কিশোর বয়সে যখন স্কুলে পড়তাম সেই ছোট বেলার বর্ষার কতো আনন্দ স্মৃতি এখনো চোখে ভাসে। সমবয়সী জেঠাত ভাই নিসার কে নিয়ে
ছোটবেলায় পুকুরে পানিতে ডুবাডুবি করার সময় যদি আকাশ কালো করে মেঘ হতো, পৃথিবীটা কেমন অচেনা স্বপ্নের জগৎ হয়ে উঠত, তখন বৃষ্টির জন্যে অপেক্ষা করতাম। বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলে পুকুরের পানিতে গলা ডুবিয়ে বৃষ্টি দেখতাম। পুকুরের পানিতে বৃষ্টি পরলে কেমন লাগে তা অনুভব করার জন্য আমরা দুজন ডুব মেরে পানির ভিতর থেকে চোখ খুলে উপরের
তাকিয়ে থাকতাম। বৃষ্টির বড় বড় ফোঁটা পানিতে পরে যে আলোড়ন সৃষ্টি করতো তার সৌন্দর্য প্রকাশ করার ভাষা আমার জানা নেই। এক একটা বড় ফোঁটা পানিতে পরলে পানি অনেক দূর ডেবে গিয়ে গোলাকার বৃত্ত তৈরি করতো। এইভাবে হাজার হাজার বৃত্ত চোখের সামনে পানির নীচ থেকে দেখতাম। বৃষ্টির একজাতীয় রিনিঝিনি টুংটাং শব্দ মনের আনন্দ বাড়িয়ে দিতো। নিঃশ্বাস নিয়ে আবার ডুব দিতাম। পানির নীচ থেকে দুই কিশোরের বৃষ্টির এই সৌন্দর্য দেখার খবর পৃথিবীর কেউ জানতো না। জানার কথাও না। বৃষ্টি কে ভালোবেসে পানির নীচ থেকে বৃষ্টির অবগাহন।
পানির নীচ থেকে মেঘ ডাকার প্রচন্ড শব্দ শুনতাম। তারপর পানি থেকে উঠে পাড়ে বসে থাকতাম। মেঘের গর্জনে পানি থেকে কৈ মাছ উঠা শুরু করতো আর আমি আর নিসার দ্রুত ঐসব কৈ মাছ গুলো ধরে ধরে মাটির গর্তে জমা করতাম। পুকুর পাড়ের কোন ফাঁক দিয়ে বাহিরের পানি যদি পুকুরে ঢুকতে তখন আমরা সেখানে একটা আনতা চাই ( মাছ ধরার এক জাতীয় বাঁশের তৈরি খাঁচা) বসিয়ে দিতাম। ঘন্টা খানিক পরে এসে দেখতাম ঐ আনতা চাই কাঁচকি মাছে পুরে গেছে। সেই আনন্দময় সময় গুলো এখন শুধুই স্মৃতি, যেটা নিয়ে বেঁচে আছি এখনো। সবাইকে বর্ষার শুভেচ্ছা।