• বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবর
Банда казино рабочее зеркало Банда Казино – как начать играть? Banda casino официальный сайт: бонусы, игровые автоматы в казино Банда Как Вывести Деньги Драгон Мани? Казино Драгон Мани Зеркало Банда Казино – официальный сайт Банда казино онлайн Общий обзор Банда Казино Отзывы Банда Казино – Мнения и Отклики от Реальных Игроков Banda Casino Обзор популярных игр в Banda Casino: Зеркало Банда Казино | Halostar Marketing Kometa casino официальный сайт: бонусы, игровые автоматы в казино Комета Казино Комета официальный сайт онлайн. Зеркало казино Kometa. Личный кабинет, вход, регистрация Как получить бонусы в Комета Казино? Онлайн Казино Банда. Зеркало Казино Banda. Личный Кабинет, Регистрация, Игровые Автоматы Банда Казино Мобильная Версия Официальный Сайт Banda Casino Банда Казино Мобильная Версия Официальный Сайт Banda Casino Banda Casino Зеркало – Рабочие Зеркало На Сегодня Банда Казино Онлайн Казино Банда. Зеркало Казино Banda. Личный Кабинет, Регистрация, Игровые Автоматы Банда Казино – Вход На Сайт, Личный Кабинет, Бонусы За Регистрацию, Лучшие Слоты На Деньги И Бесплатно В Демо-Режиме Banda Casino Зеркало – Рабочие Зеркало На Сегодня Банда Казино Банда Казино Мобильная Версия Официальный Сайт Banda Casino Играй В Уникальном Стиле: Комета Казино Ждет Тебя! Комета Казино Мобильная Версия Официальный Сайт Kometa Casino Онлайн Казино Комета. Зеркало Казино Kometa. Личный Кабинет, Регистрация, Игровые Автоматы Kometa Casino Зеркало ᐈ Вход На Официальный Сайт Комета Казино Игровые автоматы бесплатно лягушка Комета Казино GameTwist unsrige Erfahrungen via unserem Social Spielbank JackpotPiraten Free Spins, 2 Aktionen and 50 Freispiele На каких условиях играть на официальном сайте ап икс официальный сайт на real money с выводом Каким образом играть на гемблинговой веб-площадке казино вавада в платном режиме с возможностью выплат Как играть в cazino Friends на настоящие средства с дальнейшим обналичиванием Best Zimpler Casinos 2024 Gambling establishment Internet sites with Zimpler Repayments Bitcoin 1xbet app for android Local casino Incentives: All you need to Know Suprarenin Zweck & Krankheiten Spielbank Adrenaline RTP, Statistics And Payout Analysis EuroGrand Spielbank: Prämie 250, 50 Freispiele EuroGrand

বাংলাদেশে জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্রশাসন জরুরি

রিপোর্টারের নাম : / ৪০১ ভিউ
আপডেট সময়: বুধবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২২

 

বাংলাদেশে জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্রশাসন জরুরি, আবু জাফর মাহমুদ

 

আহ্বায়ক
অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন
অব বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিজ
প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড সিইও
বাংলা সিডিপিএপি সার্ভিসেস ইনক

সাক্ষাৎকার গ্রহণ : ফেরদৌস সালাম, এনামুল হক এনাম
