• রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন

মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ভিওএ বাংলার তিন নক্ষত্র– সরকার কবির উদ্দিন,   রোকেয়া হায়দার  ও  আকবর হায়দার কিরন

Reporter Name / ৮৬ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০২২

১৯৭০ সালে রেডিও শোনা শুরু। তৎকালীন রেডিও পাকিস্তান করাচী থেকে প্রচারিত বাংলা খবর ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর ও সিলেট কেন্দ্র থেকে রিলে করা হতো। পার্শ্ববর্তী এক বন্ধুর বাড়ি গিয়ে নিয়ম করে শুনতাম। যাদুকরী কন্ঠের মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন হয়ে সংবাদ পাঠক হিসেবে যাকে সেদিন মনের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলেছিলাম তাকে পুরনো বেতার বন্ধুরা সবাই একনামে চেনেন। তিনি ব্রডকাস্ট মিডিয়ার অতি নন্দিত জন তথা বেতারের কিংবদন্তি সংবাদ পাঠক সরকার কবির উদ্দিন। রেডিও পাকিস্তান থেকে পরবর্তীতে বাংলাদেশ বেতার ঢাকা অতঃপর ভয়েস অফ আমেরিকার বাংলা বিভাগে সুদীর্ঘ চার দশক কর্মজীবন শেষ করে এখন অবসরে। তিনি ভিওএ বাংলার সাবেক ম্যানেজিং এডিটর। ৫০/৫২ বছর পূর্বে কোনোদিন কল্পনাও করিনি যে, রেডিওতে যার কন্ঠে খবর শুনছি সেই মানুষটির সাথে জীবনে কখনো সরাসরি কথা বলার সুযোগ হবে। কিংবা মুখোমুখি দেখাও হবে কোনো কিংবদন্তি সংবাদ ব্যক্তিত্বের সাথে। বাস্তবে সেটাই সম্ভব হয়েছে।

পরম শ্রদ্ধেয় রোকেয়া আপার কাছ থেকে উপহার, পাশে যুবরাজ ও অন্যান্য

ভয়েস অফ আমেরিকা, বাংলা বিভাগীয় প্রধান শ্রদ্ধাভাজন রোকেয়া হায়দার আপার হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছিল ২০১৯এর ১১ অক্টোবরে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের বর্নাঢ্য এক অনুষ্ঠানে (সুপ্রিয় যুবরাজ চৌধুরীর সৌজন্যে)। রোকেয়া আপাও ভয়েস অফ আমেরিকায় দীর্ঘ চার দশক কর্মজীবন শেষ করে এখন অবসর যাপন করছেন। যতদূর মনে পড়ে, রোকেয়া আপার কন্ঠের সাথেও পরিচয় সেই পাকিস্তান আমল থেকেই।
আমার অপর প্রিয়মুখ বেতারের আরেক কিংবদন্তি VOA’র নিউইয়র্ক সংবাদদাতা, একসময় বিবিসি বাংলায়ও কাজ করেছেন, রেডিও ভেরিতাসের শ্রোতা হিসেবে যিনি প্রথম পত্রলেখক এবং যার অনুরোধেই হয়তো রেডিও ভেরিতাস কর্তৃপক্ষ বাংলা অনুষ্ঠান চালুর কথা ভেবেছিল। তাছাড়া ভিওএ ফ্যান ক্লাবের তিনি সফল সংগঠক, একজন নন্দিত ও অত্যন্ত উদার মনের মানুষ আকবর হায়দার কিরন। তার কথা প্রথম কখন কোন বেতারে শুনেছিলাম স্পষ্ট মনে নেই। তবে তার বদান্যতা সম্পর্কে অনেক শুনেছি, জেনেছি আরেক আপনজন যুবরাজ চৌধুরীর কাছে অনেকবার এবং শুনেছি খুলনার প্রখ্যাত ডি-এক্সার সিনিয়র ভাই মুনির আহমেদ ও চুয়াডাঙ্গার আব্দুল্লাহ ভাইয়ের কাছ থেকে। কিরন ভাইয়ার সাথে যোগাযোগের সূত্রপাত ফেসবুক। তারপর বেশ ক’বার ফোনালাপ হয়েছে। এইতো সেদিন রাতে কথা হলো। স্মৃতিচারণ করলেন বিবিসি বাংলার কিংবদন্তি মরহুম সিরাজুর রহমান ও তার কর্মজীবন নিয়ে, ভিওএ, বিবিসি বাংলা ছাড়াও কথা বলেন কিছু নিবেদিতপ্রাণ ও উদার মনের শ্রোতা বন্ধুদের সম্পর্কে।
বহির্বিশ্ব বেতারের একজন নগন্য শ্রোতা হিসেবে DW, RVA, VOA, BBC, IRIB, SIR, NHK, AWR ও বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেতারের সন্মেলনে, শ্রোতা সমাবেশে যোগ দিয়ে অনেক কর্মকর্তা, প্রযোজক, উপস্থাপকের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ ও কথা বলার সুযোগ হয়েছে। কিন্তু যার কন্ঠে সংবাদ শুনে একজন গুণমুগ্ধ ভক্ত শ্রোতা হয়ে যাকে ৫২ বছর যাবৎ হৃদয়ে ধারণ করে রেখেছি তার সাথে ফোনে প্রথমদিন স্মৃতিচারণের অনুভূতিই অন্যরকম।
যাহোক একটা মজার বিষয় হলো রাতে কিরন ভাইয়ার কাছে ফোন নং চাইলাম, পেলামও তৎক্ষনাৎ, অথচ আমি নক করার পূর্বেই পরদিন সকালে রংপুর বেতারের ম্যাগাজিন সম্ভার শেষ করে ৯টার খবর শুনেই ডাটা অফ করবো ভাবতেই ফোন বেজে উঠলো। কথা বলছেন ফোনের অপর প্রান্ত সুদূর আমেরিকা থেকে সেই কাঙ্ক্ষিত জন শ্রদ্ধাভাজন সরকার কবির উদ্দিন। অনুভূতি প্রকাশের ভাষাতো জানা নেই। বেশ কিছু সময় কথা হলো, ব্যক্তিগত কুশল বিনিময় হলো, আমার অবস্থান ভারতের কোচবিহার সীমান্তে জানতেই তিনি স্মরণ করলেন মরহুম প্রেসিডেন্ট এইচ এম এরশাদকে, স্মৃতিচারণ করলেন সাবেক মন্ত্রী কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার মাইদুল ইসলাম এবং তার পিতা পাকিস্তান আমলের রাজনীতিবিদ ও পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার মরহুম আবুল কাসেম সম্পর্কে। শ্রদ্ধেয় কবির ভাই এবার দেশের বাড়ি বেড়িয়ে যাবেন বলে জানালেন। মাঝে মাঝেই এভাবে আলাপ হবে, গল্প হবে বলেও আশ্বাস দিলেন। ভীষণ ভালো লাগলো।
দোয়া করি, কিংবদন্তি গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আলোচ্য তিন প্রিয়মুখ (সরকার কবির উদ্দিন, রোকেয়া হায়দার, আকবর হায়দার কিরন) যেখানেই থাকুন সবসময় ভালো ও নিরাপদ থাকুন। মহান আল্লাহ আপনাদের সুস্থতাসহ নেক হায়াত বাড়িয়ে দিন। আমীন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category