প্রচন্ড দেশপ্রেম ও মাতৃভাষার প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধাশীল এক শিল্পী নওশীন মনজুর। প্রবাস জীবনে তিনি নিজের অস্তিত্বকে বিকিয়ে দেননি। আর বর্তমানেও তাই কোনো অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশনে শুরু করেন দেশাত্ববোধক গান। এ প্রসঙ্গে নওশীন বলেন, ‘আমি সব সময় আমার বাংলাদেশী পরিচয়টা উঁচু করে তুলতে চাই’। এই জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পীর বিশেষ সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নিউইয়র্ক বাংলার ঢাকা প্রতিনিধি মশিউর আনন্দ।
নিউইয়র্ক বাংলা: আপনার জীবনে সংগীত তালিমটা ঠিক কিভাবে গড়ে ওঠে।
নওশীন মনজুর-ই-খুদা: আমার মা খালেদা মঞ্জুর-ই-খুদা ছিলেন চল্লিশ দশকের রেডিও বাংলাদেশের একজন সম্মানিত সঙ্গীত শিল্পী। রেডিও বাংলাদেশের পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিভিশনে মহিলাদের নিয়ে অনেক অনুষ্ঠান তিনি করেছেন। আমার মা আমার জীবনে বিরাট একটা অংশ জুড়ে আছেন। সংস্কৃতিকে জাগ্রত রাখার জন্য মা আমাকে বিভিন্ন সময়ে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন মনোবল দিয়েছেন।
আট বছ
র বয়সে শুরু হয় আমার সঙ্গীত চর্চা। বিভিন্ন উস্তাদদের কাছ থেকে আমি ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতের ওপর তালিম নেয়া শুরু করি। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য উস্তাদ ইয়াসিন খান ও ওস্তাদ ফজলুল হক ছিলেন অন্যতম।পারিবারিক সংগীত শিক্ষার পাশাপাশি আমি বুলবুল ললিতকলা একাডেমীতে সঙ্গীতচর্চা শুরু করি।চেষ্টা করি রবীন্দ্র সংগীতে নিজেকে গড়ে নিতে।তাঁরমধ্যে আব্দুল আহাদ স্যার ও কাদেরী কিবরিয়া স্যারের কাছে আমার দীর্ঘ বছরের সংগীত শিক্ষা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশনে ছোটদের সংগীত অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে থাকি।
নিউইয়র্ক বাংলা:জানতে চাই আপনার জন্মস্থান, স্কুল ও কলেজ সম্পর্কে।
নওশীন মনজুর-ই-খুদা:ঢাকায় আমার জন্ম হলেও তিন মাস বয়স থেকে প্রায় সাড়ে তিন বছর আমি আমার বাবা- মায়ের সাথে লন্ডনে বেড়ে উঠি।পরবর্তীতে দেশে ফিরে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় আজিমপুর গার্লস স্কুলে। এরপর পশ্চিম জার্মানির ডামসটার্ড শহরের শিলাসুলে স্কুলে আমার মাধ্যমিক শিক্ষা শুরু হয়। বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষাপটে দেশে এসে কিশোলয় স্কুল থেকে আমি মাধ্যমিক সমাপ্ত করি। উচ্চ মাধ্যমিক সমাপ্ত করি আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে। লেখাপড়ার পাশাপাশি চলতে থাকে আমার সঙ্গীত জীবন। বুলবুল ললিতকলা একাডেমীতে শুরু হয় আমার সঙ্গীতের তালিম নেওয়া। উচ্চাঙ্গসংগীতে তালিম নেওয়ার পাশাপাশি রবীন্দ্র সংগীত চর্চা। ইচ্ছে ছিল শান্তিনিকেতনে গানের অনুশীলনের সাথে সাথে উচ্চশিক্ষা নিতে কিন্তু আমার আব্বা বললেন, মেয়ে একা পড়তে যাবে তাও আবার গানের ওপর শিক্ষা, রাজি হলেন না। মনস্থির করে মাকে নিয়ে পড়ি দিলাম কানাডাতে উচ্চ শিক্ষার জন্য। কানাডাতে গ্রাজুয়েট শেষ করলাম পাশাপাশি সংগীতের ওপর আমেরিকার বোস্টন শহরের ইমানুয়েল লিবারেল আর্ট কলেজ থেকে নিলাম একটা ডিগ্রি।
নিউইয়র্ক বাংলা: কোন ধরনের গান আপনি পছন্দ করেন, কার গানে আপনি এখনো অনুপ্রেরণা পান, আপনার প্রিয় শিল্পীর সংগীত কিভাবে মূল্যায়ন করবেন ?
