স্বাগত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, স্বেচ্ছাসেবী এই নারী সংগঠনের ৫২বছরের পদযাত্রা অত্যন্ত গৌরবের। নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে আমাদের পূর্বসূরীরা আামাদের পথ দেখিয়েছেন তারা এই গৌরবের অংশীদার। নারীর প্রতি সহিংসতা আজ নারীর অগ্রযাত্রার পথে বড় বাধা। তিনি এসময় ৫২ বছরের নারী আন্দোলনের সফলতাকে ধরে রাখতে হলে কেন্দ্র ও তৃণমূলের সকল সংগঠককে নতুন কৌশল তৈরি ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। পাশাপাশি নারী বান্ধব সকল আইনের কার্যকর প্রয়োগ এবং নারী আন্দোলনের সাথে তরুণ সমাজকে যুক্ত করার আহ্বান জানান।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হাসিনা খান বলেন, নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য মহিলা পরিষদ যে কাজ করছে তার সুবিধাভোগী অনেক নারীই। ৫২ বছরে এসে নারীদের মধ্যে যে সাহসের সঞ্চার হতে দেখি তা মহিলা পরিষদ যুগিয়েছে। তবে ঘরের কাজের বোঝা এখনো নারীকেই বহন করতে হয়, এজন্য পুরুষদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।।
বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ও দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিল্পনির্দেশক শিল্পী অশোক কর্মকার বলেন, নারীর অধিকার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত না হলে কারো অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে না। আজ নারীদের অগ্রযাত্রা দৃশ্যমান হলেও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আজও লড়াই করতে হয়।
বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডার্স্টির ডিরেক্টর শাহানা জেফরীন বলেন, সমতার চেতনা প্রতিষ্ঠিত করতে প্রত্যেক নারীকে যোগ্য হতে হবে। পরিবারে, রাজনীতিতে নারীর নিজ অধিকারকে আদায় করে নিতে ভয়েজ রেস করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা ও কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আজকের নারীদের অগ্রসর করেছে। ৫০ বছরে বাংলাদেশের অগ্রগতিতে নারীর অনেক ভ’মিকা আছে। অগ্রগতি হাজার হলেও নারী আজ কেমন আছেন সেটি এখন দেখতে হবে। আজ হাজার হাজার নারী সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। ৫০ বছরে জাতীয় আন্দোলনের মাধ্যমে ও বৈশিক¦ নারী আন্দোলনের মাধ্যমে নারীবান্ধব অনেক আইন হয়েছে তবে তার প্রয়োগের ক্ষেত্রে থাকা বাধাকে ভেঙে দিতে হবে। তিনি এসময় সমতাপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক দলকে নারী পুরুষের সমতার আন্দোলনে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি সংগঠকদের প্রতি তিনি ধর্মান্ধতায় আছন্ন সাম্প্রদায়িক শক্তির থেকে সাবধান থাকতে, দূর্নীতিবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে এবং তৃণমূলের আন্দোলনেকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন।
আলোচনা শেষে পটগান পরিবেশন করেন রূপান্তর থিয়েটার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক উম্মে সালমা বেগম।
অনুষ্ঠান শেষে একটি র্যালী অনুষ্ঠিত হয়। র্যালীটি শহীদ মিনার প্রাঙ্গন থেকে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের টি এস সি তে রাজু ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে শেষ হয়। র্যালী শেষে রাজু ভাস্কর্যের সামনে মোমবাতি প্রজ্জলন
কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।