মশিউর আনন্দ, ঢাকা
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যূতি রোধের জন্য প্যারিস চুক্তি, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্ক এর পূর্ণ বাস্তবায়নের আহবান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম, এমপি। তিনি গতকাল বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, জেনেভা কর্তৃক আয়োজিত “জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন ও বাস্তুচ্যূতি নেক্সাস” শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রদত্ত বক্তব্যে এ আহবান জানান।
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ)-এর আওতায় অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ঢাকা থেকে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দেন। ওয়েবিনারে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বিপুল সংখ্যক মানুষের বাস্তুচ্যূতিসহ জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যান্য অভিঘাত মোকাবেলায় ক্ষতিগ্রস্থ দেশসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সম্ভাব্য করণীয়সমূহ তুলে ধরা হয়। উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশ দ্বিতীয় মেয়াদে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা ৫৫টি দেশের এ ফোরামের সভাপতিত্ব করছে।
বাংলাদেশকে চরম জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা একটি দেশ হিসেবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বৈশ্বিক কার্যক্রম তরান্বিত না করলে বিপুল সংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যূত হবে এবং অভিবাসী হিসেবে স্থানান্তরিত হবে। এসময় তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত কার্যক্রমসমূহও তুলে ধরেন। তিনি আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অতি ঝুঁকিতে থাকা দেশসমূহের জন্য অভিবাসন একটি অভিযোজন মাধ্যম। প্রতিমন্ত্রী প্রধান নিঃসরণকারী দেশসমূহকে জরুরী ভিত্তিতে প্রশমন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের আহবান জানান। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অভিবাসী হওয়া মানুষের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চয়তার উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশসমূহকে প্রয়োজনীয় অর্থ ও প্রযুক্তি সহযোগিতা প্রদানের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
অন্যান্যের মধ্যে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মহাপরিচালক এন্তোনিও ভিটোরিনো, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি, ফ্রান্স, মিশর, জার্মানি ও ঘানার রাষ্ট্রদূতগণ এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডার প্রতিনিধিবৃন্দ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মহাপরিচালক তাঁর বক্তব্যে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বলিষ্ঠ পদক্ষেপ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তর্জাতিক আলোচনায়, বিশেষকরে, আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য ২৭তম কন্ফারেন্স অব পার্টিজে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বাস্তুচ্যূতি ও অভিবাসন বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার উপর তিনি জোর দেন। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সুরক্ষা ও তাদের জন্য মানবিক সহায়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন। অন্যান্য বক্তাগণ জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশসমূহের সহনশীলতা বৃদ্ধিসহ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অন্যান্য পদক্ষেপ নেয়ার উপর জোর দেন।
জেনেভাস্থ বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ছাড়াও আন্তর্জাতিক সংস্থা, গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে যোগ দেন।