নওশীন মনজুর-ই-খুদা: ছোটবেলা থেকে সঙ্গীত চর্চা শুরু হয় আমার ছড়া গান দিয়ে। ছড়া গানের পাশাপাশি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম নিতে থাকি। কিন্তু সুরের লহরী তোলা
গানগুলো মনে গেঁথে যেতে শুরু করল। এরমধ্যে আমার মা অনুরোধ করল রবীন্দ্রসঙ্গীতে তালিম নেওয়ার জন্য। রবীন্দ্রসঙ্গীতে নিজেকে তৈরি করার চেষ্টা শুরু করলাম। আমি যখন প্রবাসে নিজেকে সেটেল করি তখন মন ছুটে যেত দেশে।ভীষণভাবে অনুভব করতাম আমার দেশের প্রাকৃতির সৌন্দর্য আর সংস্কৃতিকে। মন টানে মাটি- মাকে। দেশাত্মবোধক গানের চর্চা শুরু করলাম। সাবিনা ইয়াসমিনের গানগুলো আমাকে চরমভাবে আকর্ষিত করে। সাবিনা ইয়াসমিন হলেন আমার মেন্টর। আমার হৃদয়ে অনুপ্রেরণা দেয়। তাঁর গাওয়া দেশত্মবোধক ও আধুনিক গান আমাকে ভীষণভাবে আলোড়িত করে। সাবিনা ইয়াসমিনের আধুনিক ও দেশাত্মবোধক গানের ভিতরে যে মায়া, যে সুরের বিন্যাস ,যে নান্দনিকতা তা সত্যিই অবিশ্বাস্য। জীবনে চলার পথে সুযোগ হয়েছে গুণী শিল্পী সাবিনা আপার সাথে প্রোগ্রাম করার। সাবিনা ইয়াসমিনের একক সংগীত সন্ধ্যা ও তাঁর সাথে বিশেষ সাক্ষাৎকার করার সুযোগ হয়েছে আমার। যা আমার জন্য বিরাট সৌভাগ্য বলতে পারেন।
নিউইয়র্ক বাংলা: বাংলাদেশে যখন গান গাইতেন সেই সময়ের দুই-একটি স্মৃতির কথা যদি বলতেন।
নওশীন মনজুর-ই-খুদা: বাংলাদেশে আমি যখন বুলবুল ললিতকলা একাডেমীতে গান শেখার জন্য যেতে শুরু করি তখন আমাদের স্কুলের কিছু বন্ধুদের নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে যাওয়া আসা করতাম। ঢাকা প্রেসক্লাব অঙ্গনে আমরা দলবেঁধে মাঝে মাঝে গান করতাম। এই সময় আমার একটা বিশেষ স্মৃতি আজো জ্বলজ্বল করে জ্বলছে।
সাদা শাড়ি পড়ে আর কালো ব্যাগ নিয়ে বাড়ি থেকে বের হতাম মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপনের জন্য ঢাকা প্রেসক্লাবের সামনে। শুরু করেছিলাম বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনে মায়ের ভাষাকে স্বীকৃত দানে শহীদদের স্মরণে ভাষা আন্দোলনের গান। যা আমার মানসপটে আজও গেঁথে আছে।
আশির দশকের শুরুতে বাংলাদেশী
