ঘটনাটা সিনেমার মতোই। আমেরিকার মাটিতে পা দেওয়ার তিন মাসের মাথাতেই একটা অ্যাক্সিডেন্ট এর মুখোমুখি হন বুডা। বুডা একজন ফুড ডেলিভারি ম্যান, নেপালি নাগরিক। কোনো ভেলিড কাগজপত্রই নাই তার। সময়ের পরিক্রমায় তিনি এখন মিলিয়ন ডলার বিজয়ী। সেই ঘটনাই বলব।
ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে আমেরিকায় পারি জমিয়েছেন বুডা। কিছু দিন নিরুদ্ধেশ ঘুরে বেড়ানোর পর যুক্ত হন ফুড ডেলিভারির কাজে। এমনই একদিন খাবার সরবরাহ করার সময় নিউইয়র্কে রাস্তার মধ্যেই তাকে আঘাত করে একটি সেনিটেশন-ট্রাক। আহত হন বুডা। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েই সরনাপন্ন হন ভাট্টা ’ল অ্যান্ড হারবার্ট-এর। বিভিন্ন অ্যাক্সিডেন্ট কেইসে আহতদের অধিকার আদায়ে এক সাথে কাজ করেন ভাট্টা ’ল এবং হারবার্ট। তারপরই ঘটনা পাল্টে যেতে থাকে একে একে।
আহত বুডার পক্ষ হয়ে আইনি লড়াই চালাতে থাকেন ভাট্টা ’ল অ্যান্ড হারবার্ট। তারা একটি অ্যাক্সিডেন্ট অ্যান্ড পারসনাল ইনজুরি কেইস ফাইল করেন ’ল অফিস। বুডা-র আহত হওয়ার জন্য ক্ষতিপুরণ চান। রিসার্চের কাজটি করতে থাকেন শামীম শাহেদ। নানা চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে অ্যাক্সিডেন্টের শিকার বুডা-র হয়ে কেইস জিতে যান ভাট্টা ’ল অ্যান্ড হারবার্ট। তারপর বুডা-র জন্য পুরো আমেরিকাই যেন এক স্বপ্নপুরি। সময় পেরিয়ে বুডা বিজয়ী হন এক মিলিয়ন ডলার।
কেমন লাগছে আপনার? এই প্রশ্ন করতেই বুডার উত্তর, ‘খুবই ভালো লাগছে। সবচেয়ে ভালো লাগছে এই জন্য যে, আমি এক মিলিয়ন ডলার জিতেছি কিন্তু আমার এক পয়সাও খরচ করতে হয় নাই।’
কীভাবে ঘটল এই ঘটনা? উত্তরে ভাট্টা ’ল অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস এর কর্ণধার দিল্লী রাজ ভাট্টা জানালেন, ‘ সেনিটেশন ট্রাকটি ভুডাকে আঘাত করার পর কেইস করে আমরা আমাদের ক্লায়েন্টকে এক মিলিয়ন ডলার আদায় করে দিতে পেরেছি। তার অ্যাসাইলাম আবেদনের কেইসটাও আমরা দেখছি। আশাকরি সেটাতেও বুডা বিজয়ী হবেন।’
অ্যাক্সিডেন্ট কেইসে আপনাদের এই বিজয়ের কারন কি?
ভাট্টা-র উত্তর, ‘অ্যাক্সিডেন্ট কেইসে আমাদের টিম-টা বেশ অভিজ্ঞ। বেশ বড় একদল অ্যাটর্নি আমাদের সাথে যুক্ত। আমরা অনেকগুলো পারসোনাল ইনজুরি কেইস নিয়ে কাজ করছি। আমরা নিখুঁত ভাবে কেইসের বিভিন্ন দিক যাচাই করি। এবং নিশ্চিত করার চেষ্টা করি যে, সবার প্রতি সুবিচার হয়েছে।’
গবেষক শামীম শাহেদ জানালেন, ‘নিউইয়র্ক সিটিতে প্রচুর সংখ্যক মানুষ আছেন যাদের কোনো লিগাল ডকুমেন্ট নাই। কিন্তু তারাও সমান ভাবে তাদের প্রাপ্য বুঝে পেতে পারেন। ফলে কোনো অ্যাক্সিডেন্টে পড়লে আপনার লিগাল ডকুমেন্ট আছে কি নাই সেদিকে লক্ষ না করে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়া জরুরি। বুডার বিজয় সেটা আবারো প্রতিষ্ঠিত করল।’