বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চট্টগ্রাম বন্দর আরও কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের ‘চট্টগ্রাম বন্দর দিবস’ উপলক্ষে সম্প্রতি দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, আমি আশা করি, চট্টগ্রাম বন্দরের সামগ্রিক উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবেন। সরকারের রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্র্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চট্টগ্রাম বন্দর আরও কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
চট্টগ্রাম বন্দর দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বন্দর কর্তৃপক্ষ, বন্দর ব্যবহারকারী, কর্মকর্তা-কর্মচারী-শ্র্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, সম্প্রতি জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি দিয়েছে। আমাদের এ অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি তথা বৈদেশিক বাণিজ্য। বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সমুদ্রবন্দরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, উন্নত দেশ হয়ে ওঠার পথে এ যাত্রাকে আরও গতিশীল করতে আমরা স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। ৪০ বিলিয়ন ডলারের এসব অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ৬ দশমিক ১৬ কিলোমিটার পদ্মা সেতু নির্মাণ, ২ দশমিক ৪ গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, পায়রা সমুদ্রবন্দর, মাতারবাড়িতে কয়লা চালিত বৃহদাকার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রো রেল এবং এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ।
তিনি বলেন, এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমাদের আমদানির আয়তনও বেড়েছে বহুগুণে। আমদানিকৃত এসব পণ্য যথাযথ ব্যবস্থাপনায় গ্রহণ করা এবং সেগুলো যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে চট্টগ্রাম বন্দর।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দরের রয়েছে অপার সম্ভাবনা। আওয়ামী লীগ সরকার এ বন্দরকে একটি বিশ্বমানের বন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। স্বয়ংক্রিয় কন্টেইনার অপারেশন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সিটিএমএস এবং বন্দরে নিরাপদে জাহাজ যাতায়াত ও বহির্নোঙর অবস্থানকালীন জাহাজসমূহকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করার জন্য আধুনিক ভিটিএমআইএস চালু রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সামগ্রিক কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সুফল হিসেবে কোভিড-১৯ এর মতো ভয়াবহ অতিমারির মধ্যেও যুগোপযোগী ডিজিটালাইজেশন এবং দক্ষ জনবলকে কাজে লাগিয়ে ২৪/৭ অপারেশনাল ছিল চট্টগ্রাম বন্দর। সেই সাথে বে-টার্মিনাল ও মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণসহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের ফলে এ বন্দরের সক্ষমতা বহুগুণে বাড়বে। পার্শ্ববর্তী দেশসমূহকে ব্যবহারের সুবিধা দিতে এটিকে আরও আধুনিক ও আকর্ষণীয় বন্দর হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে আরও লাভবান হবে। ইতোমধ্যে ইউরোপের সাথে চট্টগ্রাম বন্দরের সরাসরি কন্টেইনার জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। এতে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের সময় ও অর্থের সাশ্রয় হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ১৩৫তম চট্টগ্রাম বন্দর দিবস উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। অর্থকণ্ঠ ডেস্ক