রফিক খান
প্রেসিডেন্ট
এভিএস গ্রুপ ইউএসএ, ইনক
সাক্ষাৎকার গ্রহণ : এনামুল হক এনাম
এমন অনেক বাংলাদেশি আমেরিকান রয়েছেন যারা নিজেদের চিন্তা-চেতনা, উদ্যোগ এবং কর্মপ্রয়াসের মধ্যে দিয়ে আমেরিকাতেও ব্যবসায়িকভাবে প্রতিষ্ঠা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন- তাদেরই একজন রফিক খান। দূরদর্শী ও আত্মপ্রত্যয়ী রফিক খান যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এভিএস গ্রুপ ইউএসএ, ইনক-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট।
আর্কিটেকচারাল সাইনস, এক্সিবিটিস ফিক্সচার্স, ডিজিটাল গ্রাফিক্স ও রিটেইল ব্র্যান্ডিং, মার্কেটিং বিষয়ে সমন্বিত এই ব্যবসায়িক গ্রুপ শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়- বিশ্বের দেশে দেশে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। AVS গ্রুপ-এর উদ্যোক্তা ও কর্ণধার রফিক খান মডার্ন বিজনেস কালচারের একজন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিত্ব। ভিজুয়াল ওয়ার্ক, গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে তার অভিজ্ঞতা দীর্ঘ প্রায় তিন দশকের। পরিশ্রমী ও কর্মপ্রিয় রফিক খান যে কোনো কাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল পর্যায়েই নিবিড়ভাবে যুক্ত থাকেন। ফলে কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়। তিনি কাজের সকল ব্যাপারে সংযুক্ত থাকার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। এভাবেই একজন রফিক খান নিজস্ব বলয়ে হয়ে উঠেছেন ক্যারিয়ারিস্ট কর্মবীর। তিনি AVS Signage & Visuals Bangladesh-এরও চেয়ারম্যান। একই সাথে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন AVS Foundation; তিনি এর প্রেসিডেন্ট।
স্বপ্নদর্শী রফিক খান গত শতাব্দীর ৯০ দশকের মাঝামাঝি একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার মালিক এবং আর্ট ডিরেক্টর হিসেবে তার ভিজ্যুয়াল বিজনেস ক্যারিয়ার শুরু করেন। তিনি ২০০০ সালের শুরুতে নিউ ইয়র্ক সিটির একটি বৃহৎ ভিজ্যুয়াল এবং সাইনেজ কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে যোগ দিয়ে ২০১১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এর ফলে তিনি ব্যাপক অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জনের সুযোগ পান। তিনি ২০১২ সালে Architectural Visual Solution (AVS) নামে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। প্রখর মেধার অধিকারী রফিক খান Ul University থেকে Electric Signs, LED Signs, HID Signs, Neon Signs এবং অন্যান্য বিষয়ে কৃতিত্বের সাথে কোর্স সম্পন্ন করেছেন। একারণেই তার কাজের মধ্যে আলাদা বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়। তিনি বিশ্বমানের Flow Master CAD Programming and Direcl Drive Pump HP মেইনটেন্যান্স বিষয়েও অভিজ্ঞ ব্যক্তিত্ব। তিনি Superwide Format VUTEK Printing Machine Operation এবং এর ব্যবস্থাপনা বিষয়েও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। রফিক খান যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম অধিদপ্তর এবং OSHA Compliance থেকে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য বিষয়ে ট্রেনিংসহ কনস্ট্রাকশন খাতের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য বিষয়েও দক্ষতা লাভ করেছেন। তিনি Secure Worker Access Consortium (SWAC) এর একজন দক্ষ অনুমোদিত সদস্য। একজন গর্বিত বাংলাদেশি আমেরিকান রফিক খান তার অভিজ্ঞতা ও মেধার সমন্বয় ঘটিয়ে সৃজনশীল শিল্প প্রতিষ্ঠান AVS-কে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বিশেষ অবস্থানে তুলে আনতে সক্ষম হয়েছেন। এভিএস গ্রুপ ইউএসএ, ইনক এর প্রেসিডেন্ট রফিক খান সম্প্রতি অর্থকন্ঠকে দেয়া সাক্ষাৎকারে যা বলেন তা এখানে উপস্থাপন করা হলো :
অর্থকন্ঠ : একজন বাংলাদেশি আমেরিকান হিসেবে আপনি ২৫ বছরের অধিক সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। আপনি এভিএস গ্রুপ-এর প্রেসিডেন্ট। প্রবাসে অবস্থান করেও আপনি বাংলাদেশকে গভীরভাবে লালন করেন। আপনার দৃষ্টিতে বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনীতি কতটা গতিশীল হয়েছে?
