প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম।
সম্প্রতি ফোবানা এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান রেহান রেজা ও এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি মাসুদ চৌধুরী কর্তৃক প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ফোবানা থেকে আমি শিব্বীর আহমেদ, সদস্য সচিব, ৩৫তম ফোবানা সম্মেলন ২০২১ কে আজীবনের জন্য বহিস্কার করা হয়েছে। বহিস্কারের পুর্বে উপরোক্ত ব্যক্তিদ্বয় আমাকে একটি কারন দর্শানোর নোটিশ পাঠায় (ডকুমেন্ট ০১) এবং কিছু মনগড়া বানানো এবং সাজানো অভিযোগ উদ্দেশ্যমূলক ভাবে আমার বিরুদ্ধে আনেন। আমি তার যথাযথ উত্তর দেই (ডকুমেন্ট ০২)। কিন্তু আমার উত্তরকে পাশ কাটিয়ে বা গ্রাহ্য না করে আমাকে প্রথমে ৫ বছরের জন্য সাসপেন্ড করার পরামর্শ দেয় মোহাম্মদ আলমগীর নামক ওয়াশিংটনের এক ফেডারেল ক্রিমিনাল (ডকুমেন্ট ০৩)।
আমার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ওয়াশিংটনের ফেডারেল ক্রিমিনাল মোহাম্মদ আলমগীরের পরামর্শ পত্র পাবার পর আমি আবারো এর কড়া উত্তর ও প্রতিবাদ জানাই (ডকুমেন্ট ০৪)। কিন্তু আমার কোন কথা আমলে না নিয়ে একটি অপরাধী চক্রকে খুশি করার জন্য আমাকে পরে আজীবনের জন্য ফোবানা থেকে বহিস্কার করা হয়। যার ফলে ফোবানা এক্সিকিউটিভ কমিটি বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
সাংবাদিক পেশায় জড়িত থাকার ফলে ওয়াশিংটনের শীর্ষস্থানীয় ফেডারেল ক্রিমিনাল সাজাপ্রাপ্ত আসামী মোহাম্মদ আলমগীরের বিরুদ্ধে আমি সব সময় সোচ্চার ছিলাম। ২০১৯ সালে ৩৩তম ফোবানা সম্মেলনের সময় আমেরিকান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ সোসাইটি (এবিএফএস) ৩৫তম ফোবানা হোষ্ট করবার জন্য নির্বাচনে দাঁড়ালে মোহাম্মদ আলমগীর বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসি (বাগডিসি) নিয়ে এবিএফএস এর বিরুদ্ধে নির্বাচন করে পরাজিত হয় যা আপনারা সবাই অবগত আছেন। এই পরাজয়কে ফেডারেল ক্রিমিনাল মোহাম্মদ আলমগীর সহজভাবে মেনে নিতে পারেন নি। তাই পরাজয়ের এক ঘন্টার মধ্যে মোহাম্মদ আলমগীর ও তাঁর লোকেরা অন্য ফোবানায় গিয়ে যোগদান করে এবং দীর্ঘ প্রায় ছয় মাস ধরে এই ফোবানার বিরুদ্ধে লাগাতার মিথ্যাচার করে। তাদের এই মিথ্যাচারের সকল প্রকার ডকুমেন্ট ছবি ভিডিও সরবরাহ করার পরও ফোবানা এক্সিকিউটিভ কমিটি ঐ সকল ব্যক্তি ও সংগঠনের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা না নিয়ে বরং পুরস্কৃত করে। তাদেরকে ফোবানায় ফিরিয়ে আনে এবং ভোটাধীকার প্রদান করে। ফলে এই পরাজিত গোষ্ঠী ৩৫তম ফোবানাকে বাঞ্চাল করার জন্য মাঠে নেমে পড়ে।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
বর্তমান ফোবানা এক্সিকিউটিভ কমিটি একটি অপরাধী চক্রের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে। ফোবানার বেশ কয়েজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তারা যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন কারনে বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটেছেন। এক্সিকিউটিভ কমিটির সেক্রেটারি মাসুদ চৌধুরীও একজন ফেডারেল জেল খাটা ব্যক্তি। মোহাম্মদ আলমগীরের মত বিভিন্ন অপরাধের সাথে যুক্ত থাকার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কোর্ট কর্তৃক তাঁর শস্তি হয় এবং তিনি জেল ও খাটেন। এই অপরাধী চক্র ফোবানাকে কব্জা করার লক্ষ্যে উদ্দেশ্যমুলক ভাবে ৩৫তম ফোবানা সম্মেলনের ক্ষতি করবার চেষ্টা করেছে নানা ভাবে। শেষ পর্যন্ত তারা সম্মেলন বাঞ্চাল করতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু তারা থেমে থাকেনি। যার পরিনতিতে কোন অপরাধ কোন সঠিক অভিযোগ ছাড়াই ফোবানা থেকে উদ্দেশ্যমুলক ভাবে আমাকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করা হয়েছে।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
