ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ বিষয়ক বাণিজ্য দূত রুশনারা আলী এমপি বলেছেন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক খাতে বাংলাদেশের বেশ সাফল্য রয়েছে। তবে এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় খুবই জরুরি। গত ২৯ মার্চ ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) গুলশান সেন্টারে দেশের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় রুশনারা আলী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণ বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। দুদেশের বাণিজ্য আরো সম্প্রসারণে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের পার্টনারশিপ সুদৃঢ়করণের ওপর তিনি জোর দেন। সেইসঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিরসনে সক্ষম হলে স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে বলেও মনে করেন তিনি।
রুশনারা আলী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন দেশটির দারিদ্র্য বিমোচনে কতটা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে, সেটা নিরূপণে সকলকে সচেষ্ট থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ২০২১ সালে দু‘দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৪.১১ বিলিয়ন ইউএস ডলার এবং বাংলাদেশে ব্রিটেনের বিনিয়োগ প্রায় ২.৫৩ বিলিয়ন ডলার। তিনি জানান, ব্রিটেন বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য এবং আশা প্রকাশ করেন, সামনের দিনগুলোতে রপ্তানির এ ধারা আরো বৃদ্ধি পাবে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্রিটেনের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে জাহাজ নির্মাণ, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, জুতা, হালকা-প্রকৌশল, মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। ডিসিসিআই সভাপতি যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি পণ্য শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার আগামী ২০২৯ সালের পরও বর্ধিতকরণের প্রস্তাব করেন। এছাড়াও ব্রিটেনে রপ্তানির ক্ষেত্রে রুল অব অরিজিন সুবিধাকে আরো সহজীকরণ ও বর্ধিতকরণেরও প্রস্তাব করেন, সেই সঙ্গে কৃষি এবং খাদ্যপণ্য রপ্তানি সম্প্রসারণে বিদ্যমান ‘টেকানিক্যাল ব্যারিয়ার্স টু ট্রেড (টিবিটি)’ হ্রাসের আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটেনের হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন এ সময় বলেন, বেসরকারি খাত বাংলাদেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সেবা ও আর্থিক খাতে ব্রিটেনের দক্ষতা রয়েছে, তবে শিল্পখাতের পণ্যের নতুন নতুন ডিজাইনে বাংলাদেশিদের দক্ষতা উন্নয়নে ব্রিটেন বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামের মিরসরাইতে স্থাপিত অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে এবং আশা প্রকাশ করেন, ব্রিটিশ উদ্যোক্তারা সেখানে বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন।
অ্যাপেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, বাংলাদেশের পোশাক খাত, ওষুধ শিল্পসহ অন্যান্য শিল্পে বেশ দক্ষতা থাকলেও ডিজাইনিংয়ের ক্ষেত্রে বেশ পিছিয়ে রয়েছে। তাছাড়া ওষুধ শিল্পে বাংলাদেশ এখন অনেক ভালো করছে। তিনি এখাতে ব্রিটেনের ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এ সময় এসবিকে টেক ভেঞ্চারের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির, বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মিরান আলী এবং ইউনাইটেড গ্রুপের গ্রুপ চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মইনউদ্দিন হাসান রশিদ উপস্থিত ছিলেন।