খাদ্য শিল্পে বিশ্বের উজ্জ্বল বাংলাদেশি তারকাদের একজন অলি খান এমবিই (Oli Khan MBE), যিনি এক সাথে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি Onion Bhaji -র জন্যে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড সৃষ্টি করে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন। তাঁর এই সাফল্য বিশ্বের সর্ববৃহৎ মিডিয়াগুলো যেমনBBC, CNN, ITV, FT, SKY News এবং Guardian তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়ে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছে। এটি বাংলা ভাষাভাষী বিশ্বের বাংলাদেশ কমিউনিটির জন্যে আনন্দের সংবাদ। অলি খান এমবিই UK Bangladesh Catalysts of Commerce & Industry (UKBCCI)-এর
একজন স্বনামধন্য পরিচালক এবং লন্ডন রিজিওন-এর প্রেসিডেন্ট। তিনি British Bangladeshi Business Forum এর প্রতিষ্ঠাতা এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি যুক্তরাজ্যে মৌলভীবাজার ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল(MDC) -এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রেসিডেন্ট। তিনি BCA-এর সাবেক মহাসচিব।
বিশ্বখ্যাত রন্ধন তারকা অলি খান একজন বিশিষ্ট রোটারিয়ান। তিনি ২০১৬ সাল থেকে রোটারি ক্লাবের সাথে সম্পৃক্ত। তিনি ২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে একজন সম্মানিত রোটারিয়ান হিসেবে Paul Harris Fellowe. তিনি AgroEuropa Super Pollus King Pollo এর সাবেক ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডার হিসেবে ইউরোপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন ২০১৯ সাল থেকে।
আত্মপ্রত্যয়ী ও সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিত্ব অলি খান এমবিই ২০১৫ সাল থেকে লন্ডনের বাংলাদেশ সেন্টার ও লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্য। তিনি ২০১৪ সাল থেকে যুক্তরাজ্য Royal Society of Arts -এর একজন Fellow হিসেবে সম্মানিত। তিনি ২০০৯ সাল থেকে Restaurant & Takeaway Innovation Expo-এর জীবন সদস্য। বিশ্বের সুপ্রতিষ্ঠিত রন্ধন শিল্পবিদ অলি খান এমবিই
এর একজন কী নোট স্পিকার। তিনি ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত Woolenwick Infant and Nursery School-এর গভর্নর হিসেবে ব্যাপক অবদান রেখেছেন।
আলোকিত ও জননন্দিত রন্ধন তারকা অলি খানের জন্ম মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার পাঠানটুলা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। তাঁর পিতা হাজী মো: আইয়ুব আলী খান ছিলেন একজন সমাজসেবক।
অলি খান তাঁর কর্ম সাফল্য এবং সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় ব্রিটিশ এম্পায়ার কর্তৃক মেম্বার অব ব্রিটিশ এম্পায়ার (এমবিই) পদকে ভূষিত হবার গৌরব অর্জন করেছেন। লন্ডনের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে অলি খান এমবিই যথেষ্ট আলোকিত এবং সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশিদের যে কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনে তিনি সহায়তা প্রদান এবং নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেন। তিনি ইউনিভার্সিটি অব লিঙ্কনসহ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অতিথি লেকচারার হিসেবে বক্তব্য রাখার জন্যে আমন্ত্রণ পেয়ে থাকেন। এতে করে অংশগ্রহণকারীরাও বাংলাদেশ সম্পর্কে জানার সুযোগ পায়।
অলি খান এমবিই, এফআরএসএ এবং পিএইচএফ মনে করেন- সাফল্যের জন্যে জরুরি হচ্ছে কঠিন পরিশ্রম; তবে তার সাথে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও পরিকল্পনা অবশ্যই প্রয়োজন। তিনি বলেন, ভাগ্যের চেয়ে কঠিন পরিশ্রমই অধিক গুরুত্বপূর্ণ। অলি খান চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে HRH Prince Charles এর কাছ থেকে MBE (Member of British Empire) পদক ও সম্মাননা অর্জন করেন। সেই অসাধারণ ও আবেগঘন মুহূর্তে পরম করুণাময় আল্লাহর নিকট অলি খান প্রার্থনা জানান যে, তিনি যেন আজীবন দেশের ও বিশ্বের মানুষের কল্যাণে কাজ করার সুযোগ পান। তিনি বলেন, কোনো কিছু প্রাপ্তির জন্যে নয়, ছোট বেলা থেকেই মানুষের কল্যাণে কাজ করার ব্যাপারে আনন্দিত হই। তিনি ২০২০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি একসঙ্গে ১৭৫.৪৮ কেজি (৩৮৬ পাউন্ড) পরিমাণের বিশ্বের সবচেয়ে অধিক পিঁয়াজ ভাজির রেকর্ডের জন্যে গিনেস বিশ্ব রেকর্ড করেন যা ইইঈ সরাসরি সম্প্রচার করেছে।
কোভিড-১৯ এর দুঃসময়ে একজন সমাজ সেবক হিসেবে অলি খান Luton Vaccination Center সহ লন্ডনের বিভিন্ন হাসপাতালে খাদ্য সহায়তা প্রদান ও সরবরাহ করেন। তিনি ডাক্তার, নার্স এবং স্বেচ্ছাসেবীদের নানাভাবে উৎসাহিত করেছেন, অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। বাংলাদেশ কমিউনিটির যারা খাদ্য সঙ্কটে ছিলেন তিনি খোঁজ নিয়ে তাদের ঘরে বিনামূল্যে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। অলি খান নিজ এলাকা মৌলভীবাজারের পাঠানটুলা গ্রামের পিছিয়ে পড়া মানুষদের স্বাস্থ্যও চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্যে ঢাকা থেকে চিকিৎসক নিয়ে এসে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করে থাকেন। তাঁর ভাইপো ডাক্তার লাকি ইসলাম এ ব্যাপারে সহায়তা করছেন। অলি খান এমবিই একজন সাদা মনের মানুষ। তিনি বাংলাদেশের গর্বিত সন্তানদের একজন। তিনি যে কোনো জায়গায় নিজ দেশকে তাঁর কর্মের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন।
বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়নে অলি খান গর্ব বোধ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মূল সম্পদ হচ্ছে দেশের জনগণ। এই জনগণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজের মাধ্যমে সে সব দেশের উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তিনি গর্বের সাথে উচ্চারণ করেন, অতীতের বাংলাদেশ ছিল অনেকটা দরিদ্র রাষ্ট্র। কিন্তু এখন তা নেই। বাংলাদেশ ক্রমাগত উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। নিজেদের অর্থেই পদ্মা সেতুর মতো বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম সেতু নির্মাণ করতে পারায় তিনি বেশ আনন্দিত, উৎফুল্ল। তবে তিনি জানান, বাংলাদেশের এই উন্নয়ন আরো অধিক হতো যদি দেশে দুর্নীতির পরিমাণ কমিয়ে আনা যেতো। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অল্প ক’জন দুর্নীতিবাজের জন্যে দেশের সুনাম নষ্ট ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন্ন হয়। অনিয়মকারী ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
অলি খান এমবিই লন্ডনে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণভাবে তুলে ধরার কার্যক্রম বিশেষ করে মহান শহীদ দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, পহেলা বৈশাখ, ঈদ আনন্দের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সার্বিক সহায়তা প্রদান করেন। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বের যেখানেই থাকি না কেন- প্রকৃত অর্থে বাংলাদেশের সন্তান। আমরা বাংলাদেশি তবে বাংলাদেশি ব্রিটিশ।৩অর্থকন্ঠ প্রতিবেদক