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি আমেরিকানদের মধ্যে এ সময়ের সোচ্চার কণ্ঠ আবু জাফর মাহমুদ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ছাত্র জীবনেও তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর জন্ম ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে। তাঁর পিতা মরহুম হাজী মো: মুছা মিয়া।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের একজন। তিনি ১৯৭১ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সেস (বিএলএফ)-এর অধীনে মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। আবু জাফর মাহমুদ দৃঢ়চেতা, সাহসী এবং দেশপ্রেমিক। সত্য কথা বলতে তিনি বরাবরই নির্ভীক। তিনি বলেন, একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক কখনো কোনো প্রভাবে নতজানু হয় না। তিনি যখন যেখানেই বক্তব্য রাখেন তাঁর বক্তব্য জুড়ে থাকে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ। তিনি এ প্রজন্মের মানুষকে অনুপ্রাণিত করেন মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগ ও মহিমাকে স্মরণ করে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে দুর্নীতিমুক্ত থাকতে। জ্ঞানী এবং সৎ মানুষের শাসন তাঁর আরাধ্য ও অন্যতম কামনা।


সম্প্রতি অর্থকণ্ঠকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ যা বলেন তা এখানে উপস্থাপন করা হলো :
অর্থকণ্ঠ : আপনি বাংলাদেশের একজন গর্বিত সন্তান- মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর সেনানী। যুক্তরাষ্ট্রেও আপনি বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বক্তব্য রাখছেন। সম্প্রতি আপনি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিজ গঠন করেছেন। এর পটভূমি সম্পর্কে জানতে চাইছি।
আবু জাফর মাহমুদ : আপনাকে ধন্যবাদ। এটি ঠিক যে, গত ১ অক্টোবর কুইন্সবোরোর উড সাইডে গুলশান টেরেস পার্টি হলে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অ্যালামনাই সংগঠন অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিজ মুক্ত আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল। নিউ ইয়র্ক শহরের গণ্যমান্য বাংলাদেশি আমেরিকান এবং প্রবাসী নেতৃবৃন্দসহ অ্যালামনিদের উপস্থিতিতে হল ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। এতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন। এখানে উপস্থিত কেউ কেউ তাঁদের বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রদের জন্যে দেশের জনগণের অনেক অর্থ ব্যয় হয়। স্বাভাবিকভাবে দেশ ও জনগণের প্রতি তাদের একটা দায়বদ্ধতা রয়েছে। অনেকেই বলেন, প্রতিষ্ঠিত হলেও দেশ ও জাতির জন্যে তেমন কিছু করা হয় না। এই সংগঠন গড়ে তোলার পেছনে আমার কিছু দায়বদ্ধতা ও উদ্দেশ্য কাজ করেছে। আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই। আমেরিকায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠায় আমিও সংযুক্ত ছিলাম। বাংলাদেশ সৃষ্টির আগে অর্থাৎ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাস মানেই ছাত্র সমাজের ইতিহাস। ওই সময় ছাত্র সংগঠনগুলো ছিল সার্বভৌম। তারা কোনো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করতো না বা অঙ্গসংগঠন ছিল না। ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২’র হামুদুর রহমান শিক্ষা কমিশন-বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণআন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের ২ মার্চ স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন, পরদিন ৩ মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশের ইশতেহার (স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র) পাঠ করে শোনান প্রথম পতাকা উত্তোলক ডাকসুর ভিপি আ স ম আব্দুর রব ও পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ। তাঁরা দুজনই ছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ এবং স্বাধীন বাংলা ছাত্র সমাজের প্রধান দুই নেতা। ‘জয় বাংলা’ সেøাগান সৃষ্টি, ‘জয় বাংলা বাহিনী’ গঠন, ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’ এবং ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, পূর্ব বাংলা স্বাধীন কর’- ইত্যাদি সেøাগানের মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল পটভূমিই ছাত্র সমাজের নেতৃত্বে হয়েছে। ওই সময় কোনো কোনো রাজনৈতিক নেতা ছাত্র নেতৃত্বের তেজস্বীতা ও দৃঢ়তাকে ভয় পেতেন। কেউ কেউ ছাত্র সমাজের দৃঢ়তার কাছে আত্মসমর্পণও করতেন। কিন্তু স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সাল থেকে সেই ছাত্র সমাজকে রাজনৈতিক দলের অধীন করে নেয়া হয়েছে। ছাত্র সমাজের অর্থাৎ ছাত্র সংগঠনগুলোর সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। এখন ছাত্র রাজনীতি মানেই রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করা। ছাত্র রাজনীতি এখন দল-দাসত্বের শিকার। যে কারণে দেশে বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনৈতিক চেতনা লোপ পাচ্ছে। যে কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদে অতীতের ছাত্র সমাজ যেভাবে রুখে দাঁড়াতো এখন তা ঘটছে না। সর্বত্রই দলীয়করণের দুর্বৃত্তায়ন দেশকে ভয়াবহ অন্ধকারের দিকে এগিয়ে নিচ্ছে। আমাদের এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এ ধরনের একটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকেই আমার এই উদ্যোগ গ্রহণ। দেশপ্রেমে জাগ্রত জ্ঞানী সমাজ নির্মাণ এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরা প্রয়োজন। ঠাণ্ডা মাথায় দেশের বিভিন্ন সময়ের শাসকরা জাতির গৌরবকে ভূলুণ্ঠিত করে একটা অসভ্য জাতিতে পরিণত করে চলেছে- আমাদের এই উদ্যোগ একটা বিদ্রোহ। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে- বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ অতীত থেকে শিক্ষা নেবে তারা আর লেজুড়বৃত্তি করবে না, লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহৃত হবে না। আশা করছি, আমরা সফল হবো। বাংলাদেশের মতো রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত দেশে জ্ঞানভিত্তিক শাসন জরুরি যা এখান থেকে বেরিয়ে আসবে। প্রচুর বাংলাদেশি উচ্চশিক্ষিত গবেষক ও সমাজচিন্তক দেশে ও বিদেশে রাষ্ট্রগঠনে, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন। তাদেরকে যথাযথ সম্মান দিয়ে তাদের মেধা ও নিষ্ঠাকে মূল্যায়নে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ নিতে হবে।
অর্থকণ্ঠ : আপনি কি মনে করেন, এই জ্ঞানভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা চালুর জন্যে আবারও কোনো ধরনের আন্দোলন-সংগ্রাম অথবা যুদ্ধ প্রয়োজন?
আবু জাফর মাহমুদ : জ্বী না। আমি বলবো, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়নি। এখনো আমরা যুদ্ধে আছি। এই যুদ্ধ সশস্ত্র কোনো যুদ্ধ নয়, এটি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের মূলচেতনা বাস্তবায়নের কূটনৈতিক যুদ্ধ। ১৯৭১-এর সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী ধাপ, স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের ভুলত্রুটি সংশোধন করে তাকে সুসংহত করা, বিশ্ব প্রবাহের সাথে বাংলাদেশের যথার্থ কূটনৈতিক সম্পর্ক মজবুত করা। সমগ্র জাতির সবশ্রেণীর মানুষের আর্থিক জ্ঞান ও দৃষ্টিভঙ্গির আধুনিকায়ন নিশ্চিত করা।


অর্থকণ্ঠ : একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশি আমেরিকান ও সমাজ বিশ্লেষক হিসেবে বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনার পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন জানতে চাইছি।
