বৈধ কাগজ পত্র ছাড়া ৪৮ ঘন্টার মধ্যে জাতীয়তা সনদ, অনলাইন জন্মসনদ, প্রত্যায়ন পত্র ও ভোটার হতে ফিঙ্গার প্রিন্ট ও ছবি তুলতে পেরে মহা খুশি এক রোহিঙ্গা। স্থানীয় নাগরিকদের জন্য এই কাজ সহজ না হলেও টাকার বিনিময়ে মাত্র ২৪ঘন্টায় ফউজি নামে এক রোহিঙ্গা বনে গেছে বাংলাদেশী নাগরিক।
জানা গেছে, ফউজি একজন সৌদি প্রবাসী। কয়েক বছর আগে বাংলাদেশী ভূয়া ঠিকানায় পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরবে যায়। সেখানে তার পাসপোর্ট সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিলে বাংলাদেশে এসে বিপুল টাকার বিনিময়ে পাসপোর্ট করতে মরিয়া হয়ে উঠে। শহরের পৌর এলাকার ৫নং ওয়ার্ডের তারাবনিয়ার ছড়ায় তার নিকট আত্বীয় রোহিঙ্গা মাফিয়া ডন মো: মুসা তাকে প্রথমে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাহাব উদ্দিন সিকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়। পরে ১ ২ ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর শাহানা আক্তার পাখির কাছে যান প্রবাসী ওই রোহিঙ্গা। তিনি ফউজিকে যাবতীয় নাগরিক সনদ সংগ্রহ করে দেয়ার টার্গেট নিয়ে মাঠে নেমে প্রথমে ম্যানেজ করে ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহাবুদ্দিন সিকদারকে। নাগরিক সনদের দায়িত্ব নেন শাহানা আক্তার পাখি।
পরে তিনি পৌরসভার জন্ম নিবন্ধন শাখার সব কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে অনেকটা চাপ প্রয়োগ করে রাতারাতি তৈরি করে দেন অনলাইন জন্ম নিবন্ধন। পৌরসভার জাতীয়তা সনদ বা নাগরিক সনদ তৈরি করার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মচারীদের চাপ প্রয়োগ করে নিজের ব্যক্তিগত সহকারি দিয়ে সনদ লিখিয়ে নিজেই স্বাক্ষর দিয়ে জাতিয়তা সনদ, প্রত্যায়ন পত্র পাইয়ে দেন। পরে সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসে দেয়া হয় মোটা অঙ্কের টাকা। সেখানেও সফল সৌদি ফেরত ওই রোহিঙ্গা। নারী কাউন্সিলর শাহেনা আক্তার পাখি সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার শিমুল শর্মাকে ম্যানেজ করে আবেদনের মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে সেই রোহিঙ্গার ভোটার হওয়ার কার্যাদি সম্পন্ন করেছেন বলে জানা গেছে।
পৌরসভার জন্ম নিবন্ধন এবং জাতিয়তা সনদ তৈরির কাজে নিয়োজিত কর্মচারীরা জানান, সম্পূর্ন অনৈতিক ভাবে আমাদের চাপ দিয়ে প্যানেল মেয়র-৩ শাহানা আক্তার আমাদের কাছ থেকে সনদ গুলো আদায় করেছে। এমনকি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের স্বাক্ষর ছাড়াই নিয়ে গেছে। পৌরসভার সংরক্ষিত কাউন্সিলর শাহানা আক্তার পাখি জানান, আমি প্যানেল মেয়র হিসেবে স্বাক্ষর করেছি। এর আগে ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাহাব উদ্দিন স্বাক্ষর করেছে। তবে পরে জেনেছি তিনি রোহিঙ্গা। এখন প্রয়োজনে তার সনদ বাতিল করা হবে। এটা তেমন কোন বিষয় না। এদিকে শহরের তারাবনিয়ার ছড়ার এস কে টাওয়ারের ঠিকানা দিয়ে সনদ পাওয়া ফউজিকে চিনেন না বলে জানিয়েছেন এস কে টাওয়ারের মালিক শাফায়েত। সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার শিমুল শর্মা বলেন, ফিঙ্গার দিয়েছে ছবি তুলেছে সত্য, তবে সব কিছু এখন বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা অনেক ধরনের কাগজ পত্র চেয়েছি। তবে সেই ব্যক্তি রোহিঙ্গা সেটা ইতোমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে খবর পেয়েছি।