টিনএজের ছেলেমেয়েরা পশ্চিমা সঙ্গীতে কিছুটা ঝুঁকে পড়ে। আমি ছিলাম এক সাদামাটা মেয়ে কিন্তু সাংস্কৃতি পরিবারে জন্ম নেওয়াতে আমি ধীরে ধীরে সংস্কৃতমনা হয়ে উঠি। বাংলা ক্লাসিকের পাশাপাশি পশ্চিমা সংগীত স্যাটারডে নাইট আমার ভালো লাগতো। কিন্তু ব্যস্ত ছিলাম ওস্তাদের কাছে ক্লাসিক সঙ্গীতে তালিম নিতে। হঠাৎ একদিন ডাক পড়ল বাংলাদেশ টেলিভিশনে তরুণদের এক অনুষ্ঠানে। আমার এক বন্ধু বললো,আমি জানি তুই বাংলা গান করিস কিন্তু ক্ষতি কি? আমরা এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে যদি তুলে ধরতে পারি বাংলাদেশে গড়ে ওঠা তরুণ- তরুণীদের ব্যতিক্রম মনোভাবকে প্রস্ফুটিত করতে। আমাকে ও আমার বেশকিছু বন্ধুদেরকে ইন্টারভিউ নেওয়া হয় এই অনুষ্ঠানে গান পরিবেশনের জন্য। আমাদের মত ছিল পশ্চিমা সংগীতের ওপর। এখনো আমার মনে আছে আমরা কয়েকটি ইংলিশ গান করেছিলাম। আমরা গান গেয়েছিলাম, “ কান্ট্রি রোড টেক মি হোম” যা স্মৃতিতে এখনো অগ্নিশিখার মত জ্বলছে।
নিউইয়র্ক বাংলা:আমেরিকাতে দীর্ঘদিন বসবাস করছেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলা সংগীত কতটা সমৃদ্ধ হয়েছে?
নওশীন মনজুর-ই-খুদা:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেটে আমি দীর্ঘদিন বসবাস করছি। এরমধ্যে অন্যতম ক্যালিফর্নিয়া, বস্টন, মিনেসোটা, মাসাচুসেটস, ফ্লোরিডা ও ম্যারিল্যান্ড। বিভিন্ন প্রদেশে থাকার সুযোগে আমি বাংলা সংস্কৃতিকে প্রসিদ্ধ করতে চেষ্টা করেছি। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রদেশে বসবাসরত বাঙালিদেরকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংযুক্ত করতে চেষ্টা করেছি। সেইসব অনুষ্ঠানে আমাদের বুকের মধ্যে সুপ্ত থাকা দেশের প্রতি যে ভালবাসা তাঁর বাস্তব প্রকাশের সুযোগ।ফলশ্রুতিতে দেশের প্রতি ভালবাসা হয়েছে আরও প্রগাঢ়। প্রবাসী বাঙ্গালিদের সম্পর্কে বলবো তাঁরা বিদেশে বসে বাংলাসংগীত তথা বাংলা সংস্কৃতিকে শক্তভাবে রাখতে সক্ষম হয়েছে। দেশে বাংলাদেশের তুলনায় যারা প্রবাসে আছেন তাঁরা এ বিষয়ে অনেক আগ্রহী। তার কারণ বলব প্রবাসে আমরা লোকাল বাঙালিরা নিজেদের যুক্ত করি বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সংগীত ভুবন হয়ে উঠেছে অনেক জোরালো বিদেশের মাটিতে থাকা বাঙ্গালিদের মধ্যে। বাঙালি ও বাংলাদেশের জাতীয় উৎসবগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য যেমন পহেলা বৈশাখ, একুশে ফেব্রুয়ারি, ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা ও ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস। এ সমস্ত দিবসে দেশের প্রতি অপরিসীম মায়া, প্রেম ও ভালবাসা নিয়ে বাংলাদেশের গান জোর গলায় পরিবেশন করছি আর বাংলা সঙ্গীতের স্থান আমরা দিয়েছি সর্বোচ্চ আসনে।