রফিক খান : আপনি ঠিকই বলেছেন, আমেরিকায় থাকলেও আমি যে বাংলাদেশি তা কখনো ভুলতে পারি না। বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি- যেখানে আমাদের শেকড় প্রোথিত। স্বাভাবিকভাবেই, বাংলাদেশকে নিয়ে আমাদের মমত্ব, ভালোবাসা ও দেশের জন্য কিছু করার ইচ্ছে প্রতি মুহূর্তেই কাজ করে। একথা সত্য যে, স্বাধীনতা অর্জনের আগে সেই ১৯৭১ সালে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা ছিল বেশ শোচনীয়। বার্ষিক মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র দেড়শ’ ডলার। শিক্ষার হার ছিল ২১%-২২%। বিনা চিকিৎসায় অসংখ্য মানুষ মৃত্যুবরণ করতেন। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয়। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন ১৯৭১ সালে ৭ মার্চের ভাষণে সকলকে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন, তেমনই স্বাধীনতার পর তিনি স্বনির্ভর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার জন্য উৎপাদন ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের জনগণ উৎপাদন-উন্নয়নে অংশ নেয়। বাংলাদেশের মানুষ উদ্যমী ও পরিশ্রমী। স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশ আজ দারিদ্র্যকে জয় করে স্বনির্ভর বাংলাদেশের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। এ দেশের ১ কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বিভিন্ন দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য ও চাকুরিতে নিয়োজিত। ফলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা রেমিট্যান্স হিসেবে দেশে আসছে। এ ছাড়া বস্ত্র খাতসহ রপ্তানি আয়ও অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের পরিমাণ ৪৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার ছাড়িয়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ ডলারের বেশি। গ্রাম পর্যায়ে রাস্তাঘাট ও বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে যাওয়ার সুবাদে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে। এতে ব্যাপক কর্মসংস্থান হয়েছে এবং জাতীয় উৎপাদন বেড়েছে। বাংলাদেশ দরিদ্র দেশের কাতার থেকে বর্তমানে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে সক্ষম হয়েছে। আশা করা যায়, অচিরেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে।
আরেকটি কথা না বললেই নয়, আমরা প্রবাসী হলেও বাংলাদেশ আমাদের হৃদস্পন্দন, এর ভালো-মন্দ সবকিছু আমরা হৃদয়ে ধারণ করি।
অর্থকন্ঠ : আপনারা প্রবাসে থাকলেও জানেন যে, বাংলাদেশ নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ স্থাপনা নির্মাণ করেছে। আরও অনেক স্থাপনা দেশের উন্নয়ন দৃশ্যের উদাহরণ। বাংলাদেশি হিসেবে আপনাদের কেমন লাগে?
