটর লুইস সিপুলাভলা উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। বর্তমানে এটি আমাদের জনপ্রিয় রেসিপির একটি। আমি তাঁর কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়ার জন্যে এটা করিনি। সম্পূর্ণ ভালোবেসেই এটি করেছি। তবে এটি করার সুবাদে বাংলাদেশের সুনাম সর্বত্র ছড়িয়েছে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও প্রচার মাধ্যমে বাংলাদেশি হাউজ কর্তৃক ‘বাইডেন বিরিয়ানি’ নামের খাবারের বিষয়টি তুলে ধরেছে- এতে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে।


অর্থকণ্ঠ : এক প্লেট বাইডেন বিরিয়ানির মূল্য কত? এটি কি প্রেসিডেন্টকে পরিবেশন করবেন?
মো: খলিলুর রহমান : প্রতি প্লেট বাইডেন বিরিয়ানির মূল্য ১২ ডলার। এটি গতানুগতিক বিরিয়ানি নয়, হচ্ছে আমার ক্রিয়েশন। আমি স্বপ্ন দেখছি, যদি কখনো সুযোগ আসে এই বিরিয়ানি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সামনে পরিবেশন করব। এই বিরিয়ানির আসল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মসলার ব্যবহার। এর স্বাদের মূল রহস্য হলো- ‘দম’ এ রান্না হওয়া আর মসলার চমৎকারিত্ব। এটি খেলে এর স্বাদ দীর্ঘসময় অনুভূত হয়।
অর্থকণ্ঠ : খলিল বিরিয়ানি হাউজ থেকে আর কি কি খাবার তৈরি হয়?
মো: খলিলুর রহমান : এখানে দেশ-বিদেশের প্রচুর মানুষ খেতে আসেন। বিদেশিরাও আসেন। আমি বিশ্বাস করি আমার এখানকার খাবার ইন্ডিয়ান ও পাকিস্তানি রেস্টুরেন্ট থেকেও সুস্বাদু। আমি খলিল বিরিয়ানিতে নিজের উদ্ভাবনী মেধা কাজে লাগিয়ে এতে ভিন্নতা এনেছি। বর্তমানে খলিল বিরিয়ানি হাউজ থেকে খলিল বিরিয়ানি ও কাচ্চি ছাড়াও খলিল হালাল চায়নিজ, খলিল পিৎজা অ্যান্ড গ্রীল, খলিল সুইটস, খলিল সুপার মার্কেটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। খলিল পিৎজা অ্যান্ড গ্রীল আমেরিকান ফাস্ট ফুড- এটিও বেশ জনপ্রিয়। খলিল হালাল চায়নিজ, খলিল পিৎজা অ্যান্ড গ্রীল, খলিল সুইটস, খলিল সুপার মার্কেটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় এগুলোতে বেশকিছু মানুষের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ হয়েছে।
অর্থকণ্ঠ : জনাব খলিল, কি কি কারণে আপনার ফুড নিউ ইয়র্কে জনপ্রিয় বলে মনে করেন?
মো: খলিলুর রহমান : খাদ্য হচ্ছে মানুষের বেঁচে থাকার অন্যতম প্রয়োজনীয় উপাদান। পৃথিবীর দেশে দেশে একেক মানুষের রুচি, দেশ এবং জাতিভেদে খাবারও ভিন্ন ভিন্ন। তবে খাবারের মূল বিষয় অথবা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে স্বাদ। আমি মনে করি, বাংলাদেশি খাবারে সেই স্বাদ রয়েছে। বিশেষ করে স্বাদ ও ঘ্রাণ যে কোনো জাতির মানুষকেই আকৃষ্ট করবে। আমি আমার খাবারগুলো স্বাদ করে রান্না করি। তবে যারা হালাল খাবার প্রত্যাশা করেন- তারা জানেন- আমাদের খাবার ১০০% হালাল। হালাল ফার্মের মাধ্যমে এগুলো ১০০% প্রসেস করা হয়। আমাদের খাবারগুলো খুব ফ্রেশ এবং উন্নতভাবে প্রসেস করা হয়। আমি প্রতিটি ধাপে প্রসেস করার সময় তা দেখি।

অর্থকণ্ঠ : এবার ভিন্ন প্রসঙ্গ। পেশা জীবনে ইতোমধ্যে বেশ সাফল্য অর্জন করেছেন। আপনার জন্মস্থান বাংলাদেশকে নিয়ে কি ভাবছেন?
মো: খলিলুর রহমান : বাংলাদেশকে নিয়ে আমরা সব সময় গর্ববোধ করি। বাংলাদেশ এক সময় দরিদ্র রাষ্ট্র্র হলেও এখন এর ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। এটি এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। পদ্মা সেতুসহ বড়ো আকারের অনেক স্থাপনা নিজেরাই করতে সমর্থ হচ্ছি। এই উন্নয়নের পেছনে নেতৃত্ব একটি বড় বিষয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ দিয়েছেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ দ্রুত উন্নয়নের দিকে এগিয়ে চলেছে। দেশের এই উন্নয়নের কারণে একজন বাংলাদেশি হিসেবে প্রবাসে আমাদের গর্ববোধ হয়। একসময় বাংলাদেশে খাদ্যের অভাব ছিল প্রচণ্ড, অনেক মানুষ না খেয়েও মারা যেতো; এখন তা নেই। আমরা এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।


অর্থকণ্ঠ : দেশের এই উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদান সম্পর্কে আপনার অভিমত কি?
মো: খলিলুর রহমান : বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী আমরা- পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকি না কেন- বাংলাদেশকে হৃদয়ে ধারণ করি। প্রবাসীদের রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে তুলছে। বর্তমানে বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, মাথাপিছু বার্ষিক আয় এখন ২৫০০ ডলারের বেশি। অচিরেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। এর পেছনে প্রবাসীদের অবদান সর্বাধিক।
অর্থকণ্ঠ : আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চাইছি।
মো: খলিলুর রহমান : বর্তমানের সাফল্য মানুষকে আগামী দিনের পথ দেখায়। আমি চাই খলিল বিরিয়ানি হাউজ শুধু নিউ ইয়র্কে নয়- বাংলাদেশি খাবার প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর গ্রহণযোগ্যতা পৃথিবীর দেশে দেশে প্রতিষ্ঠা লাভ করুক। আমি এর মাধ্যমেই বাংলাদেশকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। আমার আরেকটি ইচ্ছে আছে, তা হচ্ছে- বাংলাদেশে ‘শেফ’ পেশাকে আপগ্রেড করা। দেশে এখন অনেক উন্নতমানের হোটেল প্রতিষ্ঠা পেলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেশীয় শিক্ষিত ‘শেফ’-এর অভাব। নিজেদেরকে সাধারণ ‘বাবুর্চি’ ভেবে অনেকেই ‘শেফ’-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ পেশায় আসতে চায় না। আমি চাই বাংলাদেশে শেফ ইনস্টিটিউট গড়ে উঠুক। শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরা দেশে এবং বিদেশে সম্মানজনক এই পেশা গ্রহণ করুক। এতে জাতীয় আয় বাড়বে। বিদেশে আমাদের মাতৃভূমির সুনামও বৃদ্ধি পাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর