• রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন

‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪২৮’ পেলেন রঞ্জনা বিশ্বাস

Reporter Name / ৯৪ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০২২

দেশের প্রবন্ধ ও গবেষণা সাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪২৮’ পেলেন প্রাবন্ধিক-গবেষক রঞ্জনা বিশ্বাস। 

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তার হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পুরস্কারপ্রাপ্ত রঞ্জনা বিশ্বাসের প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ২৪। বেদে জনগোষ্ঠী ও বাংলাদেশের লোক-ঐতিহ্য নিয়ে গবেষণা করে তিনি খ্যাতি অর্জন করেছেন। 

এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও লোকসাহিত্য তার গবেষণার অন্যতম প্রধান বিষয়। এ অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক-প্রাবন্ধিক আকিমুন রহমান। সভাপতিত্ব করেন অনন্যা সম্পাদক তাসমিমা হোসেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে রঞ্জনা বিশ্বাসের উপর লেখক-নির্মাতা ও সাংবাদিক তাপস কুমার দত্ত নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এবং অনুষ্ঠানটি শেষ হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতি সংসদের পরিবেশনা দিয়ে।

আকিমুন রহমান বলেন, ‘বেদেরাও আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। তাদের আত্মত্যাগের কাহিনির শেষ নেই। কিন্তু আমরা সেটা মানি না। রঞ্জনার গবেষণায় আমরা বেদেদের কথা জানতে পারি। মুক্তিযুদ্ধে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অবদান ও আত্মত্যাগের কথা জানতে পারি। বাংলা ঐতিহ্যবাহী পালকিবাহীদের জীবন ও অনালোচিত সেই ইতিহাসও আমাদের সামনে তুলে ধরেন তিনি। তিনি লোকগীতি, লোকসঙ্গীতের কথাগুলোও তুলে ধরেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘রঞ্জনা শুধু গবেষক-ই নয়, সৃজনশীল লেখকও। তিনি একাধারে কবি ও ঔপন্যাসিক। তার কবিতা ও উপন্যাস পড়ার সময় আমি অভিভূত হয়ে যাই। তিনি এক্ষেত্রে আলাদা করে পুরস্কৃত হওয়ার যোগ্য।’

সভাপ্রধানের বক্তব্যে তাসমিমা হোসেন বলেন, ‘রঞ্জনা বিশ্বাস নতুন প্রজন্মের লেখক। তার দেখার দৃষ্টিও অনন্য। তিনি বাংলাদেশের অবহেলিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন ইতিহাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটিয়ে দিচ্ছেন। একবিংশ শতকে এসে মানুষ হিসেবে সমাজের এই শ্রেণিভেদ ভেঙে দিতে চাই আমরা। রঞ্জনা লোকধর্ম ও লোকায়াত জীবন নিয়ে কাজ করে সেই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন আমাদের কাছে। অনন্যা কখনো বয়স দিয়ে মানুষের যোগ্যতা বিচার করে না। রঞ্জনাকে তাই পুরস্কৃত করতে পেরে, সম্মানিত বোধ করছে অনন্যা।’

পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশ করে রঞ্জনা বলেন, ‘১৫ বছর আগে যে জীবনকে আমি অস্বীকার করতে চেয়েছিলাম, আজ সেই জীবন অনন্যা স্বীকৃতি পাচ্ছে। এই বিষয়ে ঘোর আমার কাটছে না। আমি সকলকে বলতে চাই, ভালোবেসে শুধু জীবনকে উদযাপন করতে শেখো। যেসকল নারী জীবনের অর্থ বোঝেন না, তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, জীবনে প্রয়োজনের জন্য বাঁচুন। সমাজের প্রতিটি শ্রেণিপেশা, ধর্ম-বর্ণের মানুষকে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে মানুষ হিসেবে নিজেকে অতিক্রম করে যান।’

প্রসঙ্গত, বাংলা ১৪০১ সন (১৯৯৩ সাল) থেকে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। প্রতিবছর একজন নারী-সাহিত্যিককে বাংলাদেশের সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ পর্যন্ত ২৬জন নারী সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। এ-পর্যন্ত যারা এ পুরস্কার পেয়েছেন তারা হলেন- সেলিনা হোসেন, রিজিয়া রহমান, ড. নীলিমা ইব্রাহিম, দিলারা হাশেম, রাবেয়া খাতুন, ড. সন্জীদা খাতুন, জাহানারা ইমাম (মরণোত্তর), নূরজাহান বেগম, রাজিয়া খান, রুবী রহমান, পূরবী বসু, আনোয়ারা সৈয়দ হক, মকবুলা মনজুর, ঝর্ণা দাশ পুরকায়স্থ, সালেহা চৌধুরী, নূরজাহান বোস, মালেকা বেগম, কাজী রোজী, নিয়াজ জামান, জাহানারা নওশিন, সোনিয়া নিশাত আমিন, বেগম মুশতারী শফী, বেগম আকতার কামাল, আকিমুন রহমান, নাদিরা মজুমদার ও ঝর্না রহমান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category