রফিক খান : নিজ দেশের উন্নতি প্রতিটি মানুষেরই ভালো লাগে, তাকে গর্বিত হবার আনন্দ দেয়। বাংলাদেশের বৃহৎ স্থাপনা বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু, সদ্য নির্মিত পদ্মা বহুমুখী সেতু, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প, কর্ণফুলী টানেল, সমুদ্র বন্দরসহ অসংখ্য স্থাপনা এখন আমাদের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরছে। এটি সত্যিই গর্বের। এসব স্থাপনা বিদেশে আমাদের ভাবমূর্তি অনেক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা যখন থেকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে সক্ষম হয়েছি তখন থেকে তৈরি পোশাক ও জনশক্তি রপ্তানির মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য ফেরাতে সক্ষম হয়েছি, বিদেশিদের কাছে আমাদের সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। একসময় বাংলাদেশের পাসপোর্ট দেখলে বিদেশি এয়ারপোর্টের কর্মীদের চোখ ছোট হয়ে আসতো, তাচ্ছিল্য ফুটে উঠত; এখন তা ঘটে না। বরং অন্যরকম ঔজ্জ্বল্য দেখা যায়।
বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্বের অর্থনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের পর্যালোচনা হচ্ছে- বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। এমনকি আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশকে পরামর্শ দিতেন উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশকে ফলো করতে।
অর্থকণ্ঠ : বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে অনেক কথাই হয়, সন্ত্রাস, ধর্ষণ, গুম, খুন নিয়েও কথা হয়- আপনার পরামর্শ কি?
রফিক খান : মানুষ তার পরিবার, স্বজন ও দেশকে নিয়ে গর্ব করতেই বেশি পছন্দ করে। আমরাও তার ব্যতিক্রম নই। যখন প্রবাসে বসেও বাংলাদেশ সম্পর্কে খারাপ কিছু শুনি, মিডিয়ায় দুর্নীতি-সন্ত্রাস, ধর্ষণের ঘটনা টিভি পর্দায় দেখি, তখন আমরা হতাশ হই। বলি, এর জন্যতো মুক্তিযুদ্ধ হয়নি- লাখ লাখ মানুষ প্রাণ দেয়নি। সত্যিই খুব কষ্ট হয়। আমি বিশ্বাস করি- মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে দেশ পরিচালিত হলে দেশ থেকে দুর্নীতি, অনিয়ম-সন্ত্রাস-ধর্ষণের ঘটনা উচ্ছেদ হয়ে যাবে।
জাতি হিসেবে আমরা গর্বিত। আমাদের একুশে ফেব্রুয়ারি মহান ভাষা শহিদ দিবস আছে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সাহসী ইতিহাস আছে- তাহলে আমরা কেন দুর্নীতিবাজ হবো! এ ব্যাপারে আমার কথা হচ্ছে-দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অপরাধী যেই হোক তার শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি নাগরিক যেন তার অধিকারের জন্য গর্ববোধ করতে পারেন। সমাজ যেন কতিপয় গডফাদারের হাতে বন্দি হয়ে না পড়ে-এটা নিশ্চিত করতে হবে। আমি মনে করি, রাষ্ট্র ব্যবস্থায় যার যা দায়িত্ব তা সঠিক এবং যথাযথভাবে পালন করতে হবে। প্রশাসনকে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে।
অর্থকণ্ঠ : আপনি AVS গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা কর্ণধার হিসেবে নির্মাণখাতে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্মাণ কাজের নান্দনিকতাকে যেমন নিশ্চিত করছেন- তেমনি স্থাপনাকে সৌন্দর্য ও সৌকর্যময় করে তুলছেন। বাংলাদেশের উন্নত মানের নির্মাণকাজে নান্দনিকতা প্রকাশে আপনার কোনো উদ্যোগ থাকবে কি?
