ইরানের প্রয়াত শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভির ছেলে দেশটিতে চলমান গণবিক্ষোভের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, এই বিক্ষোভ ইরানি নারীদের একটি যুগান্তকারী বিপ্লব। ইরানের ধর্মীয় নেতৃত্বের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। খবর এএফপির।
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবে মোহাম্মদ রেজা পাহলভি ক্ষমতাচ্যুত হন। তিনি ছিলেন ইরানের শেষ শাহ। তার বড় ছেলে রেজা পাহলভি। তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন।
রেজা পাহলভির দাদা রেজা শাহ ১৯৩৬ সালে ইরানে সব ধরনের পর্দার বিধান নিষিদ্ধ করেছিলেন। তার ছেলে মোহাম্মদ রেজা পাহলভি হিজাব পরাকে যার যার পছন্দের বিষয়- এই নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। তাকে উৎখাত করে ইরানে ইসলামি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর দেশটির জনপরিসরে নারীদের পর্দা করার বিধি বলবৎ করা হয়।
রেজা পাহলভি ভবিষ্যতে ইরানে ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য বড় ধরনের প্রস্তুতির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এএফপিকে বলেন, তার মতে, এটা সত্যিকারের আধুনিক সময়, যেখানে ইরানি পুরুষ, ছেলে, বাবা ও ভাইদের সমর্থন নিয়ে নারীদের জন্য নারীরা প্রথম বিপ্লব করেছেন।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানে ‘নীতি পুলিশের’ হেফাজতে ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পর থেকে দেশটির রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ চলছে।
‘যথাযথ নিয়ম’ মেনে হিজাব না পরার অভিযোগে ১৩ সেপ্টেম্বর মাসাকে তেহরানে আটক করেছিল ‘নীতি পুলিশ’। আটকের পর পুলিশি হেফাজতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে তেহরানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
রেজা পাহলভি তিন মেয়ের বাবা। তিনি বলেন, ‘পুরুষ শ্রেষ্ঠ’-এমন চিন্তাধারা থেকে ইরানি সমাজ অনেকখানি সরে এসেছে। এ সমাজে নারীদের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে শ্রদ্ধা করা প্রয়োজন।
রেজা পাহলভি বলেন, নারীরা হিজাব পরতে পারেন, আবার নাও পরতে পারেন। তবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের স্বাধীনতা থাকতে হবে। মতাদর্শিক বা ধর্মীয় কারণে এ সিদ্ধান্ত নারীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।
রেজা পাহলভি মনে করেন, যেকোনো সময় ইরানে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের পতন ঘটবে। সে জন্য বিশ্বের প্রস্তুত থাকা দরকার বলে মনে করেন তিনি।