আবু জাফর মাহমুদ : আয়তনের দিক থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি ছোট রাষ্ট্র হলেও বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের তিন দিকে ভারত এবং বার্মা, দক্ষিণ দিকে বঙ্গোপসাগর। এদেশকে সেই প্রাচীনকাল থেকেই বড় বড় শক্তির মোকাবেলা করে টিকে থাকতে হয়েছে। এখনও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। স্বাধীনতার ৫১ বছর ধরেই এদেশের সরকারসমূহ দুর্বল থাকায় স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের যে সার্বভৌমত্ব নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা তা আমরা পারিনি। ফলে, দেশের অর্থনৈতিক গতির ক্ষেত্রেও একটা মন্থ’রতা লক্ষণীয়। পাকিস্তান আমলে আমাদের ‘সোনালি আঁশ’ খ্যাত পাট এবং চা ও চামড়া শিল্পের কদর ছিল বিশ্বব্যাপী। ওই সময় পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আমাদের এই অঞ্চলের আয় দিয়ে তাদের অঞ্চল সাজিয়েছে, আমরা দিন দিন অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল থেকেছি। এর আগে ইংরেজ, ফরাসি, পর্তুগীজসহ অন্যরা এসেছে আমাদের দেশের সম্পদ লুটের জন্যে। স্বাধীনতার পরও এদেশের সরকারসমূহ দুর্বল থাকায় নিজেদের সম্পদ সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায়নি বা যাচ্ছে না।
এদেশের গার্মেন্ট শিল্পের কথাই ধরুন। এখানে গার্মেন্ট শিল্প হচ্ছে অনেকটা দর্জিগিরি। এখানে এটি ব্যবসায় ব্যাপক লাভ করেনি। বিদেশের কাপড় আসে, আমরা সেলাই করে তাদের দেই। অর্থাৎ শুধু মজুরি পাচ্ছি। এই মজুরিও অনেক টাকা। যদি পুরো ব্যবসাটা আমরা করতে পারতাম দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয় কেমন হতো? অর্থাৎ আমরা দুর্বল বলেই এটি ঘটছে।
বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রেও দেশে নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির জাল বিস্তৃত। গ্রামের একটা লোককে তিন/চার ধরনের প্রতারক দালালদের হাত হয়ে তারপর ৪/৫ গুণ বেশি টাকা ব্যয় করে বিদেশে যেতে হয়। সেখানেও প্রতারণা। অনেক লোককে বিদেশে ভুয়া কাগজ দেখিয়ে পাঠানো হয়। তাদের অনেককেই কাজ ছাড়া- বেতন ছাড়া মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। এর মধ্যে দু’চারটি ঘটনার কথা মিডিয়ার মাধ্যমে জানা গেলেও হাজার হাজার ঘটনা চাপা পড়ে যায়। আবার তাদের পাঠানো রেমিট্যান্সের কথা আমাদের সরকারে যারা থাকেন তারা কি গর্বভরেই না বলেন। আমাদের কৃষক সমাজ অত্যন্ত পরিশ্রমী, তারা জমি-প্রেমী ও ফসল-প্রেমী; তারা প্রকৃতই দেশপ্রেমিক। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও তারা চাষাবাদ অব্যাহত রেখেছেন। তাদের পরিশ্রমে ফসল উৎপাদনের সুবাদেই দেশের জিডিপির হার উচ্চমুখী হচ্ছে। কিন্তু সেই কৃষকদের উৎপাদনের উপকরণের মূল্য বেড়েই চলেছে। মধ্যস্বত্ব-ভোগীদের কারণে তারা প্রকৃত মূল্য থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন।
আপনি ব্যাংকিং খাতের কথা চিন্তা করুন। এই ক’বছরে কি ভয়াবহ লুণ্ঠনের শিকার ব্যাংকিং খাত। প্রকৃত উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীরা ব্যাংক থেকে যথাযথ ঋণ পাচ্ছেন না। অন্যদিকে রাজনৈতিক পরিচয়ে ও প্রভাবে অনেক টাকা লুট হয়েছে, পাচারও হয়েছে।
এসবই ঘটেছে সরকার ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থায় দুর্বলতার জন্যে। সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা না থাকার জন্যে। এদেশের সাধারণ মানুষ এখনো অনেক ভালো, সৎ এবং পরিশ্রমী। কতিপয় দুর্নীতিবাজ লোকের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্যে এই বিপর্যয়। অনেকেই বলেন, এত কিছুর পরও দেশ এগিয়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে। আমি বলবো, ঋণওতো বেড়েছে। তবে হ্যাঁ- জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ঘটেছে। এগুলোকে আমি অর্থনৈতিক উন্নয়ন বা অগ্রগতি বলতে চাই না। বরং বলবো বাংলাদেশ এখন ঋণে জর্জরিত। আমি মনে করি, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে দেশের গুণী পরিকল্পনাবিদদের সমন্বয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে সেভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।


অর্থকণ্ঠ : প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অথনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে; আপনার বক্তব্য কি?