৩৫তম ফোবানায় জড়িত হবার পর থেকে আমি কোন আর্থিক লেনদেনের সাথে জড়িত হইনি। এমনকি ফোবানার কোন ব্যাংক একাউন্টে আমার কোন নাম বা আমার কোন এক্সেস ছিলনা। কোন ব্যক্তি বা সংগঠন কারো কাছ থেকে আমি কোন অর্থ সংগ্রহ করিনি। সদস্য সচিব হিসাবে কেউ আমাকে চেক দিলেও সেটি ফোবানার নামে দিয়েছে। আমি সেই চেক ফোবানার ট্রেজারার ড. ফায়জুল ইসলাম অথবা কনভেনার জি আই রাসেলকে হস্তান্তর করেছি। এমন কোন ব্যক্তি বা সংগঠন খুঁজে পাবেন না যারা আমার বিরুদ্ধে সরাসরি কোন অভিযোগ এনেছে। আমার বিরুদ্ধে কোন ব্যক্তি বা সংগঠন কারোই কোন অভিযোগ নেই। তাই ভিত্তিহীন মনগড়া অভিযোগ সাজিয়ে এবং উদ্দেশ্যমুলক ভাবেই আমাকে শোকজ করা হয়েছে অপরাধী চক্রকে খুশি করবার জন্য যা ফোবানার ইতিহাসে বিরল।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
ফোবানার জন্য যদি কোন ব্যাংক একাউন্ট খোলা হয়ে থাকে সেই একাউন্ট ট্রেজারার ড. ফায়জুল ইসলাম অথবা কনভেনার জিআই রাসেল এককভাবে নিয়ন্ত্রন ও পরিচালনা করেছেন। শুরু থেকেই আমি বলেছি আমি ফোবানায় কোন আর্থিক লেনদেনের সাথে জড়িত হবনা এবং জড়িত হইও নি। আমি শুধুমাত্র প্রোগ্রাম লেভেলে কাজ করেছি। ফোবানা সম্মেলনের জন্য আমার খরচাকৃত অর্থও আমি ফেরত পাইনি এখন পর্যন্ত।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
২০১৭ সাল থেকে ওয়াশিংটনের ফেডারেল ক্রিমিনাল মোহাম্মদ আলমগীর ফোবানার চেয়ারম্যান হবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বারবার তিনি পরাজয় বরণ করছেন। আর এজন্য তিনি সব সময় আমাকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। ফোবানার বর্তমান চেয়ারম্যান রেহান রেজা ওয়াশিংটনের ফেডারেল ক্রিমিনাল মোহাম্মদ আলমগীরের একজন অন্ধভক্ত একথা আমদের সবার জানা। বিশেষ করে সাংবাদিক মহল একথা জানেন। রেহান রেজা এবার ফোবানার চেয়ারম্যান হবার পর থেকে অপরাধীচক্র আরো শক্তিশালী হয় এবং ফোবানা থেকে বিরুদ্ধ পক্ষকে কিভাবে দমন বা বের করে দেয়া যায় সেই চেষ্টায় লীপ্ত ছিল। আর এই কারনেই কোন প্রকার অভিযোগ না থাকা সত্বেও আমাকে উদ্দেশ্যমুলক ভাবে আজীবনের জন্য বহিস্কার করা হয়েছে। ফোবানার ভিতরে ঘাপটি মেরে থাকা অপরাধী চক্রের একটাই লক্ষ্য মোহাম্মদ আলমগীরকে যেকোন মূল্যে ফোবানার চেয়ারম্যান বানানো এবং ফোবানাকে অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিনত করা।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
ফোবানার এক্সিকিউটিভ কমিটি তৈরি হবার পর থেকেই ফোবানা হোষ্ট কমিটির কনভেনার ও সদস্য সচিব অটোমেটিক্যালি ফোবানা এক্সিকিউটিভ কমিটির আউটষ্ট্যান্ডিং মেম্বার হিসাবে এক্সিকিউটিভ কমিটিতে অর্ন্তভুক্ত হয়। কিন্তু আপনারা জেনে স্তম্ভিত হবেন যে, শুধুমাত্র আমাকে টার্গেট করে এই অপরাধী চক্র তাদের পথ সুগম করার জন্য এ বছর থেকে স্বাগতিক কমিটির সদস্য সচিবকে আউটষ্ট্যান্ডিং মেম্বার হওয়া থেকে বাদ দেয়। শুধুমাত্র হোষ্ট কমিটির কনভেনারই আউটষ্ট্যান্ডিং মেম্বার হতে পারবে যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
