• রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫৬ অপরাহ্ন

‘করপোরেট কর কমানোয়
বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে’

অর্থকণ্ঠ প্রতিবেদক / ৭২ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০২২

প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট কর হার কমানোর ফলে বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে, কর্মসংস্থান বাড়বে। প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং রপ্তানি বহুমুখীকরণ সম্প্রসারিত হবে। তবে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সে অনুপাতে ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়-সীমাও বাড়ানো প্রয়োজন। গত ৯ জুন বাজেট পরবর্তী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন দ্য চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম।

মাহবুবুল আলম, সভাপতি দ্য চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি


চেম্বার সভাপতি বলেন, এ বাজেট করোনা মহামারি পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া এবং যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির কারণে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সময়োপযোগী। বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেওয়া হবে। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ বাবদ ৭৩ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে যা সরকারের বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। ঘাটতি মোকাবিলায় ক্রমবর্ধমান ঋণের ক্ষেত্রে সরকারের সচেতন হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করিতিনি বলেন, বাজেটে পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানির কর হার ২২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ, পাবলিকলি ট্রেডেড নয় এমন কোম্পানির কর ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং এক ব্যক্তি কোম্পানির ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২২ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে, যা বিনিয়োগ বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক হবে।
তিনি আরও বলেন, ট্রেডিং পণ্য সরবরাহের ওপর উৎসে কর ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে যা ইতিবাচক। ম্যানুফ্যাকচারারদের নিকট কাঁচামাল সরবরাহে উৎসে কর ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ করা হয়েছে, যা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের মূল্য হ্রাসে ভূমিকা রাখবে। পারকুইজিট খাতে অনুমোদনযোগ্য ব্যয়সীমা ৫ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। মোট কর্মচারীর ১০ শতাংশ বা ২৫ জনের অধিক প্রতিবন্ধী বা তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের নিয়োগ করা হলে প্রদেয় করের ৫ শতাংশ রেয়াত দেওয়া হবে, যা প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের নিয়োগের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক।
তিনি বলেন, এক বা একাধিক উৎপাদনস্থালের ক্ষেত্রে কম্পিউটারাইজড অটোমেটেড পদ্ধতিতে হিসাবরক্ষণের শর্তে কেন্দ্রীয় নিবন্ধন গ্রহণ করার বিধান আমরা স্বাগত জানাই। উৎসে ভ্যাট কর্তনের ক্ষেত্রে সরবরাহকারী কর্তৃক হ্রাস সংক্রান্ত সমন্বয় গ্রহণের সময়সীমা ২ কর মেয়াদ হতে বৃদ্ধি করে ৪ কর মেয়াদ করা হয়েছে যা ভ্যাটের ক্ষেত্রে ইতিবাচক।
চেম্বার সভাপতি বলেন, দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজ চলাচল উৎসাহিত করতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত করমুক্ত করা হয়েছে, যা এই সেক্টরে নতুন বিনিয়োগে আশা যোগাবে। এছাড়া নির্ধারিত তারিখে মূসক বা টার্নওভার কর দাখিলপত্র পেশ করতে না পারার জরিমানা ১০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫ হাজার টাকা এবং ব্যর্থতা বা অনিয়মের ক্ষেত্রে রাজস্বের সমপরিমাণের অর্ধেক জরিমানা প্রস্তাব করা হয়েছে যা ব্যবসাবান্ধব। আইসিটি খাতে স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তাদের টার্নওভার কর হার শূন্য দশমিক ৬ শতাংশের পরিবর্তে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ করা এই উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করবে। বিনিয়োগজনিত আয়কর রেয়াতের হার রেয়াতযোগ্য বিনিয়োগের ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, স্টিলজাত পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত এইচ আর কয়েল এবং অন্যান্য কাঁচামাল আমদানিতে কর হার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা, স্বর্ণ আমদানিতে অগ্রিম কর বিলোপ এসব পণ্যের মূল্য হ্রাস করবে। তবে ব্যাংক সুদের উৎসে করহার কোম্পানি করদাতার জন্য ১০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করা এবং রপ্তানিকৃত পণ্যদ্রব্যের উৎসে কর শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। এর পরিবর্তে ১ শতাংশ করা হয়েছে যা পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে। তৈরিপোশাক শিল্পের মতো অন্য সব রপ্তানিমুখী শিল্পের ক্ষেত্রেও একই হারে কর ধার্য করার ফলে রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। একই মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সরবরাহের বিপরীতে ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেনের বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার করা এবং মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেন করলেও রেয়াত প্রদান ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড সহজ করবে।
তিনি বলেন, ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার আমদানিতে ১০ শতাংশ এবং ল্যাপটপ ও কম্পিউটারে ব্যবহৃত টোনার, প্রিন্টার ইত্যাদি আমদানিতে ১৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করা হয়েছে। দেশে ২ হাজার ৫০০ সিসি পর্যন্ত মোটরগাড়ি উৎপাদনে ২০৩০ সালের জুন পর্যন্ত কর অব্যাহতি দেশীয় শিল্পকে উৎসাহিত করবে। কৃষিপণ্য, ফিশ ও পোল্ট্রি ফিড, পোল্ট্রি ফার্মের যন্ত্রপাতি, চিনি, ইস্পাতের কাঁচামাল, কাগজ ও কাপড় ইত্যাদি পণ্যের শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে। কোল্ড স্টোরেজের চিলার আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা, রেস্টুুরেন্ট ব্যবসায়ীদের জন্য ভ্যাট ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব উদ্যোগে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে উল্লিখিত পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে মনে করেন চেম্বার সভাপতি।অর্থকণ্ঠ প্রতিবেদক


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category