আবু জাফর মাহমুদ : এটা বাস্তব যে, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ডকে সোজা রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু এখানেও ফাঁক রয়েছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের এক বিশাল অংশ এখনো দেশের মূল অর্থনীতির সাথে যুক্ত হয় না। প্রতিদিন যারা দেশে ফিরছেন বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে- তাদের ক’জন ব্যাংকে ডলার বিনিময় করেন? করেন না। কারণ ব্যাংকের বাইরে রেট বেশি পাওয়া যায়। অর্থাৎ আপনি ব্যাংক চ্যানেলে বা বৈধ রেমিট্যান্সের মাধ্যমে যে বৈদেশিক মুদ্রা পাচ্ছেন তা খুব সামান্যই।
কারো প্রবাসে অর্থ দরকার সে দেশে কারো অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিয়ে দিচ্ছে আর বিদেশে বসেই ডলার পাচ্ছে। আমি মনে করি, এটি দেশপ্রেমের অভাব। আর একজন প্রবাসী যখন উপলব্ধি করে দেশে হাজারটা দুর্নীতি, অনিয়ম হচ্ছে তখন সে এ ধরনের কাজকে ওসবের তুলনায় সামান্য অপরাধ বলে মনে করে। প্রবাসীদের সচেতন করতে হবে এবং ব্যাংকে যাতে দ্রুত সেবা পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে এই রেমিট্যান্স বিষয়ে যদি টার্গেট অনুযায়ী গিফট দেয়ার ব্যবস্থা করা যায় বা রেট আরও বেশি করা হয় তাহলে এর কিছুটা উন্নতি হবে বলে আমি মনে করি।
অর্থকণ্ঠ : আপনার কথার রেশ ধরেই বলছি- এদেশের প্রচুর ছেলে-মেয়ে বিদেশে পড়াশোনা করছে এবং তাদের পেছনে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হচ্ছে। তাহলে কি বলতে হবে যে, এদেশের শিক্ষার মান সেরকম ভালো নেই?
আবু জাফর মাহমুদ : দেখুন, শিক্ষার মান বাংলাদেশেও ভালো। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে দেশের মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ী এবং একশ্রেণীর আমলাদের ছেলেমেয়েদের বিদেশে পড়তে পাঠানো হচ্ছে। এটাকে তারা আভিজাত্য বলে মনে করছেন। আমি আমেরিকায় থাকলেও আমার তিন ছেলেই বাংলাদেশে পড়ালেখা করেছে। দুই ছেলে আল্লাহর রহমতে বিসিএস অফিসার। আমার পক্ষে সম্ভব ছিল তাদের আমেরিকায় শিক্ষার ব্যবস্থা করার। আমি করিনি। এই যে মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, আমলারা তাদের ছেলে-মেয়েদের দেশের বাইরে পড়ান- আমি মনে করি, তাদের মধ্যে দেশপ্রেমের অভাব রয়েছে।
আমরা অনেক কষ্ট করে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাই আত্মীয়স্বজনের কাছে। সেই অর্থ দেশের ভালো কাজে লাগুক। কিন্তু অনেক সময় তা ফালতু কাজেও ব্যয় করা হচ্ছে। এখন খিচুড়ি রান্না শেখার জন্যেও কোনো কোনো মন্ত্রণালয় থেকে কর্মকর্তারা দল বেঁধে দেশের বাইরে যাচ্ছেন- রাজনৈতিক সাইনবোর্ড ব্যবহার করে। এটি সত্যই দুঃখজনক।
অর্থকণ্ঠ : আপনি বলছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে দলীয়করণ মুক্ত রাখতে হবে। আপনার পরামর্শ কি?
আবু জাফর মাহমুদ : বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং শিক্ষাব্যবস্থা- স্কুল কলেজ মাদ্রাসাসহ প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে রাজনৈতিক কর্তৃত্বের বিলোপ ঘটাতে হবে এবং প্রকৃত শিক্ষাবিদদের হাতে ন্যস্ত করতে হবে।
অর্থকণ্ঠ : প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স যে কোনো দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দেশে প্রবাসীরা কতোটা মর্যাদা পায় বলে আপনি মনে করেন?