নিউইয়র্ক বাংলা: উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে সংগীত পরিবেশন করছেন দুই-একটি স্মৃতির কথা যদি বলতেন।
নওশীন মনজুর-ই-খুদা: স্মৃতির পাতাগুলো উল্টেপাল্টে দেখতে গেলে চোখে পড়ে শতাধিক স্মৃতি যা কিনা জ্বলজ্বল করে আজো চলছে মানসপটে। মনে হয় যেন এইতো সেদিনের কথা,মন্ট্রিলে মায়ের সাথে আসা এক যুবতি নওশীন এসেছিল উচ্চ শিক্ষার জন্য। যেহেতু ছোট থেকেই সঙ্গীত ভুবনে যুক্ত ছিলাম তাই মন্ট্রিলে চান্স পেয়ে গেলাম টোয়েন্টিফোর ইথনিক চ্যানেলে। বাংলাদেশের পতাকা হাতে নিয়ে মন্ট্রিলে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে ফেললাম। এই চ্যানেলে প্রথম বাংলাদেশীর একক সঙ্গীত অনুষ্ঠান করার আমি সুযোগ পায়। তিন মাস পরপর একটা অনুষ্ঠান নিয়ে আমি উপস্থিত হতাম। এরমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য অনুষ্ঠানগুলো ছিল একুশে ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতা দিবস ও ১৬ই ডিসেম্বরের বিজয় দিবস। সেই সময় উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশী অনুষ্ঠান বলতে এই ছিল একমাত্র টেলিভিশন অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন সংগীতমনা মন্ট্রিলের অধ্যাপক ড.হেতায়েত উল্লাহ তাঁর উদ্যোগেই আমি হলাম মন্ট্রিল টেলিভিশনের স্টার।
পরবর্তীতে আমার ডাক পড়েছে কিছু ইন্ডিয়ান কনসার্টে সংগীত পরিবেশনের জন্য। আমেরিকাতে আসার পর সুযোগ ঘটেছে বাংলাদেশি নর্থ আমেরিকা কনভেনশন অংশগ্রহণের ( ফোবানা)। যা কিনা হয় বছরে একবার। এরমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য মন্ট্রিল ও টরোন্টোতে আমার একক সংগীত অনুষ্ঠান।টরন্টোর কনভেনশনে অংশ নেবার পরে আমার ডাক পড়ে একজন টরেন্টোবাসির মিউজিক ডাইরেক্টর কাছ থেকে। উনি আমাকে অনুরোধ করলেন কিছু মৌলিক গান রেকর্ড করার জন্য। আমার সিডি ক্যাসেট ‘লক্ষ্মী আমার মা’ রেকর্ড করা হয় টরন্টোতে। যা পরবর্তীতে বাংলাদেশ গীতালি হয়।
নিউইয়র্ক বাংলা:সঙ্গীত নিয়ে ভবিষ্যতে আপনার নতুন কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা ?
