• রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:২৬ অপরাহ্ন

ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে ভিসা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস

Reporter Name / ১২১ Time View
Update : সোমবার, ৯ মে, ২০২২

বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে ভিসা সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন চট্টগ্রামস্থ ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন। দ্য চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং ভারতীয় হাইকমিশন চট্টগ্রাম’র উদ্যোগে ‘ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ আশ্বাস দেন। গত ৩১ মার্চ আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের চেম্বার কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 

চেম্বারের সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীরের সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন চেম্বারের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ, চেম্বার পরিচালক মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), অঞ্জন শেখর দাশ ও মো. শাহরিয়ার জাহান, বিএসআরএম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমীর আলীহুসেইন, চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুুজুল হক শাহ, চেম্বার সেক্রেটারি ইনচার্জ প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারুক, রিলায়েন্স শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাশেদ, শান ট্রেডিং করপোরেশনের পরিচালক মো. হাসান, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের হেড অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল সৈয়দ মোহাম্মদ নাসিম, আরামিট লিমিটেডের ডিজিএম (সিমেন্ট) একেএম মারুফ, ম্যানগো লাইন লিমিটেডের ম্যানেজার হাবিবুর রহমান ও বাংলাদেশ সেন্টার অব এক্সিলেন্স’র প্রধান নির্বাহী ওয়াসফি তামিম। 

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজকিরণ কানাগালা ও ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনের দ্বিতীয় সচিব (কমার্স) ড. প্রমেশ বাসল। 

ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগে সহযোগিতার লক্ষ্যে এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। যাতে দু’দেশের ব্যবসায়ীরা খোলামনে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত মতবিনিময় করতে পারেন। তিনি ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সেক্টর নিয়ে এ ধরনের কর্মসূচি আয়োজনের মধ্য দিয়ে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে বিভিন্ন জটিল সমস্যার সমাধান এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক পরিবেশে উন্নয়ন করা সম্ভব হবে বলে প্রত্যাশা করেন। 

চেম্বারের সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণে চারটি মূল বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বেসরকারি খাতের আরো বেশি অংশগ্রহণের মাধ্যমে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে উন্নয়ন, উভয়দেশের মধ্যে সৃষ্ট যেকোনো ব্যবসায়িক বিরোধ নিষ্পত্তিতে চট্টগ্রামে চিটাগাং চেম্বার এবং সিআইআই’র যৌথ উদ্যোগে একটি বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি কেন্দ্র স্থাপন, ব্যবস্থাপনাগত সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ‘নলেজ কোঅপারেশন’ এবং সম্মিলিত উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে নতুন প্রজন্মের অংশগ্রহণ ও অংশীদারত্ব নিশ্চিত করা। 

হাই কমিশনের দ্বিতীয় সচিব (কমার্স) ড. প্রমেশ বাসল তার প্রবন্ধে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলমান সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্বের ওপর বিস্তারিত আলোচনা করেন। 

কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজকিরণ কানাগালা তার প্রবন্ধে জিটুজি পর্যায়ের অংশীদারত্বের উদাহরণ অনুকরণপূর্বক উভয়দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে অংশীদারত্ব আরো জোরদার করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। 

ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ বলেন, বে-টার্মিনাল, কর্ণফুলী টার্মিনাল ও গভীর সমুদ্রবন্দরসহ চট্টগ্রামে চলমান অবকাঠামো উন্নয়নের সুবিধা নিতে পারে ভারত। 

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ভিশন বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম থেকে উত্তরাঞ্চলে যাওয়ার সড়ক পথের উন্নয়ন, রেলওয়ে যোগাযোগ এবং নৌ-পথের যোগাযোগের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন তিনি।

চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ বাংলাদেশ ও ভারতের টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল শিল্পে সমন্বিতভাবে সাপ্লাই চেন গড়ে তোলাকে প্রাধান্য দিয়ে সম্পূরক সামর্থ্য ও সক্ষমতার সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন। 

চেম্বার পরিচালক মো. শাহরিয়ার জাহান উভয় দেশের শিল্পোদ্যোক্তাদের নিয়ে আরো বেশি মতবিনিময় সভা আয়োজনের মাধ্যমে পিপল টু পিপল যোগাযোগ বৃদ্ধি বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে বলে মন্তব্য করেন। 

বিএসআরএম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমীর আলীহুসেইন আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির আহ্বান জানান। তিনি সাফটা সার্টিফিকেশন ডিজিটালাইজ করা, বাংলাদেশি পণ্যের ওপর এন্ট্রি ড্রাম্পিং ট্যারিফ প্রত্যাহার করা, বিএসটিআই সনদের স্বীকৃতি প্রদান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলের বাংলাদেশি পণ্যের ব্যবহার এবং মেডিক্যাল ও ট্রানজিট ভিসা সহজীকরণের অনুরোধ জানান। 

চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুুজুল হক শাহ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সহযোগিতার ভিত্তিতে আঞ্চলিক বাণিজ্য বৃদ্ধির আহবান জানান। 

প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারুক বলেন, চিটাগাং চেম্বারের ছোট বড় সব মিলিয়ে প্রায় ৮ হাজার সদস্য রয়েছেন। এই চেম্বার প্রতিষ্ঠালগ্নœ থেকে সফলতার সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সেতুু হিসেবে কাজ করছে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে বিভিন্ন নীতি সংক্রান্ত ডায়ালগ আয়োজন করে থাকে। এমনকি মহামারির সময়ে চেম্বার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে এবং প্রায় ২৫ হাজারেরও বেশি রপ্তানি কনসাইনমেন্ট প্রেরণে সার্টিফিকেট অব অরিজিন ইস্যুর মাধ্যমে সহায়তা করেছে।  

শান ট্রেডিং করপোরেশনের মো. হাসান ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বর্তমানে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং ব্যবসায়িক বিরোধ নিষ্পত্তিতে বিশেষ গুরুত্ব দেন। রিলায়েন্স শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাশেদ কলম্বো বন্দরের পরিবর্তে ভারতের পূর্ব অথবা পশ্চিমাংশের সঙ্গে সরাসরি চট্টগ্রামের মধ্যে বড় জাহাজ চলাচলের প্রস্তাব করেন। এতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে সময় এবং খরচ কমবে বলে অভিমত দেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category