যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটির ৮টি স্পেশালাইজড হাইস্কুল পিতামাতার জন্য গৌরবের জায়গা। বিশেষ করে ইমিগ্র্যান্ট পিতামাতারা আপ্রাণ চেষ্টা করেন তাদের ছেলেমেয়েরা যেন অষ্টম গ্রেডে পড়াকালে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে এইসব স্কুলে ভর্তি হতে পারে। অনেক পিতামাতার আমেরিকান ড্রিমের একটি বিশেষ অংশ এইসব স্পেশালাইজড হাইস্কুুল। গত বছর ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত এইসব স্কুলের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে গত ১২ এপ্রিল। অনলাইনে মাইস্কুলস ওয়েব পেজে এই ফলাফল জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে যারা ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছে তাদের স্কুল থেকেও ফলাফল জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এ বছরও নিউ ইয়র্ক সিটির বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্টদের বিপুলসংখ্যক সন্তান এই সব স্কুলে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছে বলে জানা গেছে। ফলাফল আসতে শুরু করায় বাংলাদেশি পরিবারগুলোতে আনন্দের ধারা নেমে আসে।
সপ্তাহজুড়ে বাবা-মায়ের ফেসবুকে ছেলেমেয়েদের ছবিসহ কোন স্কুলে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছে তা উল্লেখ করে পোস্ট দেন ফেসবুকে। সেইসব পোস্টে অভিনন্দন আর শুভ কামনা জানান তাদের বন্ধু-স্বজনরা। এই খবর পেয়ে অনেকেই দেশে ফোন করেআত্মীয়স্বজনদের জানান দেন। সেই সাথে নিউ ইয়র্ক বা অন্য শহরে বন্ধু-স্বজনদের মধ্যেও চলে খবর আদান-প্রদান। রমজানের কারণে মিষ্টিমুখ বা কেক কাটার পর্বটি হয় ইফতারের পরে। উল্লেখ্য, নিউ ইয়র্ক সিটির এই প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি বছর অংশ নেয় এইটথ গ্রেডের প্রায় ৩০ হাজার ছাত্রছাত্রী। তাদের মধ্য থেকে প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য নির্বাচন করা হয় তাদের প্রাপ্ত স্কোরের ভিত্তিতে। অর্থাৎ সর্বোচ্চ স্কোর প্রাপ্তদের স্টাইভসেন্টে, তারপর ধারাক্রম অনুসারে ব্রংক্স সাইন্স, ব্রুকলিন টেকে ভর্তির জন্য নির্বাচন করা হয়। এছাড়াও নির্দিষ্ট স্কোর করার পরও কোনো শিক্ষার্থী যদি সিদ্ধান্ত নেয় অন্য স্কুলে যাবে, তাহলে তার দেয়া অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তাকে সেই স্কুলে ভর্তির জন্য নির্বাচন করা হয়। এই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বিভিন্ন কমিউনিটির নিজস্ব টিউটোরিয়াল সেন্টার রয়েছে। তারা আগ্রহী ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির জন্য প্রস্তুত করে। নিউ ইয়র্ক সিটিতে বাংলাদেশ কমিউনিটিতে বেশ কয়েকটি টিউটোরিয়াল সেন্টার রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম খান’স টিউটোরিয়াল, মামুন’স টিউটোরিয়াল, সিনার্জি প্রেপ, কালেকটিভ একাডেমি টিউটোরিয়াল, ববি-তারেকে ইত্যাদি। এ বছরও বাংলাদেশি কমিউনিটির সর্বাধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী খানস টিউটোরিয়াল থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে স্পেশালাইজড হাইস্কুলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। এরপর রয়েছে মামুন’স টিউটোরিয়াল, কালেক্টিভ একাডেমি টিউটোরিং সেন্টার এবং সিনার্জি প্রেপ। অন্য টিউটোরিয়ালের খবর পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এবছর বিভিন্ন টিউটোরিং সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ পেয়ে ছাত্রছাত্রীরা ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছে তাদের সংখ্যা উল্লেখ করা হলো। খান’স টিউটোরিয়াল: ১০৫ জন (স্টাইভস্যান্ট ২৪, ব্রংক্স সাইন্স ২৭, ব্রুকলিন টেক ৩৩, ব্রুকলিন ল্যাটিন ৫, ইয়র্ক কলেজ ১২, লিম্যান কলেজ ২, সিটি কলেজ ১ ও স্ট্যাটেন আইল্যান্ড টেক ১).
মামুন’স টিউটোরিয়াল : ৬০ জন (স্টাইভস্যান্টে ২৫, ব্রংক্স সাইন্সে ৩৫); কালেকটিভ একাডেমি টিউটোরিয়াল: ৩৭ জন (স্টাইভস্যান্ট ১৩, ব্রংক্স সাইন্স ১১, কুলীন টেক ৪ ও অন্যান্য। সিনার্জি প্রেপ: ২০ জন (স্টাইভস্যান্ট ২, ব্রংক্স সাইন্স ১০, ব্রুকলিন টেক ৫ ও ব্রুকলিন ল্যাটিন ৩ জন)।
নিউ ইয়র্ক সিটির স্পেশালাইজড হাইস্কুলগুলো হচ্ছে- স্টাইভস্যান্ট হাইস্কুল, ব্রংক্স হাইস্কুল অব সাইন্স, ব্রুকলীন টেকনিক্যাল হাইস্কুল, স্ট্যাটেন আইল্যান্ড টেকনিক্যাল হাইস্কুল, ব্রুকলিন ল্যাটিন স্কুল, ফিওরেলা এইচ, লাগোয়ার্ডিয়া হাইফুল অব মিউজিক অ্যান্ড আর্ট অ্যান্ড পারফর্মিং আর্টস, হাইফুল ফর ম্যাথ, সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাট সিটি কলেজ, হাইস্কুল অব আমেরিকান স্টাডিস অ্যাট লিম্যান কলেজ, কুইন্স হাইস্কুল ফর দ্য সাইন্সেস অ্যাট ইয়র্ক কলেজ। অর্থকণ্ঠ ডেস্ক