আবু জাফর মাহমুদ : চোরাকারবার অথবা স্মাগলিং নিয়ন্ত্রিত ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংকিং, রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ নানান সমাজশক্তি আজ জবাবদিহিতার নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত। সরকারি নীতিতে এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্সের বৈদেশিক মুদ্রার যেমন যথার্থ ব্যবহার চলছে না, ঠিক প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও সামান্য মর্যাদা এই সরকারি ব্যবস্থাপনায় দেখা যায় না বলে প্রচুর অভিযোগ রয়েছে।
অর্থকণ্ঠ : অভিযোগ রয়েছে- দেশ থেকে নানাভাবে অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে; আপনি কি বলেন?
আবু জাফর মাহমুদ : এটা বাস্তব ঘটনা। এটা ঘটছে কারণ বাংলাদেশে নানা ফন্দিফিকির করে টাকা লুট এবং পাচার করারও সুযোগ রয়েছে। মূল কথা হচ্ছে- কোনো দেশে যদি সুশাসন না থাকে, জবাবদিহিতা না থাকে সেখানে এধরনের ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকবেই। এদেশে বর্তমানে অনেক রাজনীতিবিদ আছেন যারা ছিলেন উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ী, হঠাৎ নতুন রাজনীতিবিদ হয়েছেন। তাদের অধিকাংশের উদ্দেশ্য দেশ সেবা নয়, নিজেদের সুখ-সমৃদ্ধি বাড়ানোসহ বিলাসী জীবন যাপনের জন্য ব্যবসা করা। তারা সেটাই করেন। তাদের অনেকে বিদেশে অর্থ পাচার করেন।
আরেকটি শ্রেণী আছে যারা রাজনৈতিক ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে জালিয়াতি করে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নেন এবং এক পর্যায়ে অর্থ পাচার করে নিজেরাও বিদেশে পাড়ি জমান। তাদের কেউ কেউ ভারত, দুবাই, মালয়েশিয়া কিংবা কানাডার ‘বেগমপাড়া’য় বাড়ি করে থাকেন।
আমি মনে করি, দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা জরুরি। রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বকে সৎ ও কঠোর হতে হবে যাতে এইসব ভূঁইফোড়রা রাজনীতিতে ঢুকতে না পারে। কিন্তু শোনা যায়, তারা রাজনৈতিক দলগুলোকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দিয়ে দলের বড় পদ কিংবা এমপির টিকিট পায়।
অর্থকণ্ঠ : এটাতো ঠিক যে, আমেরিকাতেও রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহ করে। কারণ, রাজনীতি করতে টাকা লাগেই।
আবু জাফর মাহমুদ : জ¦ী হ্যাঁ। আমেরিকাসহ উন্নত দেশগুলোতেও রাজনৈতিক দলসমূহ বিভিন্নভাবে তহবিল সংগ্রহ করে। চাঁদার মাধ্যমে, চ্যারিটি প্রোগ্রাম অথবা দলীয় সদস্য সংগ্রহের মাধ্যমে। কিন্তু তারা এর পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট উপস্থাপন করে। জনগণের কেউ চ্যালেঞ্জ করলেও তার হিসাব তারা তুলে ধরে। কিন্তু বাংলাদেশে এমনটি ঘটে না। বাংলাদেশে সত্য গোপন করা হয়। তারা মনে করে রাষ্ট্রের সম্পদ লুট করা তাদের অধিকার।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে সরকারি দল ও বিরোধীদলের মধ্যে এই একটি জায়গায় খুব মিল যে, এসব বিষয় নিয়ে বিরোধীদল কখনো হৈ-চৈ করে না। কারণ, আজ এরা সরকারে তো কাল অপর পক্ষ ক্ষমতায় যাবে। তাই তাদের মধ্যে যেন অলিখিত একটি চুক্তি থাকে। সবাই চুপচাপ থাকে। অর্থাৎ মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।


অর্থকণ্ঠ : পদ্মা সেতু দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি করেছে কি?
