বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারি লিমিটেডের সঙ্গে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের নেতৃত্বে পাঁচ ব্যাংকের প্রায় তিন হাজার ৩২ কোটি টাকার ঋণচুক্তি সই হয়েছে।
গত ৩০ মার্চ রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু হোটেলে এ চুক্তি সই অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারি লিমিটেডের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর এবং অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহম্মদ শামস্-উল ইসলাম, সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. আতাউর রহমান প্রধান, জনতা ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ, রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী আলমগীর নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তি সই করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।
অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহম্মদ শামস্-উল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রুপ এবং অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, সেদিন যদি ব্যাংকগুলো এগিয়ে না আসত, তাহলে আজ আমরা এই অবস্থায় আসতে পারতাম না। বসুন্ধরা শুধু টাকার জন্য ব্যবসা করে না, আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ করি। দেশটাকে ব্র্যান্ডিং করার চেষ্টা করি।
তিনি বলেন, আমাদের অনেক সম্ভাবনা আছে। উদ্যোগ নিতে হবে, বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রাইভেট ব্যাংকগুলোকে সব শিল্পায়নে এগিয়ে আসা উচিত। সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিদেশে টাকা পাচার বন্ধ করে দেশে বিনিয়োগ করতে হবে। তাহলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আরও বলেন, এই গোল্ড রিফাইনারি, আমি গ্যারান্টি দিতে পারি এটি আপনাদের গর্ব করার মতো প্রজেক্ট হবে। সবার আগে ধন্যবাদ দিতে হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে, কারণ এই করোনাকালে তিনি যদি ব্যাংক থেকে প্রণোদনা না দিতেন, তাহলে জিডিপিতে প্রভাব পড়ত। তার কারণে অর্থনীতি এত শক্তিশালী অবস্থায়।
বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, এই প্রজেক্ট বাস্তবায়নে আপনাদের অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ। আপনারা সবাই দোয়া করবেন, যাতে এই স্বপ্ন দ্রুত বাস্তবায়ন হয়।
জনতা ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ বলেন, বসুন্ধরা প্রতিটি ক্ষেত্রে ইনোভেশন করে। প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার এই প্রজেক্ট, এই স্বপ্ন এখন বাস্তবায়নের পথে। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি মাইলফলক হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমরাও গর্বিত। বাংলাদেশ স্বর্ণ রপ্তানি করবে, এটা গর্বের। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ অনেক এগিয়েছে, প্রত্যাশা আরও এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে এগিয়ে যাবে বসুন্ধরা গ্রুপ।
সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. আতাউর রহমান প্রধান বলেন, এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে সোনালী ব্যাংক নিজেদের ভাগ্যবান মনে করছে। এই উদ্যোগ শুধু স্বর্ণ উৎপাদন করেই থেমে থাকবে না, আমরা রাষ্ট্র্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো বসুন্ধরার পাশে থাকব। অবশ্যই এই প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হবে, এই প্রত্যাশা রাখছি।
অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহম্মদ শামস্-উল ইসলাম বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠান বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গর্বিত সংযোজন। আজ বাংলাদেশের যত উন্নতি হচ্ছে তার পেছনে আছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরকারি ব্যাংকের অবদান।
রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, আমরা বসুন্ধরার এই উদ্যোগের পাশে আছি। গোল্ড রিফাইনারিতেও বসুন্ধরা সফল হবে।
বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী আলমগীর বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারি লিমিটেডকে শুভকামনা জানান। তিনি বলেন, বসুন্ধরার নতুন এই উদ্যোগ দেশের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি করবে।
বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে দেশে নির্মিত হচ্ছে সর্বপ্রথম স্বর্ণ পরিশোধনাগার প্ল্যান্ট। পাঁচ হাজার ১৫৭ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজধানীর ঢাকা-পূর্বাচল ৩০০ ফুট হাইওয়ে সংলগ্ন বসুন্ধরা-ভাটারায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারি লিমিটেড।
দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ স্বর্ণ পরিশোধনাগার এ প্রকল্পে সিন্ডিকেশন ব্যবস্থার আওতায় তিন হাজার ৩২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ফান্ড রাইজকরণে লিড অ্যারেঞ্জার ও এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড। এ ছাড়া সিন্ডিকেট হিসেবে রাষ্ট্র্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, রূপালী ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। প্রকল্পটি ২০২৩ সালে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করবে।