• সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:৫০ পূর্বাহ্ন

কবি পিয়াস মজিদকে নিয়ে মৌরির কিছু কথা

Reporter Name / ৬৭ Time View
Update : শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১

সাফিয়া চৌধুরী মৌরি

“হঠাৎ বিদেশি বাতাস
গায়ে এসে ধাক্কা খেয়ে বলে
তুই কে রে, দেশ কোথা তোর?
আমার দেশ, মাটি, জল সব আছে
তবু উত্তরে বলতে
পারি না কিছুই ।“
কবি পিয়াস মজিদের লেখা পংক্তি।
আমার মাঝে মাঝে মনে হয় কবিরা কিভাবে  অন্তর্যামীর মতো অন্তরের ভাব ব্যক্ত করতে পারেন!! বাবার প্রিয় পিয়াস মজিদকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা। এতো নিষ্ঠাবান, কর্মঠ এবং গোছানো কবি আমি কম দেখেছি।

বাবার অসুস্থতার বছর গুলোতে তিনি একের পর এক তাঁর সব অগোছালো কাজ গুলো একত্রিত করে সম্পাদনা করেছেন বেলাল চৌধুরীর কবিতা সমগ্র। বাবার ৭৫ তম জন্মদিনে শাশ্বতী নামের একটি স্মারক গ্রন্হের প্রধান উদ্দোক্তা। পিয়াস মজিদের সবচেয়ে দুঃসাধ্য কাজটি ছিল বাবার বইয়ের ঘরের কাগজের পাহাড় খনন করে বাবার কাছে লেখা নানা বিদগ্ধজনের অমূল্য সব চিঠি সংগ্রহ করা এবং সেগুলো নিয়ে একটি  অভিনব গ্রন্হ “প্রানের পত্রাবলী” সম্পাদনা করা। বাবার আশিতম জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে কলকাতা নিয়ে তাঁর ছড়ানো ছিটানো বিভিন্ন সময়ের লেখা গুলোকে একত্রিত করে প্রকাশ করেছেন “আমার  কলকাতা”। তার এসকল গবেষনা ধর্মী কাজের মাধ্যমে ধ্বনিত হচ্ছে বাবার নাম। তার এই অসাধারন কাজের জন্য চির কৃতজ্ঞ।
২০১৮ তে ২৪ শে এপ্রিল আব্বুকে হাড়ালাম। ৩০ এপ্রিল আমি চলে আসার দিন আমার হাতে তুলে দিলেন ১/২ সের ওজনের খবরের কাগজের প্রিন্ট কপি। ২৪ শে এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ঐ ছয় দিনে বাবা চলে যাবার পর বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তাকে নিয়ে যতো খবর, তাঁর স্মরনে বা স্মৃতিচারণে প্রকাশিত সব লেখা তিনি কপি করে রেখেছেন আমার এবং আমার ছোট ভাই এর জন্য। তার সব ভালোবাসা তিনি তার কাজের মাধ্যমে প্রকাশ করেন।
আরেকটি ঘটনা উল্লেখ করতে ইচ্ছে হচ্ছে । বাবা ২০১৩ যেবার বেড়াতে এলো আমার এখানে। তখন ছিল শীতের দিন, বেজায় বিরক্ত কেন সূর্যের আলো এতো অল্প সময়ের জন্য থাকে । ঠান্ডার জন্য বাইরে গিয়ে
হাঁটাহাটি ও করতে পারছেন না। তার দেশে ফেরার টিকেট আমরা কিছুটা ফঁন্দি করে আরো কিছু দিনের জন্য পিছিয়ে দিয়েছি। বেশি যত্নে তিনি অতিষ্ঠ। তখন নিউ ইয়র্কে শহিদ কাদরী চাচা সাথে কথা বলতে বলতাম। তিনি করজোড়ে আমার কাছে ক্ষমা চাইতেন। কারন শহিদ কাদরী চাচা ফোন করলে বিশ্ব রেকড় গড়ার মতো সময় নিয়ে কথা বলতেন। আর বাবা শ্রদ্ধা করে রাখি বলতে পারতেন না কিছুতেই। এতক্ষণ ফোনে কথা বলার পর কিছুটা অপরাধী ভাবে আমাকে প্রায়ই অনুরোধ করতো একটু পিয়াস কে যদি কল করে দিতা …পিয়াসের সাথে যদি একটু হ্যালো বলতাম …বাবা পিয়াস পিয়াস করে পিপাশিতো। অগ্রজ ও অনুজের একে অন্যের প্রতি কি টান!! ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের কি অসাধারন উদাহরণ তারা দুজন। এমন বিরল ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার প্রতিদান যেনো সহস্র গুনে ফিরে আসে।
পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি। পিয়াস মজিদ সফলতার শিখরে পৌঁছাবেন তার নিজ কর্মগুনে। কৃতজ্ঞতায় তাঁর জন্য থাকছে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে শুভকামনা ও ভালোবাসা 💕🙏🏽


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category