মশিউর আনন্দ, ঢাকা
বাংলাদেশের বহুল আলোচিত ও ঐহিত্যবাহী পাক্ষিক নারী বিষয়ক ম্যাগাজিন অনন্যা শীর্ষদশ সম্মাননা ২০২০ পেয়েছেন দশজন নারী।
এ বছর রাজনীতিবিদ, উদ্যোক্তা, প্রযুক্তি, কৃষি, নাট্যনির্মাণ, কর্পোরেট পেশা, বিজ্ঞান অধিকার কর্মী, ক্রীড়া ও লোক-ঐতিহ্য এ দশটি শাখায় পুরস্কার প্রদান করা হয়।
রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ (কেআইবি) অডিটেরিয়ামে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। প্রতি বছর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সমাজে আলোচিত ও আলোকিত নারীদের মধ্য থেকে ১০জন কৃতি নারীকে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, অনন্যা সম্পাদক তাসমিমা হোসেন দেশের সংগ্রামী নারীদের খুঁজে খুঁজে নিয়ে আসছেন। আজকে প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। এর পেছনে সব থেকে বড় ভূমিকা রাখছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা সরকারের নানা নিয়ম-নীতির জন্যই মেয়েরা নিজ নিজ অঙ্গনে সফলতা অর্জনের সুযোগ পাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, দেশের মেয়েরা অসাধারণ সব সাফল্য অর্জন করেছেন। ফুটবল ও ক্রিকেটসহ সকল খেলাধুলায়ও মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে। মেয়েদের এগিয়ে যাওয়ার পেছনে অনন্যার সম্মাননা অনেক বেশি অনুপ্রেরণা যোগাবে। তাই অনন্যা আমার কাছে অনন্য।
‘মেয়েরা এগিয়ে যাবে, মেয়েদের কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না’ এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন শিক্ষামন্ত্রী। এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য মেয়েরা কাজ করে যাবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
পাক্ষিক অনন্যা ও দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন বলেন, করোনাকালীন সময়ের পরে আমাদের জীবনযাপন পাল্টে যাচ্ছে। ভার্চুয়াল জগতের বাইরে এসে এভাবে স্বশরীরে অনুষ্ঠান করতে পারব, সেটা ভাবতে পারিনি। তবে অনন্যার সাথে যুক্ত যুবকদের প্রচেষ্টায় আমরা স্বশরীরে অনুষ্ঠানটি করতে পারছি। দেশে নারী ব্যক্তিত্ব যাঁদের এখন সমাজে নানা ভূমিকা রাখতে দেখা যায়, তাঁদের প্রায় বেশিরভাগ নারীকে স্বীকৃতি দিয়েছে অনন্যা। গত ২৮ বছরে ২৮০জন নারী এ সম্মাননায় ভূষিত হলেন।
তিনি আরো বলেন, আগে অনন্যা সম্মাননা প্রদানের জন্য দেশের ১০জন সংগ্রামী নারীকে খুঁজে পেতে কষ্ট হতো। তবে এখন অনন্যা সম্মাননার জন্য ৫০জনেরও বেশি সংগ্রামী নারীকে আমরা প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করি। এটা অনন্যার জন্য খুব গর্বের জায়গা। এতে বোঝা যায়, দেশের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা আর অবহেলিত থাকতে চান না।
অনন্যা শীর্ষদশ জয়ীরা বলেন, এই পুরস্কার আমাদের জন্য সম্মানের। এটা আমাদের চলার পথকে আরো অনুপ্রাণিত করবে।
অনন্যা শীর্ষদশ সম্মাননা-২০২০ প্রাপ্ত ব্যক্তিত্বরা হলেন: কামরুন্নাহার জাফর (রাজনীতি ক্যাটাগরিতে), শাহীদা বেগম (উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে), লাফিফা জামাল (প্রযুক্তিতে), অল্পনা রানী (কৃষিতে), চয়নিকা চৌধুরী (নাট্যনির্মাণে), স্বপ্না ভৌমিক (কর্পোরেট পেশায়), সেঁজুতি সাহা (বিজ্ঞানে), তাসনুভা আনান (অধিকারকর্মী বিভাগে), জাহানারা আলম (ক্রীড়ায়), রূপন্তী চৌধুরী (লোক-ঐতিহ্যে )।
অনুষ্ঠানে সম্মাননাজয়ীদের উপর নির্মাতা লেখক তাপস কুমার দত্তের নির্মাণে তথ্যচিত্র্র প্রদর্শিত হয়। সংগীত পরিবেশন করে ভৈরব।
অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলো দারাজ ও হা-মীম গ্রুপ, বেভারেজ পার্টনার নেসকেফে, ব্রডকাস্টিং পার্টনার নেক্সাস টেলিভিশন, মিডিয়া পার্টনার দৈনিক ইত্তেফাক,এটিএন নিউজ, সমকাল ও বাংলা ট্রিবিউন।
উল্লেখ্য, অনন্যা শীর্ষদশ সম্মাননা ১৯৯৩ সাল থেকে প্রদান করা হচ্ছে। প্রতিবছর নিজ নিজ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের ১০জন বিশিষ্ট নারীকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়।