ফোবানা একটি ব্যর্থ সংগঠনে পরিনত হয়েছে। গুটিকতেক অপরাধী চক্রের সদস্যের হাতিয়ারে পরিনত হয়েছে। ফোবানা একটি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তিতে পরিনত হয়েছে। ফোবানা সম্মেলন পাবার পর থেকেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকি ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবার জন্য। যার ফলে ফোবানার কনভেনার জিআই রাসেল এবং সদস্য সচিব শিব্বীর আহমেদকে নিয়ে ২০১৯ সালের ফোবানার পর থেকে একের পর এক ষড়যন্ত্র শুরু করে ফোবানার ভিতরে ঘাপটি মেরে থাকা স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ও অপরাধীচক্র। কিন্তু তাদের সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে ফোবানার ৩৫ বছরের ইতিহাসে ৩৫তম ফোবানা সম্মেলনে প্রথমবারের মত জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে মূলমঞ্চে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। ট্রিবিউট টু দ্যা ফাদার অব দ্যা ন্যাশন, জন্মদিনের কেক কাটা, মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাধীনতা পদক প্রদান ও সম্মাননা, মুক্তিযুদ্ধের উপর সেমিনার, মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র প্রদর্শন, মুক্তিযুদ্ধেও গীতিআলেখ্য, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও দর্শন নিয়ে আলোচনা ও সেমিনার সহ অনুষ্ঠিত হয়েছে নানা অনুষ্ঠান যা স্বাধীনতা বিরোধীদের ও অপরাধী চক্রের ভীত কাঁপিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ওরা থেমে থাকেনি। রাজাকার আলবদরদের মত ওরা একাট্টা হয়েছে। এই ফোবানার বেশির ভাগই স্বাধীনতা বিরোধী ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি। আর যে কয়েকজন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের তারা তাদের লোভ আর স্বার্থের কারনে ঐ অপরাধী চক্রের হাতের ক্রিড়নক ও পুতুলে পরিনত হয়েছে।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
মোহাম্মদ আলমগীর, মাসুদ চৌধুরী গং ৩৫তম ফোবানাকে বাঞ্চাল করার জন্য স্পন্সর বাতিল অতিথি আমন্ত্রনে বাধা প্রদান সহ হেন কোন কাজ নেই যা তারা করেনি। আর এদের সাথে যুক্ত হয়েছিল স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি। কেড়ে নিতে চেয়েছিল ফোবানা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা তারা পারেনি বিধায় সম্মেলনের পর আমাকে টার্গেট করে মনগড়া সাজানো অভিযোগ এনে আমাকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করেছে যা অত্যন্ত হাস্যকর। শোকজের চিঠি (ডকুমেন্ট ০১ ও ৪) দেখলেই তা সহজেই অনুমেয়।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
ফোবানার ৩৫ বছরের ইতিহাসে ভোটারের সংখ্যা মাত্র ৬০/৬২টি। আর এর বেশির ভাগই নাম সর্বস্ব। যুক্তরাষ্ট্রের বড় কোন সংগঠন এর সাথে যুক্ত নয়। কিছু সংখ্যক অপরাধী চক্র ফোবানাকে তাদের হাতের পুতুল বানানোর জন্য ইচ্ছেমত ফোবানার কার্যবিধি পরিচালনা করে আসছে এবং বর্তমানে এটি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী বঙ্গবন্ধু বিরোধী অপরাধীদের একটি স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে।
শুভেচ্ছান্তে
শিব্বীর আহমেদ
সদস্য সচিব, ৩৫তম ফোবানা সম্মেলন ২০২১