গত ৩০ মার্চ বুধবার সন্ধ্যা ৭.৩০টায় নিউ ইর্য়কের জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে শুরু হয়ে গেলো মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের জন্মদিনকে সামনে রেখে দুই দিনব্যপী সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র উৎসব। দুই দিনব্যপী উৎসবের প্রদীপ প্রজ্জ্বালন করে উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী আরিফা পারভিন মৌসুমী।
উৎসবে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের সময় অভিনেত্রী মৌসুমীর সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়, প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, সাপ্তাহিক আজকালের প্রধান সম্পাদক মনজুর আহমদ, অভিনেত্রী রেখা আহমেদ, সাপ্তাহিক ঠিকানার প্রধান সম্পাদক মুহম্মদ ফজলুর রহমান এবং কমিউনিটি নেতা নাসির খান পল।
স্বাধীন মজুমদারের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্যে সুচিত্রা সেন মেমোরিয়াল ইউএসএ আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে গোপাল সন্ন্যাল বলেন, মহামারি করোনার কারনে গত দুই বছর এই অনুষ্ঠানটি করতে পারিনি। পাবনায় সুচিত্রা সেনের বাড়িটি স্মৃতি সংরক্ষণ মেমোরিয়াল হয়েছে, আমরা যেভাবে চেয়েছিলাম সুচিত্রা সেন আর্কাইভ, সেভাবে হয়নি। কিন্তু আমরা চাই একটি সুচিত্রা সেন পরিপূর্ণ আর্কাইভ হোক, যতদিন পর্যন্ত এটা হবে না ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট উত্তর আমেরিকার সভাপতি মিথুন আহমেদ বলেন, শুধু সুচিত্রা সেনের চলচ্চিত্র নয়, সুচিত্রা সেনের চলচ্চিত্রের ধারায় এবং সেই ধারাবাহিকতায় আগামী প্রজন্ম, আগামীর দর্শকেরা এই গণমাধ্যমকে, এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখবার জন্য আপনারা সবাই সুন্দর চলচ্চিত্র দেখবেন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক অভিনেত্রী মৌসুমী বলেন, বাংলাদেশের পাবনায় জন্ম নেয়া সুচিত্রা সেন আমাদের গর্ব। তিনি কোন দেশে জন্ম নিয়েছেন আর কোন দেশে বেড়ে উঠেছেন, এসবের উর্ধ্বে তিনি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের প্রিয় নায়িকা। বাংলায় নায়িকা যত নায়িকা দেখি, অভিনেত্রী আমরা পেয়েছি, সবাইকে তাঁর হাত ধরেই পেয়েছি। তাঁর অভিনয়, তাঁর গান – এটাই হাতেখড়ি থাকে সব অভিনেত্রীর। যারাই আজ সফল, প্রত্যেকেই তাঁর চাহনি, তাঁর অভিনয় দক্ষতাকে ধারন করেই, তবে এই জায়গায় আসতে পেরেছি। আমার সবসময়ের জন্য ভালবাসা এই সংগঠনের জন্য, যারা সুচিত্রা সেনকে ধারন করে্ এই প্রজন্ম পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন – অধ্যাপক হোসনে আরা, ডক্টর বিশ্বজিৎ রায়, লেখিকা রওশন হক, ছড়াকার মন্জুর কাদের, আবৃত্তিকার জি এইচ আরজু, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্বীকৃতি বড়ুয়া এবং বাংলাদেশ ক্লাব ইউএসএর সভাপতি নুরুল আমিন বাবু। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘সাগরিকা’ প্রদর্শিত হয়। ৩১ মার্চ সন্ধ্যে ৭টা থেকে প্রদর্শিত হয় ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ও ‘পথে হলো দেরী’। উল্লেখ্য মহানায়িকা নায়িকা সুচিত্রা সেন বাংলাদেশের পাবনা জেলায় ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। পাবনা জেলার গোপালপুর মহল্লার হেমসাগর লেনেই কাটে শৈশব ও কৈশোরের দিনগুলো। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর তার পরিবারের সবাই ভারতে চলে যান।