আবু জাফর মাহমুদ : একটি সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে দেশের ভাবমূর্তি বাড়ে না অথবা কমে না। এটি নির্ভর করে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা কেমন সচ্ছল। জনগণকে সম্মান করা হয় কিনা, নাকি সরকার জনগণকে দাস হিসেবে বিবেচনা করে এবং জনগণের মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার কতটা বিদ্যমান ইত্যাদির উপর। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ চলছে উল্টো রথে; এর অনেক ঘাটতি রয়েছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থায় এখনো জনগণকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য মনে করা হয়।
অর্থকণ্ঠ : আপনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল- দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়টি ছিল মুখ্য। কিন্তু তা থেকে বিচ্যুতি ঘটেছে বলে আপনি মনে করেন কি?
আবু জাফর মাহমুদ : শুধু আমি নই, যে কোনো সচেতন মানুষ মাত্রই উপলব্ধি করে যে, মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা থেকে আমরা শুধু অনেক দূরেই চলে গেছি। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল বাক্ ও ব্যক্তির স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা, কল্যাণকর প্রশাসন ব্যবস্থা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা, রাষ্ট্রের কাছে সকল নাগরিক সমান, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, প্রভাবমুক্ত প্রশাসন ও সারা বিশ্বে মর্যাদাকর অবস্থা ইত্যাদি। কিন্তু আমরা ৫১ বছর ধরেই এসব থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছি। এখানে যখন যে দল ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় সেই দলের প্রধানই তার অপব্যবহার করে প্রশাসন নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখে। প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থা চলবে রাষ্ট্রের নীতিমালার ওপর, দলীয় প্রধানের নিয়ন্ত্রণে নয়। অথচ এদেশে তাই চলে।
অর্থকণ্ঠ : আমরা লক্ষ্য করেছি, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশের একটি সরকারি সংস্থার কিছু লোককে সে দেশে ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে আপনার বক্তব্য কি?
আবু জাফর মাহমুদ : দেখুন, আমি জন্ম সুবাদে এবং পরবর্তীতে নাগরিকত্ব গ্রহণের মাধ্যমে এখন দু’দেশের নাগরিক। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি, শেকড় সত্তার দেশ। আবার আমি আমেরিকানও। আমেরিকা হচ্ছে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মানবিক দেশ। এখানে নাগরিকদেরই সর্বোচ্চ সম্মান দেয়া হয়। শাসন ও বিচার ব্যবস্থা স্বাধীনভাবে কাজ করে। সেক্ষেত্রে আমি বরাবরই মনে করি- বাংলাদেশও এরকম একটি ব্যবস্থায় পরিচালিত হোক। সরকার আসবে- সরকার যাবে কিন্তু রাষ্ট্রের বিধিবিধান থাকবে দলীয় প্রধানের একক প্রভাবমুক্ত। কে কোন দলের সে বিবেচনায় প্রশাসন ও বিচার বিভাগ পরিচালিত হবে না। সরকার হবে নির্মোহ। আপনি যে বিষয়টি বললেন এতে আমিও কষ্ট পেয়েছি। কিন্তু আমেরিকা কোনো প্রমাণ ছাড়া অন্য দেশের বিষয়ে নাক গলায় না। বাংলাদেশে অনেক খুন-গুম এবং অপহরণ হয়েছে। আমেরিকা এই পদক্ষেপ গ্রহণের পর তা কমে গেছে দেখছি। এমনকি খোদ প্রধানমন্ত্রী পুলিশকে বলেছেন বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন না করতে। এতে বোঝা যায়, আগে তা ঘটেছে। একটি দেশের সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি যদি মানব-কল্যাণমুখী হয় সেখানে শান্তির পরিবেশ বিরাজ করে। আমি বরাবরই বলে আসছি- বাংলাদেশকে মানবিক রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যেই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল।
অর্থকণ্ঠ : আপনি কি মনে করেন বিভিন্ন সময়ে দলীয় সরকারের প্রভাবেই আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার পেশাদারিত্ব নষ্ট হচ্ছে?
