জাফর আলম, কক্সবাজার, ১৩ জানুয়ারি
করোনার টিকা দিতে যাতায়াত ও নাশতা খরচের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১০০ টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এই টাকা নিয়েছে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী কিশলয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতন এর খোদ প্রধান শিক্ষক মো. তাজুল ইসলাম। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপকভাবে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন এই প্রধান শিক্ষক। সংশ্লিষ্টরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত চেয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর নালিশও করেছেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগে জানা গেছে, ১২ বছরের বেশি বয়সী সব শিক্ষার্থীর বিনা মূল্যে কোভিড-১৯ করোনার টিকা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ জানুয়ারী মঙ্গলবার চকরিয়া খুটাখালী কিশলয় আর্দশ শিক্ষা নিকেতনের ৮৬৯ জন শিক্ষার্থীকে চকরিয়া উপজেলার মোহনায় নিয়ে টিকা দেওয়া কার্যক্রম শুরু হয়।
আর এই টিকা দেয়াকে পুঁজি করে প্রতিজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পরিবহন ও নাশতা খরচের নামে ১০০ করে লাখের বেশি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে প্রধান শিক্ষক মোঃ তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
যাতায়তে বাসভাড়া মাত্র ৩০ হাজার টাকা ও অন্যান্য খরচ ১০ হাজার টাকা দেখিয়ে অবশিষ্ট টাকা পকেটস্থ করেন ওই প্রধান শিক্ষক।
এঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় ওঠে এবং শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়কেজন অভিভাবক জানান, টিকা দিতে টাকা আদায়ের বিষয়ে তারা প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে কৈফিয়ত চাইতে স্কুলে গেলে বুধবার স্কুল বন্ধ ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, করোনার টিকা নিতে এসে ভোগান্তির শিকার হয়েছে শিক্ষার্থীরা। স্কুল থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার দুরে গিয়ে টিকা গ্রহণে বিড়ম্বনায় পড়ে কোমলমতি শিশুরা।
নানা অব্যবস্থাপনার কারণে শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দেয়।
একাধিক শিক্ষার্থী জানান, নির্ধারিত সময় থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা আগে তারা টিকা নিতে আসেন। বসার ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত টয়লেট না থাকায় তারা কষ্টে পড়ে যান। এমনকি যাতায়াত ও নাস্তা খরচের নামে ১শ’ টাকা নেয়া হলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ তা ব্যবস্থা করেননি।
এব্যাপারে কিশলয় প্রধান শিক্ষক মো.তাজুল ইসলামের যোগাযোগ করা হলে তিনি টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শুধু মাত্র পরিবহন খরচের জন্য টাকা নেওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি দাবী করেন, সরকার বিনামুল্যে টিকা দিয়েছেন, কিন্তু পরিবহণ খরচ দেননি। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উত্তোলিত টাকা যাতায়ত ও ব্যবস্থাপনায় খরচ করা হয়েছে। আরো ঘাটতি আছে বলে তিনি দাবী করেন।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান ত্রিপুরা বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি আমি জানিনা, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।