নওশীন মনজুর-ই-খুদা: আছে বৈকি আমরা সকলেই এখন করোনা ভাইরাসে গৃহবন্দি কিন্তু এই ভাইরাস আমাদের শিল্পীদের দিয়েছে ভার্চুয়াল জগতের স্বীকৃতি। আর এই জগতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছি। পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষের সঙ্গে হয়েছে পরিচয় তাঁর সাথে সাথে পাচ্ছি স্বীকৃতি। বড় বড় শিল্পীদের সঙ্গে গান করার সুযোগ হতে যাচ্ছে। আমার হাতে কিছু কাজ এসে পৌঁছেছে। তবে এতোটুকু বলব, স্বনামধন্য শিল্পীদের সাথে গানে নিজেকে যুক্ত করা ছাড়াও নিজের কিছু মৌলিক গান নিয়ে যুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা রাখছি ভবিষ্যতের জন্য। এছাড়াও প্লেব্যাক ভোকালিস্ট হিসেবেও নিজেকে রাখছি। সুযোগ হলে অবশ্যই ইচ্ছে আছে নিজেকে ইনভলভ করতে।
নিউইয়র্ক বাংলা: বর্তমান এবং আগামী প্রজন্ম বাংলা সংগীত কতটা সমৃদ্ধশীল করতে পারব বলে আপনি মনে করেন, কতটা আশাবাদী।
নওশীন মনজুর-ই-খুদা: আগে আমাদের সময়ে সংগীত ও সংস্কৃতিতে যে ধরনের সুযোগ পাওয়া যেত তার তুলনায় নতুন প্রজন্মের সুযোগ সুবিধা অনেক বেশি। শুধু টেলিভিশন রেডিওতে নয় কিছু শিল্পীরা ব্যক্তিগতভাবে ব্রান্ড প্রতিষ্ঠা করে নিজেকে সংগীত জীবন প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। এই সমস্ত গুণি শিল্পীদের আরো বেশি সুযোগ দেয়া হোক মিডিয়াতে। তাঁরাও যেন এগিয়ে যান তাঁদের এই শৈল্পিক ভাবনাকে সাথে নিয়ে। এই প্রজন্ম বিশেষ করে আগামী প্রজন্মকে বলব তাঁরা যেন আমাদের দেশকে ভালবাসে। ভালবাসে আমাদের বাংলা সংগীতকে তাহলেই বাংলা সংগীত আরো সমৃদ্ধি লাভ করবে। আসলে সংগীতের জন্য একটা সংগীতমনা পরিবেশ থাকা দরকার। আমি বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের কাছে আশাবাদী।
নিউইয়র্ক বাংলা:আপনার ব্যাক্তিগত ও পারিবারিক জীবন সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন।
নওশীন মনজুর-ই-খুদা:ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বলতে গেলে কত কথাই না মনে পড়ে যায়। মনের গভীরে আমার সংগীত জীবনের পদার্পণ ছোটবেলায় মায়ের অনুপ্রেরণায়। পরবর্তীতে প্রবাসে আসার পর আমেরিকার বিভিন্ন স্টেটে ঘুরেছি। বাচ্চাদের বাবা ড. হামিদ রব সবসময় করে এসেছে সহযোগিতা। বাচ্চাদের বাংলা সঙ্গীতের তালিম দিয়েছি, তাঁদের নিয়ে প্রবাসের বিভিন্ন সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছি। বর্তমান আমি আছি আমেরিকার ফ্লোরিডা স্টেটে। পাশাপাশি জীবনসঙ্গী নিক মসজিল নিজেকে ইনভলভ করেছেন সঙ্গীত ভুবনে।
তাঁর সহযোগিতা আর অনুপ্রেরণায় আমি শক্তি পেয়েছি সঙ্গীত ভুবনে এগিয়ে যাওয়ার।
আমার তিন ছেলে। বড় ছেলে আদিব রব তাঁর বউকে সাথে নিয়ে থাকেন ফ্লোরিডাতে। মেঝ ছেলে সামির রব তার স্ত্রী আনিকা আলম স্যাটেল এখন ক্যালিফোর্নিয়াতে।আর ছোট ছেলে নাবিল রব গ্রাজুয়েশন করে বর্তমান চাকরিতে যুক্ত আছেন ক্যালিফোর্নিয়াতে।
নিউইয়র্ক বাংলা:আমাকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
নওশীন মনজুর-ই-খুদা:জীবনে আমরা প্রতিনিয়ত সম্মুখিন হই কিছু মানুষের সঙ্গে। যারা মিশে যায় আমাদের জীবনের সাথে। আজ আমি প্রবাসে বসবাস কালীন সময়ে সুযোগ পেলাম সবার সামনে নিজের জীবনের কিছু কথা তুলে ধরার। এই সুযোগটা দেবার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।