বাংলাদেশ দূতাবাস ব্রাসিলিয়া যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের ৫১তম বার্ষিকী উদযাপন করে। দিবসটি উপলক্ষ্যে ১৭ এপ্রিল সকালে দূতাবাসে আয়োজিত বিশেষ আলোচনা সভায় দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে সূচিত এ অনুষ্ঠানের শুরুতে সকল শহীদ এবং ১৫ আগষ্ট নির্মম হত্যাকান্ডে নিহত সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত্ব বাণী পাঠ করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী সকল শহীদ, জাতীয় চার নেতা, ও ১৫ আগষ্ট নির্মম হত্যাকান্ডে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকলের রূহের মাগফেরাত কামনা করে এবং বাংলাদেশের ক্রমঅগ্রসরমান আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। অনুষ্ঠানে ‘‘মুজিবনগর- বাংলাদেশের প্রথম রাজধানী” শীর্ষক একটি প্রামান্যচিত্র প্রদর্শিত হয় যা উপস্থিত সকলকে দিবসটির তাৎপর্য অনুধাবনে সহায়তা করে।
আলোচনা পর্বে দূতাবাসের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মহান মুক্তিযুদ্ধে কূটনৈতিক এবং সামরিক ক্ষেত্রে মুজিবনগর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রতি আলোকপাত করেন। এরপর ব্রাজিলে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন। রাষ্ট্রদুত তাঁর বক্তব্যে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয়ে বঙ্গবন্ধুর অসীম অবদানের কথা স্মরণ করে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন জাতি হিসেবে আমরা সৌভাগ্যবান বঙ্গবন্ধুর মতো সকল গুণে গুণান্বিত বিরল নেতৃত্ব গুণাবলী এবং সাংগঠনিক দক্ষতা সম্পন্ন নেতা পেয়ে। তিনি বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে মুজিবনগর সরকারকে নেতৃত্ব প্রদানকারী জাতীয় চার নেতার প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে বিশ্ব জনমতকে প্রভাবিত করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনকে ত্বরান্বিত করতে মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা সম্পর্কে তিনি আলোচনা করেন। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা বাস্তব রূপ লাভ করে এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে বলে তিনি উল্লেখ করেন। রাষ্ট্রদূত মহান মুক্তিযুদ্ধে কূটনীতিকদের অবদানের কথাও বিশেষভাবে স্মরণ করেন।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের সকলকে স্মরণ করিয়ে দেন যে দক্ষিণ আমেরিকায় বাংলাদেশের একমাত্র দূতাবস হিসেবে ব্রাসিলিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সকলের অনেক দায়িত্ব। তিনি দূতাবাসের সকলকে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয়ে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক খাতের উন্নয়ন সম্পর্কে ব্রাজিলসহ দক্ষিণ আমেরিকার জনগণের মাঝে তুলে ধরার আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত সকলকে স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যাবার আহ্বান জানান।