বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রো রেলের জন্য রাজধানীতে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। যার রুট হচ্ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত। সবকিছুু ঠিকঠাক থাকলে এ বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে কাজ শুরু হবে। কাজটি ২০২৬ সালের মধ্যে শেষ করে যাত্রী পরিবহনের কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড।
সূত্রে জানা গেছে, পাতাল মেট্রো রেলের জন্য বাস্তবায়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। যার বড় অংশের জোগান দেবে দাতা সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। এই রেলপথটি মাটির প্রায় ৩০ মিটার নিচ দিয়ে যাবে। ট্রেন চলবে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাপনায়, যা দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এ কাজের জন্য থাকবে একটি অপারেশন কন্ট্রোল সেন্টার।
পাতাল মেট্রো রেলপথটি এমআরটি-১ নামে পরিচিত। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, এমআরটি-১ লাইনের মোট দৈর্ঘ্য ২৬.৬ কিলোমিটার। যা দু’টি অংশে বিভক্ত। একটি অংশ উড়াল পথ, অন্যটি পাতাল পথ। এর মধ্যে এলিভেটেড সেকশন বা উড়াল পথ থাকবে ১০.২ কিলোমিটার। যেটির রুট হচ্ছে কুড়িল হতে কাঞ্চন সেতুর পশ্চিম পাশ পর্যন্ত। এছাড়া ১৬.৪ কিলোমিটার হচ্ছে পাতাল রেলপথ। যেটির রুট হচ্ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে খিলক্ষেত, কুড়িল, যমুনা ফিউচার পার্ক, বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ, রাজারবাগ হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত।
আরও জানা গেছে, দু’টি পথে যাত্রী উঠানামা করার মোট ১৯টি স্টেশন থাকবে। এর মধ্যে উড়াল পথে ৭টি এবং পাতাল পথে ১২টি স্টেশন থাকবে। প্রতিটি স্টেশনে গড়ে ২ দশমিক ৫ থেকে ৩ দশমিক ৫ মিনিট পরপর ট্রেন থামবে। রুটে ট্রেন থাকবে মোট ২৫টি। প্রতিটি ট্রেন তিন হাজারের বেশি যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। স্টেশনে ওঠানামার জন্য উভয় পথের স্টেশনে থাকবে লিফট, সিঁড়ি ও এস্কেলেটর।
এই প্রকল্পের কাজ ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সেটি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের জন্য শুরু করা সম্ভব হয়নি। কাজটি শুরু করার জন্য ইতোমধ্যে লাইসেন্স পেয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিকী জানিয়েছেন, এ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। প্রথম কাজের মধ্যে পাতাল রেলের ডিপোর ভূমি উন্নয়নের মধ্য দিয়ে নির্মাণকাজ শুরু হবে। ২০ জুন দাতা সংস্থা জাইকার কাছে সম্মতির জন্য পাঠানো হবে, সেখানে সম্মতি পেলেই ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হবে। এরপর শুরু হবে নির্মাণ কাজ।
তিনি আরও জানান, টানেল বোরিং মেশিন দিয়ে পাতাল পথের নির্মাণকাজ চলবে। আমরা ধারণা করছি, ২০২৬ সালের মধ্যে কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত পাতাল পথের কাজটি শেষ হবে। অর্থকণ্ঠ ডেস্ক