• রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:০৬ অপরাহ্ন

চিরবিদায় ‘মাসুদ রানা ও ‘কুয়াশা’ স্রষ্টা কথাসাহিত্যিক কাজী আনোয়ার হোসেন

Reporter Name / ৬৩ Time View
Update : বুধবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০২২

 

সৈকত রুশদী

চিরবিদায় ‘মাসুদ রানা ও ‘কুয়াশা’ স্রষ্টা কথাসাহিত্যিক কাজী আনোয়ার হোসেন (১৯৩৬-২০২২)
Adieu, Trendsetting Author and Creator of ‘Masud Rana’ Qazi  Anwar  Hossain (1936-2022)

নিয়তির অমোঘ নিয়মে আজ চিরবিদায় নিয়েছেন কথাসাহিত্যিক কাজী আনোয়ার হোসেন। বাংলা ভাষায় গোয়েন্দা ও রহস্য কাহিনী জনপ্রিয় করে তোলার এক নিপুণ কারিগর।
একাধিক প্রজন্মকে তাঁর রচিত, সম্পাদিত ও প্রকাশিত গ্রন্থ ও সাময়িকীর প্রতি মন্ত্রমুগধ করে রাখার অসাধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন গুণী এই মানুষটির বয়স হয়েছিল ৮৫ বৎসর। প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি বিগত কয়েক মাস ধরে।

তিনি একাধারে মৌলিক লেখক, অনুবাদক, সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে সাফল্য অর্জন ছাড়াও একসময়ে ছিলেন বেতার ও চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় কণ্ঠ শিল্পী।
রচনা ও সৃষ্টির মাধ্যমে বাঙালি মানসকে আধুনিক করে তুলতে অবদান রেখেছেন তিনি।

একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর অনেক মুক্তিযোদ্ধা জানিয়েছেন, কথিত ‘ভেতো বাঙালি’কে শত্রু পাকিস্তানী সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ সমর ও গেরিলা যুদ্ধে অকুতোভয় যোদ্ধায় পরিণত করতে কাজী আনোয়ার হোসেন-এর ‘মাসুদ রানা’র সাহস, শৌর্য, উপস্থিত বুদ্ধি ও দেশপ্রেম নিরন্তর প্রেরণা যুগিয়েছে। প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধে ব্যবহার করা বহু সমরাস্ত্রের সাথে তাদের প্রথম পরিচয় ‘মাসুদ রানা’র মাধ্যমে।

উনিশশ’ ষাট ও সত্তর দশকে আমাদের বাল্যকাল ও কৈশোরের প্রায় স্বপ্নপুরুষ ‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’র মতো জনপ্রিয় চরিত্র সৃষ্টির জন্যই তিনি অনন্য সাহিত্যিক হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন।

তাঁর নিজের প্রতিষ্ঠিত ‘সেবা প্রকাশনী’ (পূর্ববর্তী নাম ‘সেগুনবাগান প্রকাশনী’) থেকে প্রকাশিত এই দুই সিরিজের গ্রন্থের সংখ্যা মোট প্রায় ৫০০। এর মধ্যে মাসুদ রানা সিরিজে গ্রন্থ সংখ্যা ৪০০-র বেশি এবং কুয়াশা সিরিজের গ্রন্থসংখ্যা ৭৮। সেবা প্রকাশনী ‘তিন গোয়েন্দা’ সহ বহু জনপ্রিয় সিরিজ গ্রন্থের প্রকাশক।
জনপ্রিয় সাময়িকী ‘রহস্য পত্রিকা’ সম্পাদনা এবং শতাধিক জ্ঞান ও বিজ্ঞান ভিত্তিক গ্রন্থের রচয়িতা ও সম্পাদক এবং ভিনদেশী সাহিত্যের অনুবাদক ও সম্পাদক হিসেবেও বাংলা সাহিত্যে অনন্য অবদান রেখেছেন কাজী আনোয়ার হোসেন।

 

বাংলাদেশে দেশী লেখকের রচিত গ্রন্থের পাঠক সৃষ্টি এবং দেশীয় প্রকাশনা শিল্পের বিকাশে তাঁর অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণীয়।
কাজী আনোয়ার হোসেন দার্শনিক, পরিসংখ্যানবিদ, দাবাড়ু, সাহিত্যিক ও শিক্ষক জ্ঞানতাপস অধ্যাপক ডঃ কাজী মোতাহার হোসেন-এর পুত্র। স্ত্রী প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী ফরিদা ইয়াসমিন গত হয়েছেন আগেই। তিনি দুই পুত্র ও এক কন্যা রেখে গেছেন।

কাজী আনোয়ার হোসেন-এর বোনদের মধ্যে সঙ্গীতজ্ঞ অধ্যাপক সানজিদা খাতুন, লেখক অধ্যাপক যোবায়দা মির্যা, কণ্ঠ শিল্পী ফাহমিদা খাতুন ও কণ্ঠ শিল্পী মাহমুদা খাতুন সুপরিচিত।
প্রার্থনা করি, আল্লাহ যেন মরহুম কাজী আনোয়ার হোসেন-এর রূহকে জান্নাতুল ফেরদৌসে চিরশান্তি প্রদান করেন।

টরন্টো
১৯ জানুয়ারি ২০২২


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category