রফিক খান : ঠিকই বলেছেন। AVS গ্রুপ গ্রাহকদের উঁচু মানের পণ্যসামগ্রী এবং নির্মাণ নিশ্চিত করতে সেরা মানের স্থপতি, ঠিকাদার এবং ডিজাইনারদের সঙ্গে কাজ করে। আমরা গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী নকশা নিশ্চিতসহ বাজেটের মধ্যে তা সম্পন্নের লক্ষ্যে কাজ করি।
এছাড়া নির্মাণটি যাতে পরবর্তী পর্যায়ে নান্দনিক হয়ে ওঠে এজন্যে ডাইমেনশনাল অক্ষর, লোগো ব্যবহার, আলোকিত সাইনবোর্ড এবং ফ্লোর ডিসপ্লে ইত্যাদির সংমিশ্রণ ঘটাই। আপনারা জেনে থাকবেন- আমাদের তৈরি সাইনসমূহ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে। যদি বাংলাদেশের কেউ বা কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের AVS কে কাজে লাগাতে ইচ্ছা পোষণ করেন তাহলে অবশ্যই তাদের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করে দেবে। রিয়েল এস্টেট খাতে এভিএস গ্রুপ গ্রাহকদের বিপুল আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
অর্থকণ্ঠ : কোভিড সংক্রমণকালে আপনারা প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের মানুষের জন্য কি ধরনের সহযোগিতা করেছেন?
রফিক খান : আমরা প্রবাসীরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যকার সমস্যাকবলিত পরিবারদের সহায়তা দিয়ে থাকি। পাশাপাশি আমরা প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে অথবা রেডক্রসসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে নিজ দেশের অসহায় স্বজনদের সাহায্য-সহযোগিতা করি। আশার কথা, বাংলাদেশের সরকার ক্রমাগত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষমতা অর্জন করছে। সমুদ্র উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের আগাম সংবাদ দিয়ে মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। আবার দুর্যোগ পরবর্তীতে তাদের সহায়তাও দিচ্ছে। সরকারের এই কার্যক্রম দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয়ে থাকে।
অর্থকণ্ঠ : আপনাদের পরবর্তী প্রজন্ম যাতে আমেরিকাতেও বাংলাদেশের সংস্কৃতির চর্চা করতে পারে সে জন্য কি ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছেন?
রফিক খান : এখানে বাংলাদেশি কমিউনিটিগুলোতে অনেক স্কুল, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও ক্লাব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের সন্তানরা বাংলার ঐতিহ্যময় সংস্কৃতি যেমন নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি, গান ইত্যাদি চর্চার সুযোগ পাচ্ছে। পাশাপাশি আমরা এখানে বাংলাদেশের জাতীয় দিবসগুলো যেমন মহান ভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, পহেলা বৈশাখ ইত্যাদি পালন করি এবং এসব অনুষ্ঠানে চমৎকার সাংস্কৃতিক আয়োজন করা হয়। এসব কিছুর মাধ্যমে আমাদের শিশুরা বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে পারছে।
অর্থকণ্ঠ : বাংলাদেশকে নিয়ে আপনি কতোটা আশাবাদী?
রফিক খান : বাংলাদেশের জনগন প্রমাণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ অমিত সম্ভাবনার রাষ্ট্র। এক সময় আমাদের অনেক কিছুই ছিল না, সামান্য দুর্যোগেই বিদেশিদের কাছে হাত পাততে হতো। কিন্তু এখন বরং উল্টোটাই ঘটে। আমরা অন্য দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগে খাদ্য, ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করে থাকি। এর কারণ, ইতোমধ্যে আমরা সেই সক্ষমতা অর্জন করেছি। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের সিঁড়িতে পা রাখতে সক্ষম হয়েছে।
অর্থকণ্ঠ : বাংলাদেশের কোন উন্নয়ন বিষয়টি আপনার বেশি চোখে পড়ে?
রফিক খান : অনেক ক্ষেত্রেই উন্নয়ন ঘটেছে যা চোখে পড়ার মতো। তবে আমার কাছে নারীর উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়ন সত্যিই অবাক করার মতো ঘটনা। গ্রামের অশিক্ষিত অবহেলিত নারীদের হাত ধরেই আমাদের পোশাক শিল্প এখন বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। একই সাথে ক্ষুদ্র ঋণ অর্থাৎ এনজিওদের সহায়তায় গ্রামের দরিদ্র ও হতদরিদ্র নারীসমাজ এখন অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি আমাকে সত্যিই আপ্লুত করে। আমি আশাবাদী -বাংলাদেশ সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে শিগগিরই উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে।