বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে দেশটিকে এ দেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকসহ বেশ কিছুু পণ্য সিঙ্গাপুরে রপ্তানি হয়। এই মুহূর্তে উভয় দেশের বাণিজ্য বাড়ানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা পারস্পরিক দেশ সফর করে পণ্য নির্বাচন ও বাণিজ্য করতে পারেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের নন-রেসিডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ডিরেক লোহের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এসব কথা বলেন টিপু মুনশি।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সিঙ্গাপুরে ১১৬ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন ইউএস ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। একই সময়ে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর থেকে আমদানি করেছে ২ হাজার ৪৬৮ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য। তিনি বলেন, বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুরে রপ্তানি বাড়াতে চায়। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি বাংলাদেশ পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষিজাত পণ্য, ঔষধ এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।
বাংলাদেশে এখন অনেকেই বিনিয়োগ করছে জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের গুরুত্বপূর্ণ ১০০টি স্থানে স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তুলছেন। এদের মধ্যে অনেকগুলোর কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। পৃথিবীর অনেক দেশ এরই মধ্যে এখানে বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে এসেছে। সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং এনার্জি ও অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ করতে পারে। এতে তারা লাভবান হবেন।
বাংলাদেশ ১৭ কোটি মানুষের একটি বড় বাজার। এখানে মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে, ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। এখানে পণ্য উৎপাদন করে সহজেই অন্য দেশে রপ্তানি করা সম্ভব। বাংলাদেশ সরকার এখন বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় ডিরেক লোহ বলেন, সিঙ্গাপুর ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। নৌপথে পণ্য পরিবহনে সিঙ্গাপুর বাংলাদেশকে আরও সহযোগিতা দিতে পারে। এক্ষেত্রে পণ্যের অবাধ পরিবহন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে লজিস্টিকস, বন্দর ব্যবস্থাপনা ও শুল্ক কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম সহজ করতে সহায়তা দেওয়া সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, সিঙ্গেল উইন্ডো বাস্তবায়নে সিঙ্গাপুরের পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড সহযোগিতা করতে পারে। এছাড়া সেমি কন্ডাক্টর উৎপাদনে সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। এতে পণ্য পরিবহনে ব্যয় কমানো যাবে। সিঙ্গাপুর বিভিন্ন শিল্পের উন্নত কাঁচামাল বাংলাদেশে সরবরাহ করে।
ডিজিটাল অবকাঠামো ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। হালাল পণ্য রপ্তানিতে সিঙ্গাপুরের সার্টিফিকেশনসহ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো বিদ্যমান। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অভিজ্ঞতার আলোকে সহযোগিতা করা সম্ভব। এজন্য সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের যোগাযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সভায় ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে উভয় দেশের মধ্যে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রতিষ্ঠা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সফর বিনিময় করতে একমত পোষণ করেন অংশগ্রহণকারীরা। এ সময় উভয় দেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।অর্থকণ্ঠ ডেস্ক