আবু জাফর মাহমুদ : অবশ্যই এটি ঘটছে। তবে এর জন্যে আমলা প্রশাসনের সদস্যরাও দায়ী। তারা নিজেরাই ব্যক্তিগত স্বার্থে সরকার দলীয় হয়ে যান। তাদের বুঝা উচিত তারা রাষ্ট্রের কর্মচারী-কর্মকর্তা, কোনো দলীয় সরকারের কর্মচারী-কর্মকর্তা নন। রাষ্ট্রের আইন-বিধান অনুযায়ী যদি তারা তাদের পেশাদারিত্ব বজায় রাখেন তাহলে দেশ সত্যিই সোনার দেশে পরিণত হবে। তাহলে খুন-গুম হবে না। এতে করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়ন ঘটবে। কারণ রাষ্ট্রের আইন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকেই গড়ে তোলা জরুরি।
অর্থকণ্ঠ : আপনি কি মনে করেন, উন্নয়নের জন্যে সুষ্ঠু ধারার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা জরুরি?
আবু জাফর মাহমুদ : অবশ্যই। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ছাড়া উন্নয়ন অসম্ভব। সেখানে লুটপাটের স্বর্গরাজ্য হবে। গণতন্ত্র মানেই জবাবদিহিতা। একটি দেশে এ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে জ্ঞানী ও দেশপ্রেমিকরা রাজনীতিতে অংশ নিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। আমি মনে করি, দেশে জ্ঞানী ও দেশপ্রেমিকদের শাসন জরুরি। জ্ঞানভিত্তিক সরকার হতে হবে যা আমরা ৫১ বছরেও পাইনি। সরকার পরিচালিত হবে জ্ঞানের শক্তি দ্বারা, তারা মানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করবে।


অর্থকণ্ঠ : তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর দর্শন কি হওয়া উচিত?
আবু জাফর মাহমুদ : অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলোর লক্ষ্য স্থির করতে হবে দেশপ্রেমভিত্তিক। তাদেরকে খাঁটি দেশপ্রেমিক হতে হবে। অর্থাৎ ব্যক্তির চেয়ে দল এবং দলের চেয়ে দেশকে প্রাধান্য দিতে হবে। রাজনৈতিক দলের রেজিস্ট্রেশনের সময় নেতৃত্বের গুণাগুণ সম্পর্কে বিচার-বিবেচনা করতে হবে। নৈতিকতার দিক থেকে সর্বোচ্চ মানের নেতা হতে হবে। কর্মীদের হতে হবে সৎ ও দেশপ্রেমিক। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের জন্ম আলোচনার টেবিলে হয়নি; এর জন্যে ত্রিশ লক্ষাধিক মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে, অসংখ্য নারীকে সম্ভ্রম হারাতে হয়েছে। আমাদেরকে যুদ্ধ করে দেশ অর্জন করতে হয়েছে। এ বিষয়গুলো অবশ্যই ভাবতে হবে।
অর্থকণ্ঠ : আপনি শুরুতেই বলেছেন জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র শাসন জরুরি। এ বিষয়ে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
আবু জাফর মাহমুদ : আমি সম্পূর্ণ আশাবাদী এবং এটি কার্যকর করা সম্ভব। তবে বর্তমানে রাষ্ট্র- দৃঢ় চেতনা, দেশপ্রেম, পেশাদার নাগরিকদের রাষ্ট্র- সরকারের দায়িত্ব নিতে হবে। শক্ত হাতে অপরাধ দমন করতে হবে। সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ধ্বংস করতে হবে। দেশের মানুষ শিক্ষিত হচ্ছে, নিজেদের বুঝতে শিখেছে। ন্যায়-অন্যায় বুঝতে শিখেছে। প্রভাব খাটিয়ে, ক্ষমতার দাপট দিয়ে অন্যায়ভাবে বেশিদিন টিকে থাকা যায় না। যারা শাসন করবেন তাদের অবশ্যই জ্ঞানী হতে হবে। জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র শাসন ছাড়া পৃথিবীতে মাথা উঁচু করে, সম্মানজনকভাবে টিকে থাকা যাবে না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর